সুজয় ও সন্ধ্যারানির পাশে পতাকা হাতে সুমতি মাহাতো। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত সমিতির এক বিজেপি সদস্যা তৃণমূলে যোগদান করায় বরবাজার পঞ্চায়েত সমিতিতে ‘সঙ্কট’ তৈরি হল। কংগ্রেসের সমর্থনে ওই পঞ্চায়েত সমিতি এখন বিজেপি পরিচালনা করলেও রবিবারের দলবদলের পরে তৃণমূল সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে গেল বলে দাবি রাজ্যের শাসকদলের।
এ দিন মানবাজার ধর্মশালায় ‘মমতা বাংলার গর্ব’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে ওই বিধানসভার তৃণমূল নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন সভাধিপতি তথা জেলা তৃণমূলের পরিষ্ঠ সহ-সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেনও। সেখানে বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির লটপদা পঞ্চায়েতের আমলাবেড়া গ্রামের বাসিন্দা সুমতি মাহাতো নামে বিজেপির এক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা তৃণমূলে যোগ দেন।
বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ২৮। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ১৪টি, বিজেপি ১৩টি ও কংগ্রেস ১টি আসন পায়। বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থী রামজীবন মাহাতো জোট করায় দুই পক্ষ সমান সংখ্যক হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে বোর্ড গঠনের জন্য টস করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিন্তু টস হওয়ার পরেও তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। জল গড়ায় হাইকোর্টে। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে সভাপতির কুর্সিতে বসেন কংগ্রেসের রামজীবনবাবু। সহ-সভাপতি পদ পায় বিজেপি। কিন্তু রবিবার বিজেপির ওই সদস্যা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতিতে বিজেপি ও তৃণমূল সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারাল বলে দাবি করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, বোর্ড গঠনের আড়াই বছরের আগে অনাস্থা আনা যায় না। আনলেও তা কার্যকরী হয় না। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পঞ্চায়েত সমিতিতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ায় এ বার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিজেপি ও কংগ্রেস সদস্যদের তৃণমূলের উপরে নির্ভর করতে হতে পারে। যদিও প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের দাবি, ওই পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনায় এখনই সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বিডিও (বরাবাজার) শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে এসডিও-র কাছে নিয়ম অনুযায়ী দলবদলের কথা জানাতে হয়। সমিতির বোর্ড সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার কথা লিখিত ভাবে জমা দিলে পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’
এ দিন সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও মানবাজারের বিধায়ক তথা প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু সুমতিদেবীর হাতে তৃণমূলের পতাকা ধরিয়ে দেন। সুমতিদেবী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর স্বামী গাঁধীরাম মাহাতো বলেন, ‘‘রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে থাকলে এলাকায় উন্নয়ন করা যাবে। আমরা এলাকাবাসীর কাছে উন্নয়নের জন্য দায়বদ্ধ। তাই তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘সারা রাজ্যেই তৃণমূল প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে আমাদের দলের সদস্যদের টানার চেষ্টা করছে। তবে ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে অনাস্থা নিয়ে আসার আগেই রাজ্যে পালাবদল ঘটে যাবে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে সুজয়বাবু দাবি করেন, ‘‘সুমতিদেবীর স্বামী আগে তৃণমূলের কর্মী ছিলেন। মাঝখানে অভিমান করে অন্য দলে গিয়েছিলেন। ঘরের লোক ঘরে এসেছে। লোভ-প্রলোভনের কথা আসছে কেন?’’ তাঁর দাবি, ওঁদের সঙ্গে প্রায় ৫০টি পরিবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy