Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
সিউড়িতে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য

বাড়ি তৈরির টাকা হাতানোর নালিশ

স্থানীয় ভুরকুনা পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, কামারডাঙাল গ্রামে এক টুকরো জমি থাকলেও রূপালিদেবীদের কোনও পাকা বাড়ি নেই। শ্বশুরবাড়িতে একটি খড়ের ছাউনির মাটির বাড়িতেই স্বামী দিলীপ কোঁড়ার সঙ্গে দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ০১:৪১
Share: Save:

তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা এবং তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় টাকা হাতানোর অভিযোগ তুললেন এক আদিবাসী বধূ। মঙ্গলবার এই মর্মে সিউড়ি ১ ব্লকের বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন রূপালী কোঁড়া নামে ওই বধূ। অভিযোগের প্রতিলিপি জমা দিয়েছেন জেলাশাসকের কাছেও।

সিউড়ি ১ ব্লকের ভুরকুনা পঞ্চায়েতের কামারডাঙাল গ্রামে বাড়ি রূপালীর। ওই বধূ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ব্যাঙ্কে আসা আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির ৪০ হাজার টাকা ভুল বুঝিয়ে তাঁর থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য মর্জিনা বিবি এবং তাঁর স্বামী গুলজার। গুলজার আবার এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতিও। বিডিও বলেন, ‘‘মারাত্মক অভিযোগ। তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার পরামর্শ দেব।’’

স্থানীয় ভুরকুনা পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, কামারডাঙাল গ্রামে এক টুকরো জমি থাকলেও রূপালিদেবীদের কোনও পাকা বাড়ি নেই। শ্বশুরবাড়িতে একটি খড়ের ছাউনির মাটির বাড়িতেই স্বামী দিলীপ কোঁড়ার সঙ্গে দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন তিনি। দিলীপ দিনমজুর। ২০১১ সালের আর্থ-সামাজিক জাতিগত সমীক্ষার ভিত্তিতে যে সব উপভোক্তা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পাবেন, সেই তালিকায় নাম ছিল রূপালিরও। ২৬ ফেব্রুয়ারি ওই প্রকল্পের মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মধ্যে ৪০ হাজার টাকা ওই আদিবাসী বধূর অ্যাকাউন্টে ঢোকে। অভিযোগ, মার্চের ১০ তারিখ সেই টাকা তোলা হলেই পুরো টাকা হাতিয়ে নেন অভিযুক্তেরা। শেখ নৌসাদ নামে আরও এক তৃণমূল কর্মীর নাম অভিযুক্তের তালিকায় রেখেছেন ওই বধূ।

রূপালির অভিযোগ, ‘‘ব্যাঙ্কে টাকা তোলার সময় ওঁরা সঙ্গে ছিলেন। টাকা তোলার পরই ওঁরা জানান এ টাকা আমার নয়, ভুল করে আমার অ্যাকাউন্টে ঢুকে গিয়েছে। পরে অন্য প্রকল্পে বাড়ি এলে তোকে দেব। প্রথমটা বিশ্বাস করেছিলাম। দিন কয়েক আগে ফের ফের দ্বিতীয় কিস্তির ৩০ হাজার ৬৮০ টাকাও অ্যাকাউন্টে ঢোকে। ফের টাকা তুলে দিতে বলে। তখনই বুঝতে পারি আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে।’’ এরপরেই প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রূপালি।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ক্ষেত্রে নিয়ম হল, প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে উপভোক্তা ঘর করা শুরু করেছেন কিনা সেটা সংশ্লিষ্ট এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য ঠিক করেন। এখানে অভিযুক্তের তালিকায় খোদ পঞ্চায়েত সদস্যেরই নাম রয়েছে। ফলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেতে অসুবিধে হয়নি।

সিউড়ির প্রশাসনিক ভবনে দাঁড়িয়ে রূপালির আক্ষেপ, ‘‘প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আমার বাড়ি বোধহয় আর হল না।’’ যদিও অভিযুক্তদের সঙ্গে বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। সিউড়ি ১ ব্লকের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি স্বর্ণময় সিংহ জানিয়ে দিয়েছেন, এমনটা হয়ে থাকলে দল কখনই তাকে প্রশ্রয় দেবে না। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE