Advertisement
১৮ মে ২০২৪
21 July Rally

নেতাদের বাস ‘দখলে’ ভোগান্তি চরমে

ফি বছর ২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের সভার জন্য বাস ভাড়া করে তৃণমূল। ফলে ওই দিন জেলার পরিবহণ ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

বিষ্ণুপুর সোনামুখী রাস্তায় অবন্তিকা গ্রাম বাস চললই না বলা চলে , যারা প্রয়োজনে পথে নামলেন হার্ডলেন কিম্বা ইঞ্জিন ভ্যানের উপর ভরসা।

বিষ্ণুপুর সোনামুখী রাস্তায় অবন্তিকা গ্রাম বাস চললই না বলা চলে , যারা প্রয়োজনে পথে নামলেন হার্ডলেন কিম্বা ইঞ্জিন ভ্যানের উপর ভরসা। বিষ্ণুপুর। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ ০৭:২৪
Share: Save:

একুশে জুলাই কলকাতার ধর্মতলায় ‘শহিদ দিবসের’ সমাবেশে যাওয়ার জন্য বাস ‘দখলের’ লড়াইয়ে নেমেছেন তৃণমূলের ব্লক-জেলার নেতারা। তার জেরে বাস পেতে নাভিঃশ্বাস উঠেছে যাত্রীদের।

ধর্মতলার সভার জন্য জেলার নেতারা বাস ‘বুক’ করে নিচ্ছেন বলে দাবি তৃণমূলের ব্লক ও অঞ্চল নেতাদের একাংশের। ফলে তাঁরা সমাবেশে যাওয়ার বাস পাচ্ছেন না। পরিবহণ ব্যবসায়ী এবং বাসকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে মাঝ পথে বাস আটকে দিচ্ছেন তৃণমূলের ব্লক এবং অঞ্চলের নেতারা। রাস্তায় বাস নামিয়ে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে পরিবহণ কর্মীদের। পরপর এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁদের দাবি। এই কারণে সমাবেশের দু’দিন আগেই, বুধবার জেলার অনেক রাস্তা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে বাস।

ফি বছর ২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের সভার জন্য বাস ভাড়া করে তৃণমূল। ফলে ওই দিন জেলার পরিবহণ ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়ে। বাস বুক করা নিয়ে তৃণমূলের জেলা ও নিচুতলার নেতৃত্বের ‘দ্বন্দ্ব’ নতুন নয়। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ভাবে বাস ভাড়া করা হয়েছিল গত তিন বছর। ফলে সমাবেশের আগের কয়েক দিন বাস পেতে তেমন অকটা অসুবিধা হয়নি যাত্রীদের। এ বছর নেতারা ফের নিজেদের মতো করে বাস বুক করছেন। তাতে পুরনো সমস্যা ফিরে এসেছে বলে হাবি তৃণমূলের একাংশের।

জেলা বাস মালিক কল্যাণ সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য অঞ্জন মিত্র বুধবার বলেন, “কিছু বাস তৃণমূলের জেলার নেতারা ব্যক্তিগত ভাবে ‘বুক’ করেছেন। তা সত্ত্বেও পথে বেরোনো বাসগুলি জোর করে আটক করছেন তৃণমূলের নিচুতলার নেতারা। সেই সমস্যা এড়াতে এ দিন বিভিন্ন রুটে বাস পরিষেবা বন্ধ রাখেন বাসকর্মীরা।” বাসকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, পাত্রসায়র, ইন্দাস, কোতুলপুরের মতো রুটে বাস আটকে দেওয়ার ঘটনা বেশি ঘটছে। বাকি এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে এই ঘটনা ঘটছে গত কয়েক দিন ধরে।

এ দিন বাঁকুড়ার গোবিন্দনগর বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, সারি দিয়ে বিভিন্ন রুটের বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে। যাত্রীরা অপেক্ষা করে কার্যত ক্লান্ত। অনেকেই খবর নিচ্ছেন, কেন বাস চলছে না। ছাতনার বাসিন্দা দীপক গরাই বলেন, “২১ জুলাই বাস চলবে না তা জানি। কিন্তু তার দু’দিন আগে পথে বেরিয়ে এমন সমস্যায় পড়তে হবে, তা ভাবিনি।” বর্ধমান রুটের যাত্রী অনঙ্গ পোদ্দারের অভিযোগ, “তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। বাস নেই।”

বিষ্ণুপুর রসিকগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডের ছবিটাও ভিন্ন ছিল না। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, উপচে পড়েছে যাত্রীদের ভিড়। পাত্রসায়রের বাসিন্দা কমলকান্ত দে বলেন, “এই সময় পাত্রসায়র যাওয়ার বাসের অভাব থাকে না। অথচ চার ঘণ্টা দাঁড়িয়েও বাস পাচ্ছি না।”

তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহমহাপাত্র, বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়দের দাবি, “জেলার গ্রামাঞ্চলের বহু মানুষ সভায় যেতে চাইছেন। তাই নিচুতলার নেতারা বাস পাওয়ার মরিয়া চেষ্টা করছেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করছি। কোথাও জোর করে বাস আটকাতে নিষেধ করা হয়েছে। এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

21 July Rally bankura TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE