Advertisement
০৪ মে ২০২৪
purulia

Peculiar names: সিভিক পুলিশ ‘রাজ্যপাল’, লাঠি হাতে ‘ইলেকশন’! নাম-মাহাত্ম্যে খ্যাত পুরুলিয়ার দুই মাহাতো

এক জনের নাম রাজ্যপাল। অপর জন ইলেকশন। দু’জনেই মাহাতো। দু’জনেই সিভিক পুলিশ। নাম-মাহাত্ম্যে খ্যাত দুই মাহাতোই আপাতত ব্যতিব্যস্ত নামের গুঁতোয়!

ইলেকশন মাহাতো (বাঁ দিকে), রাজ্যপাল মাহাতো (ডান দিকে)।

ইলেকশন মাহাতো (বাঁ দিকে), রাজ্যপাল মাহাতো (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।

সমীরণ পাণ্ডে
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২২ ১৫:৪৪
Share: Save:

নাম দিয়ে যায় চেনা। চেনা তো দূর অস্ত, পুরুলিয়ায় সেই নাম নিয়েই যত গন্ডগোল। কারণ, এক জনের নাম রাজ্যপাল। অপর জন ইলেকশন। দু’জনেই মাহাতো। দু’জনেই কাজ করেন সিভিক পুলিশে। নাম-মাহাত্ম্যে খ্যাত দুই মাহাতোই আপাতত ব্যতিব্যস্ত নামের গুঁতোয়!

পুরুলিয়ার টামনা থানা এলাকার কড়াডি গ্রামে বাড়ি রাজ্যপাল মাহাতোর। তাঁর বাবা আদর করে এই নাম রেখেছিলেন। বছর চারেক আগে বাবা গত হয়েছেন। মমতা সরকারের সিভিক পুলিশে কর্মরত বছর তেত্রিশের যুবক রাজ্যপাল বলেন, ‘‘নাম নিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে পড়তে হয়। আট থেকে আশি— দেদারে মজা লোটে আমার নাম নিয়ে।’’ রেগেমেগে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে গিয়েও কি শান্তি আছে! উল্টে শুনতে হয়, ‘আহা, রাজ্যপালকে অপমান করো না!’ বিড়ম্বনার এখানেই শেষ নয়। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘ফোন করে অচেনা কাউকে যদি বলি, হ্যালো, আমি রাজ্যপাল বলছি। তখন উল্টো দিক থেকে খানিক চুপ থাকার পরই হো-হো হাসির আওয়াজ শুনতে পাই। মনটা খারাপ হয়ে যায়।’’

পুরুলিয়ার মফস্‌সল থানার গাড়াফুসড়া গ্রামে বাড়ি ইলেকশন মাহাতোর। তিনিও সিভিক পুলিশকর্মী। তাঁর জন্মের দিন গ্রামে ভোট ছিল। তাই বাড়ির লোক নাম দিয়ে দেন ইলেকশন। সকলেই প্রথম বার নাম শুনে চমকে যান। লাজুক মুখেই জানালেন, খোদ নিজের স্ত্রী বিয়ের আগে ফোনে দু’চার কথার পর নাকি তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, সত্যি কি তোমার নাম ইলেকশন? আধার, রেশন কার্ড-সহ বিভিন্ন নথিতে তাঁর সঠিক নাম আসেনি বলেও আক্ষেপ আছে।

ইলেকশনের ব্যথা বোঝেন তাঁর বন্ধুরা। একই সঙ্গে প্রাথমিক থেকে উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত পড়েছেন গ্রামেরই ছেলে তাপস মাহাতো। তিনি বলছেন, ‘‘স্কুলে শিক্ষক থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধব— সকলেই ওঁর নাম নিয়ে হাসাহাসি করত। তাই আমরা নামটা ছোট করে নিয়েছিলাম। আমরা ওঁকে ডাকতাম ইলু বলে।’’ কিন্তু সে কথা আর ক’জনই বা জানেন।

শেক্সপিয়র লিখেছিলেন, নামে কী আসে যায়! কিন্তু সেই নামের গেরোতেই নাকাল হওয়ার দশা পুরুলিয়ার দুই সিভিক কর্মীর। দু’জনেই নাম বদলে ফেলার কথা ভেবেছেন একাধিক বার। কিন্তু বাপ-ঠাকুর্দার দেওয়া নাম বদলাতে মন সায় দেয়নি। অতএব, ওই নামই বয়ে বেড়াচ্ছেন পুরুলিয়ার দুই মাহাতো।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE