রোদ থেকে বাঁচতে। মঙ্গলবার দুবরাজপুরে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।
মাঝে কিছু দিন স্বস্তি ছিল। কিন্তু এপ্রিলের পর মে মাসেও ফের তাপপ্রবাহে জেরবার জেলাবাসী। গত কয়েকদিন ধরে মাথা ঘুরিয়ে দিচ্ছে সূর্ষের তেজ। ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৮টা বাজতে না বাজতেই চড়া রোদে চোখ ঝলসে যাওয়ার অবস্থা। শুধু সূর্যের প্রখর তেজই নয়, বাইরে বের হলে চোখ মুখ যেন পুড়িয়ে দেওয়ার মতো গরম হাওয়া বইছে।
শ্রীনিকেতন আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, সোমবার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার তাপমাত্রা সামান্য কমে ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়েছে। তবে সেটাও স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি বেশি। আপেক্ষিক আর্দ্রতা কম থাকায় ঘাম কম হলেও গরম সহ্য করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, তাপমাত্রা কমে দিনকয়েকের মধ্যে স্বস্তি ফিরবে তেমন আবহাওয়া ইঙ্গিত তো নেই, বরং সামনের তিন দিন তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। তাতেই দুশ্চিন্তা বেড়েছে জেলাবাসীর।
গরম এতটাই তীব্র যে মঙ্গলবার থেকে বীরভূমে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির সময়সারণী বদলাতে হয়েছে অনেকটাই। শাসক দল সূত্রে খবর, দাবদাহের কারণে জনসংযোগের প্রতিটি সূচি প্রায় অপরিবর্তিত রাখলেও প্রতিটির সময়সূচি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ৪-৫ ঘণ্টা।
এপ্রিলের প্রথম দিকেও এমন ঝড়বৃষ্টি বর্জিত গরম পড়েছিল। তাপমাত্রা ছুঁয়েছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। প্রায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি মে মাসেও। প্রবল তাপের প্রভাব পড়েছে জনজীবনেও। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ প্রশাসন ভবনের দিকে যাওয়ার জন্য টোটোয় উঠছিলেন এক যাত্রী। নাকমুখ ঢাকা তাঁর। টোটো চালক তাঁর উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন, ‘‘পেটের দায়ে এখন পথে নামতে হয়েছে। নইলে এই গরমে কেউ বেরোয়!’’
এ দিন সরকারি ছুটি থাকায় পথঘাট তুলনায় ফাঁকা ছিল। তবে দিন কয়েক ধরে বেলা গড়াতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। রেহাই একটাই, স্কুল কলেজে আগেই গ্রীষ্মকালীন ছুটি ঘোষণা হয়েছে। তবে পেশার তাগিদে যাঁরা পথে নেমেছেন তাঁদের সকলকেই নাকমুখ ঢেকে রাখতে দেখা গিয়েছে। জেলা জুড়ে এ দিন পালিত হয়েছে ১৬৩তম রবীন্দ্র জয়ন্তী। তবে তীব্র গরমে কচিকাঁচাদের নিয়ে অনুষ্ঠান করতে বেগ পেতে হয়েছে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। অতিরিক্ত তাপের কারণে শরীরে জল কমে যাওয়া, পেশিতে টান বা ব্যথা, জ্বর, বমি বা ডায়েরিয়ার মত উপসর্গ দেখা দিচ্ছে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। পারলে রোদ এড়িয়ে যাওয়ার, একান্ত প্রয়োজনে রোদে বের হলেও প্রয়োজনীয় সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy