Advertisement
E-Paper

টেন্ডার ডেকেও সেতু হয়নি, দুর্ভোগ গ্রামে 

আশ্বাস শুনতে শুনতেই পেরিয়ে গিয়েছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। কিন্তু গ্রাম লাগোয়া কাঁদরে সেতু হয়নি আজও। এর ফলে লাভপুরের বিলে গ্রামের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সারা বর্ষাকাল তাঁদের কার্যত বন্দীদশায় কাটাতে হয়।

অর্ঘ্য ঘোষ

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:২০
দুর্ভোগ: এ ভাবেই পারাপার চলে বিলে গ্রামে। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি

দুর্ভোগ: এ ভাবেই পারাপার চলে বিলে গ্রামে। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি

আশ্বাস শুনতে শুনতেই পেরিয়ে গিয়েছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। কিন্তু গ্রাম লাগোয়া কাঁদরে সেতু হয়নি আজও। এর ফলে লাভপুরের বিলে গ্রামের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সারা বর্ষাকাল তাঁদের কার্যত বন্দীদশায় কাটাতে হয়। অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোলই নেই বলে অভিযোগ।

প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামে প্রায় ৫০টি পরিবারের বাস। গ্রামের এক দিকে বয়ে গিয়েছে ময়ূরাক্ষী নদী। অন্য দিকে গ্রামকে দ্বীপের মতো মাঝে রেখে সাঁইথিয়া থেকে একটি কাঁদর এসে মিশেছে লাগোয়া তরুলিয়া গ্রাম লাগোয়া ময়ূরাক্ষী নদীতে। সিউড়ি, সাঁইথিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকার বহু সেচ খাল এবং বিস্তৃর্ণ অঞ্চলের মাঠভাসি জল ওই কাঁদর বেয়ে মেশে ময়ূরাক্ষী নদীতে।

কিন্তু ময়ূরাক্ষীতে জল বাড়লে তা উজানে কাঁদর বেয়ে পৌঁছে যায় গ্রামে। ওইসময় কাঁদরে বেয়ে আসা জল নিষ্কাশনের পথ না পেয়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তোলে। তখন অনিদ্দিষ্ট কালের জন্য জলবন্দি হয়ে পড়েন গ্রামের মানুষ। কারণ ওই গ্রাম থেকে বাইরে বেরোনোর অন্যতম মাধ্যম হল কাঁদরের উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো কিংবা নৌকা। কিন্তু জলের তোড়ে ফি বছর ভেসে যায় বাঁশের সাঁকো। তলিয়ে যায় নৌকাও। নদী বাঁধ দিয়ে প্রায় ১০ কিমি দূরের সাঁইথিয়া যাওয়ার একটি রাস্তা অবশ্য রয়েছে। বছরের অন্যান্য সময় ওই রাস্তা বিকল্প হিসাবে কাজে লাগলেও বর্ষায় নদী বাঁধের অবস্থাও চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাছাড়া ওই গ্রামের স্কুল-কলেজ, বাজার-হাট, থানা, হাসপাতাল, ব্লক সবই লাভপুর কেন্দ্রিক। কাঁদর পেরিয়ে লায়েকপুর গ্রামে পৌঁচ্ছে তবেই ওইসব জায়গায় যাওয়ার সুযোগ পান গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু ময়ূরাক্ষীতে জল বাড়লেই তাঁদের সেই সুযোগ হারাতে হয় বলে গ্রামবাসীদের দাবি।

ভালকুঠি হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী তৃপ্তি পাল, বুলটি বাগদিরা জানায়, প্রতিবছর বর্ষাতে আমাদের স্কুল যাওয়া দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে যায়। কারণ বিপদের আশঙ্কায় নৌকায় যেতেই দেন না বাড়ির লোকেরা। তাই প্রতিবছরই আমাদের পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়তে হয়। বিশ্বনাথ মণ্ডল, জয়ন্ত মণ্ডলরা জানান, ওই সময় সব থেকে সমস্যা হয় রাতবিরেতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে। নৌকায় কিংবা নদীবাঁধ দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বহু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবুও টনক নড়েনি প্রশাসনের।

তাঁদের অভিযোগ, বছর কয়েক আগে পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে পাকা সেতু নির্মাণের টেণ্ডার ডাকা হয়। কিন্তু বরাদ্দ টাকায় সেতু নির্মাণ সম্ভব নয় বলে কোনও ঠিকাদার এগিয়ে আসেননি। প্রসাশন বরাদ্দ বাড়ানোর পরিবর্তে প্রকল্প বদলে ওই টাকা অন্যত্র কাজে লাগিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তারপর আর সেতু নির্মাণে কোন উদ্যোগ নেয়নি।

জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘সেতুর টেণ্ডার সংক্রান্ত বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সেতু নির্মাণের ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেব।’’

Bridge Tender ময়ূরাক্ষী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy