মুখোমুখি: উড়ালপথের কাজ নিয়ে রেলের আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলছেন সাংসদ শতাব্দী রায়। বুধবার সিউড়ির হাটজনবাজারে। নিজস্ব চিত্র।
সিউড়িতে হাটজনবাজার উড়ালপথ নির্মাণে দেরি হওয়া নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে শহরের মানুষের। জেলা প্রশাসনও রেলকে একাধিকবার বার্তা দিয়েছে ওই উড়ালপথের কাজে গতি আনতে। এ বার সাংসদকে সামনে রেখে ওই বিষয় নিয়েই রেলের আধিকারিকের কাছে ক্ষোভে ফেটে পড়ল সিউড়ি পুরসভা।
বুধবার সকালে পরিদর্শনে আসেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ তথা রেলের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শতাব্দী রায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রেলের আধিকারিক, সিউড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্যেরা। যদি কাজ সঠিক সময়ে কাজ না শুরু হয়, তা হলে আগামী দিনে কোনও রকম সহযোগিতা করা হবে না বলে রেলের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দেন সিউড়ির পুর-প্রশাসক অঞ্জন কর। এ দিনই সাঁইথিয়ার রেলসেতু নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বীরভূমের সাংসদ।
সিউড়ি পুরসভার অভিযোগ, প্রায় চার বছর আগে সিউড়ি-বোলপুর রাস্তায় হাটজনবাজার এলাকায় রেলের উড়ালপথ তৈরির কাজ শুরু হয়। তার জন্য এলাকার মানুষের কাছে জমি নেওয়া হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে সেই বাড়ি বা ভবনগুলি ভাঙা হয়েছে৷ কিন্তু, নির্মাণকাজের অত্যন্ত শ্লথ গতিতে সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। মাস দুয়েক আগে রেলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল অবৈধ দখলদারি এবং অনেকে জমি না-দেওয়ায় সেই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। এর পরেই এক মাসের মধ্যে এলাকাবাসীকে বুঝিয়ে সেই জায়গা পরিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু, তার পরেও রেল কাজ শুরু করেনি বলে পুরসভার দাবি।
উড়ালপথের কাজের জন্য দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বেহাল ছিল। যা নিয়ে অনেক ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়েছে। পরে জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রাস্তা সংস্কার হয়। কিন্তু, এখনও উড়ালপথের কাজ থমকে থাকায় ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে শহরে। এ দিন শতাব্দীর ও রেলের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দেন পুরসভার প্রশাসকেরা। অঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘রেল কর্তৃপক্ষ জেলাশাসককে বলেছিলেন, আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করে দেবেন। কিন্তু এখন বলছেন জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু করা হবে। তা হলে এপ্রিলে শেষ হবে কী করে? অহেতুক কাজে বিলম্ব করায় মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে।’’
রেলের আধিকারিকরা সাংসদকে জানান, ঠিকাদার সংস্থা ১৪ জানুয়ারি কাজ শুরু করবে। অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে রেলের পক্ষ থেকে চিঠিও দেওয়া হবে। সাংসদের পক্ষ থেকেও একই চিঠি ঠিকাদার সংস্থাকে দেওয়ার কথা বলা হয়। শতাব্দী বলেন, ‘‘এত দিন ধরে কাজটা আটকে রয়েছে। এখানে আমাদের যাঁরা আছেন, তাঁদের রাগ হওয়া স্বাভাবিক। আমি বললাম ১৪ তারিখ থেকে কাজ শুরু করতে। যদি আমাকে চিঠি দিতে হয়, দিয়ে দিচ্ছি।’’
সিউড়ির উড়ালপথ নিয়ে সমস্যা বছর চারেকের হলেও সাঁইথিয়ার রেলসেতু নিয়ে সেখানকার মানুষের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। সঙ্কীর্ণ ওই সেতুর জন্য যানজটে নাকাল হতে হয় স্থানীয় বাসিন্দা এবং পথচারীদের। রেল দফতরও সেতুটিকে দীর্ঘদিন আগে বিপজ্জনক ঘোষণা করেছে। তার পর বিভিন্ন মহল থেকে নতুন সেতুর দাবি ওঠে। রেল, স্থানীয় পুরসভা এবং জেলা প্রশাসনের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। প্রস্তাবিত সেতুর নকশাও তৈরি হয়। তার পরেও কোনও কাজ হয়নি। এলাকার বাসিন্দারা সাংসদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন৷ এদিন সিউড়ি যাওয়ার জন্য মাতারা এক্সপ্রেসে সাঁইথিয়া স্টেশনে নামেন শতাব্দী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন , সাঁইথিয়ার রেলসেতুর বিষয়ে বহুবার রেলদফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এতগুলো রেলমন্ত্রী পাল্টালেও সেই " হচ্ছে হবে " আশ্বাস শোনা যাচ্ছে। দেখা যাক এবার কী হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy