Advertisement
E-Paper

রবাই খুনে ধৃত আরও দুই

যার খোঁজে এসে সাত্তোরের বধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল, সেই বিজেপি কর্মী মিঠুন শেখকে শেষমেশ গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে সাত্তোরে নির্যাতিতার বাড়ি থেকেই মিঠুন এবং তার ভাই লিটন শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবারই সিউড়ি জেলা আদালতের সিজেএম ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় ধৃতদের সাত দিন পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন। যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি জেলার পুলিশ সুপার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩১
আদালতের পথে। সোমবার সুলতানপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। —নিজস্ব চিত্র।

আদালতের পথে। সোমবার সুলতানপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। —নিজস্ব চিত্র।

যার খোঁজে এসে সাত্তোরের বধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল, সেই বিজেপি কর্মী মিঠুন শেখকে শেষমেশ গ্রেফতার করল পুলিশ।

রবিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে সাত্তোরে নির্যাতিতার বাড়ি থেকেই মিঠুন এবং তার ভাই লিটন শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবারই সিউড়ি জেলা আদালতের সিজেএম ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় ধৃতদের সাত দিন পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন। যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি জেলার পুলিশ সুপার। এসএমএস-এরও জবাব দেননি। তবে, সরকারি আইনজীবী কুন্তল চট্টোপাধ্যায় জানান, স্থানীয় তৃণমূল নেতা রবাই চৌধুরী খুন-সহ আরও ১৫টি মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ওই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন), ৯বিটু (‌বোমাবাজি)-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

ওই গ্রেফতারির পরেই জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। পাশাপাশি এ দিনই সংবাদমাধ্যমের কাছে পাড়ুই থানার ওসি এবং বোলপুরের আইসি-র বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা। তাঁর দাবি, ‘‘কোনও ওয়ারেন্ট না দেখিয়েই পুলিশ আমার দুই ভাসুরপোকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল। কী কারণে গ্রেফতার করা হল জানতে থানায় গিয়েছিলাম। স্বামী এবং আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ওই দুই অফিসার আমাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন।’’ পাড়ুই থানার ওসি অমরজিৎ বিশ্বাস এবং বোলপুরের সিআই চন্দ্রশেখর দাস অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত ১৭ জানুয়ারি বোমাবাজিতে অভিযুক্ত পাড়ুই থানার সাত্তোরের বিজেপি সমর্থক মিঠুনকে খুঁজতে বর্ধমানের বুদবুদ থানার কলমডাঙা গ্রামে তাঁর কাকিমার বাপের বাড়িতে যায় বীরভূম জেলা পুলিশের এক বিশেষ দল। ওই কর্মীকে না পেয়ে তাঁর কাকিমাকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে পুলিশ ও তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী অকথ্য অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। এই নিয়ে তুমুল হইচই শুরু হওয়ায় রাজ্য সরকার সিআইডি-কে তদন্তভার দেয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ৯ মার্চ সাত্তোর থেকে সালোন গ্রামে নিজের বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের বোমায় খুন হন রবাই শেখ। এলাকায় তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত হলেও সম্প্রতি তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর খুনের পরে তৃণমূল-বিজেপি, দু’দলই রবাইকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করে পরস্পরের বিরুদ্ধে আঙুল তোলে। যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে ওই ঘটনায় স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের নামেই খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। আগের মামলাগুলির পাশাপাশি রবাই খুনেও মিঠুনরা অভিযুক্ত ছিল। পুলিশের দাবি, দুই অভিযুক্ত বাড়িতে ফিরেছে জেনে রবিবার মাঝরাতে এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। সাত্তোরের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে। রাতেই তল্লাশি চালিয়ে ওই গ্রাম থেকে পুলিশ ৩৬টি বোমাও উদ্ধার করেছে।

এ দিকে, গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দেখছে বিজেপি-র জেলা নেতৃত্ব। দলের নতুন জেলা আহ্বায়ক অজুর্ন সাহার অভিযোগ, ‘‘পুলিশ এখন রাজনৈতিক দলদাসে পরিণত হয়েছে। শুধু পাড়ুই জুড়েই আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে ২০০টিরও বেশি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তৃণমূলের কথা শুনেই পুলিশ চলছে।’’ এ দিকে, ধৃতদের উপরে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন অভিযুক্তদের আইনজীবী গোপাল মুখোপাধ্যায়। পুলিশ সে অভিযোগ মানতে চায়নি।

সিআইডি সূত্রের খবর, এ দিনই সিউড়ি আদালতে সাত্তোরের বধূ নির্যাতন মামলায় নতুন করে তদন্ত করে চাজর্শিট জমা দেওয়া হয়েছে। সরকারি আইনজীবী কুন্তলবাবু তার সত্যতা স্বীকার করলেও চার্জশিটে ঠিক কী রয়েছে, তা এজলাসে ওঠার আগে খোলসা করতে চাননি।

Police Bolpur Sattor Rabai murder Birbhum Suri Panrui
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy