Advertisement
E-Paper

সোনামুখীতে খুনে ধৃত স্ত্রী 

একটা ফোন এসেছিল শুক্রবার সন্ধ্যায়। তার পরেই সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বছর চব্বিশের শুভেন্দু ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৬
শুভেন্দু ঘোষ।

শুভেন্দু ঘোষ।

একটা ফোন এসেছিল শুক্রবার সন্ধ্যায়। তার পরেই সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বছর চব্বিশের শুভেন্দু ঘোষ। শনিবার মাঠ থেকে উদ্ধার হল তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ। বাঁকুড়ার সোনামুখী থানার রাওতাড়া গ্রামের ঘটনা। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) সুকোমলকান্তি দাস জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে শুভেন্দুর স্ত্রী টিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খোঁজ চলছে শুভেন্দুর এক বন্ধুরও। রুজু হয়েছে খুনের মামলা।

শনিবার সোনামুখী থানার সামনে দাঁড়িয়ে পড়শি নীলু ঘোষ, বিকাশ ঘোষেরা জানান, গ্রামের সম্ভ্রান্ত কৃষক পরিবারের ছেলে ছিলেন শুভেন্দু। যৌথ পরিবার। বাবা-মায়ের এক ছেলে। নিজেও চাষের কাজ করতেন। বছর তিনেকে একটি ছেলেও রয়েছে তাঁর। এ দিন গ্রামবাসীর থেকে খবর পেয়ে রাধামোহনপুর পঞ্চায়েতের শেওড়াতলার মাঠ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

রাওতাড়া থেকে ভালুকখান গ্রামে যাওয়ার পাকা রাস্তার ধারে একটি বাবলা গাছের নীচের ঘাস তখনও রক্তে ভিজে ছিল। জায়গাটা রাওতাড়া থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে। গ্রামের কিছু বাসিন্দা জানালেন, সেখানেই পড়ে ছিল শুভেন্দুর দেহ। মাথায় এবং পেটে গভীর ক্ষত। পুলিশ জানিয়েছে, দেহের পাশে পড়েছিল শুভেন্দুর সাইকেলটি। কিছুটা দূরে পড়েছিল একটি ছুরি। সেটি দিয়েই খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য শুভেন্দুর দেহ পাঠানো হয়েছে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।

রাওতাড়া গ্রামে দোতলা বাড়ি শুভেন্দুদের। সেখানে বসেছিলেন তাঁর বাবা শিবু ঘোষ আর মা সুমিত্রা ঘোষ। পরিজনেরা ঘিরে রেখেছিলেন দম্পতিকে। সুমিত্রাদেবী বলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘরেই ছিল ছেলেটা। বৌমা ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ ফোনটা ছেলেক ধরিয়ে বলে, কেউ একটা ডাকছে।’’ তাঁর দাবি, এর পরেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যান শুভেন্দু। রাত হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় চিন্তায় পড়েন তাঁরা। শিবুবাবুর দাবি, কে ফোন করেছিল সেই কথা জিজ্ঞাসা করলেও বৌমা কিছু ভেঙে বলেননি।

ওই দম্পতি জানান, বছর পাঁচেক আগে সম্বন্ধ করে নবাসন গ্রামের টিয়া পালুইয়ের সঙ্গে ছেলের বিয়ে দিয়েছিলেন। ছেলে-বৌমার মধ্যে প্রায়ই অশান্তি বাধত। তাঁদের অভিযোগ, ছেলেরই এক বন্ধুর সঙ্গে বৌমার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ঝামেলা লাগত তা নিয়েও। কালীপুজোর সময়ে এই সংক্রান্ত অশান্তির জেরেই টিয়া বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন বলে দাবি করছেন তাঁরা। জানাচ্ছেন, দিন দুয়েক আগে শুভেন্দু স্ত্রীকে নিয়ে আসেন।

বৌমা এবং ছেলের সেই বন্ধুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন শিবুবাবু। তিনি বলেন, ‘‘বৌমা আর ওই ছেলেটা মিলে ষড়যন্ত্র করে আমাদের ছেলেকে খুন করেছে। আমরা চাই ওদের শাস্তি হোক।’’ যে যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এ দিন বাড়িতে গিয়ে দেখা মেলেনি তাঁর। পুলিশ জানিয়েছে, শুভেন্দুর স্ত্রীকে আজ, রবিবার বিষ্ণুপুর আদালতে তোলা হবে।

Arrest Murder Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy