Advertisement
E-Paper

পুজো শেষ, কিন্তু তোরণ এখনও পথে

দুর্গাপুজো উপলক্ষে রাস্তার দু’পাশে বাঁশের খুঁটি পুঁতে গেট করেছিল পুজো কমিটি। পুজো পার হয়ে গিয়েছে কবেই। অথচ এখনও খোলা হয়নি সেই গেট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:০০
ঝঞ্ঝাট: বাঁকুড়ার রবীন্দ্রসরণিতে খোলা হয়নি তোরণ। —নিজস্ব চিত্র।

ঝঞ্ঝাট: বাঁকুড়ার রবীন্দ্রসরণিতে খোলা হয়নি তোরণ। —নিজস্ব চিত্র।

দুর্গাপুজো উপলক্ষে রাস্তার দু’পাশে বাঁশের খুঁটি পুঁতে গেট করেছিল পুজো কমিটি। পুজো পার হয়ে গিয়েছে কবেই। অথচ এখনও খোলা হয়নি সেই গেট।

বিজয়ার পরে সপ্তাহ ঘুরে গিয়েছে। কিন্তু, এখনও বিভিন্ন পুকুর থেকে তোলা হয়নি কাঠামো। জলে পচছে পুজোর বিভিন্ন সামগ্রী।

বাঁকুড়া শহরের আনাচে কানাচে এমন অবস্থা নিয়ে নিত্য দিন সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, পুজোর আয়োজন করতে ক্লাব ও পুলিশ-প্রশাসন যতটা উদ্যোগী থাকে, বিসর্জনের পরে শহর পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে সেই নজর কোথায়?

বাঁকুড়া শহরের রবীন্দ্রসরণিতে পুজোর জন্য তৈরি করা বড় একটি গেট নিয়ে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। বাঁকুড়া শহরে ঢোকার মূল রাস্তা বাঁকুড়া স্টেশন মোড় থেকে তামলিবাঁধ যাওয়ার পথেই রবীন্দ্রসরণি এলাকাটি পড়ে। বাস, ট্রাক-সহ ভারী যানবাহন চলাচল করে শহরের এই রাস্তাটির উপর দিয়ে। রবীন্দ্রসরণি এলাকায় ওই রাস্তাটি এমনিতেই সঙ্কীর্ণ ও দুর্ঘটনাপ্রবণ। তার উপর রাস্তার উপরেই পুজোর গেট তৈরি করায় সমস্যা আরও বেড়েছে বলেই মত যাত্রীদের। এত দিনেও সেই গেট না খোলায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাঁরা।

গাড়ি চালক বাপি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রবীন্দ্রসরণিতে রাস্তার উপরে পুজোর গেট থাকায় মাঝে মধ্যে যানজট পাকিয়ে যাচ্ছে। একটু বেসামাল হলেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ওই এলাকায়। পুজো কমিটির উচিত ছিল সবার আগে ওই গেট খুলে ফেলা। প্রশাসনেরও এ বিষয়ে নজরদারি দরকার।” রবীন্দ্রসরণি সর্বজনীন পুজো কমিটির সদস্য সৌরভ মোদক ডেকোরেটর্সকেই দুষছেন। তাঁর দাবি, “সমস্যাটি আমরাও দেখছি। ডেকোরেটার্সকে বহু আগেই ওই গেট খুলে ফেলতে বলেছিলাম। কিন্তু তাঁরা খুলতে গড়িমসি করছে। ফের ওদের মনে করাব।’’

পুজো শেষ হলে যাতে শহরের রাস্তাঘাটের পাশ থেকে দ্রুত প্যান্ডেল খুলে ফেলা হয় পুজো কমিটিগুলিকে সেই নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। পুজো শেষ হয়ে যাওয়ার পর কেন শহরে নজরদারি চালানো হচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) সুদীপ্ত দাস বলেন, “রাস্তার পাশের প্যান্ডেল খোলা হয়নি বলে জানা ছিল না। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছি। দ্রুত যাতে প্যান্ডেল খুলে ফেলা হয়, সে ব্যবস্থা করা হবে।’’

বিসর্জনের পরে অনেকদিন পর্যন্ত এই শহরের বিভিন্ন পুকুরে প্রতিমার কাঠামো ভাসতে দেখা যায়। এ বারও সেই ছবি বদলায়নি। রবিবার শহরের লোকপুর এলাকার লাইকা পুকুর, প্রতাপবাগানের পদ্মপুকুর ও বড়কালী তলা এলাকার কালীপুকুর-সহ কয়েকটি জলাশয়ে কাঠামো ভাসতে দেখা গিয়েছে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘‘স্নান করা থেকে পুকুরের জল নানা কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু, প্রতিমার কাঠামোর খড় পচে, রং জলে মিশে, ফুল-বেলপাতা পচে গিয়ে দূষণ ছড়াচ্ছে। চর্মরোগের ভয়ে পুকুরে নামতে ভয় করছে। পুরসভা বা প্রশাসন কেন দ্রুত পুকুর থেকে কাঠামো তুলে নিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তা বোঝা যায় না।’’

বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত জানান, ভাসানের পরে যাতে প্রতিমার কাঠামো পুকুর থেকে পুজো কমিটিগুলি দ্রুত তুলে নেয়, সে জন্য শহরজুড়ে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। তাঁর দাবি, “দুর্গাপুজোর পর থেকেই পুকুর থেকে কাঠামো তুলে ফেলার কাজ শুরু করেছি আমরা। শহরের বেশির ভাগ পুকুর থেকেই কাঠামো তুলে নেওয়া হয়েছে।”

তিনি জানান, দ্রুত কাঠামো তুলতে কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকার জলাশয় পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিতে বলবেন। তিনি জানান, প্যান্ডেল খোলার পরে শহরের রাস্তায় পেরেক পড়ে থাকত। এ বার সাফাই কর্মীরা দ্রুততার সঙ্গে পেরেক তুলে নিয়েছেন। তবে পুজো কমিটিগুলিরও সাফাইয়ের কাজে এগিয়ে আসা উচিত বলে তিনি জানিয়েছেন।

Durga Puja Bankura বাঁকুড়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy