প্রতীকী ছবি।
বিয়ে করতে চেয়েছিলেন প্রেমিক-প্রেমিকা। দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক হলেও তাঁদের পরিবার রাজি ছিল না। শেষ পর্যন্ত পালিয়ে কাঁকরতলা থানায় আসেন যুগলে। শনিবার মাঝরাতে পুলিশ সহায় হল তাঁদের সেই ইচ্ছে পূরণে। রবিবার দুবরাজপুরে রেজিষ্ট্রি করে বিয়ে হল খয়রাশোলর বাসিন্দা রাজেশ ঘোষ ও ঝাড়খণ্ডের শিখা ঘোষের। সাহায্যের জন্য নব-দম্পতি পুলিশকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজেশ আদতে কাঁকরতলা থানা এলাকার গেরুয়াপাহাড়ির বাসিন্দা। শিখার বাড়ি লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের নলা থানা এলাকার বেলেজুড়ি। একটি অনলাইন পণ্য সামগ্রী সরবরাহ সংস্থার কর্মী রাজেশের সঙ্গে কাজের সূত্রেই ভিন রাজ্যের তরুণী শিখার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বেশ কয়েক বছর সম্পর্কে থাকার পর একুশ উত্তীর্ণ দুই তরুণ-তরুণী বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দু’জনের পরিবারই সেটা চায়নি।
উপায় না দেখে পরিবারের অমতে কিছুদিন আগে রেজিষ্ট্রি বিয়ে করার প্রস্তুতিও সেরে রেখেছিলেন উভয়ে। সেটা করতে রবিবারই দুবরাজপুরে এসে তাঁদের একসঙ্গে ছবি জমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা জানাজানি হতেই বেঁকে বসেন অভিভাবকেরা। উপায় না দেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে একটি মন্দিরে সিঁদুরদান করে শনিবার রাত ১২টা নাগাদ সোজা কাঁকরতলা থানায় পৌঁছে যান শিখা-রাকেশরা। পুলিশের কাছে গোটা ঘটনার কথা খুলে বললে যুগলের পাশে দাঁড়ান কাঁকরতলা থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম।
ঘটনার কথা বুঝিয়ে বলে উভয়ের পরিবারকে রবিবার সকালে থানায় ডাকার ব্যবস্থা করে পুলিশ। সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, উভয়েই যখন সাবালক তাঁদের উপর কোনও অন্যায় জোরাজুরি করা চলবে না।
ছেলে বিয়ে করেছে জেনে রাকেশের বাবা দয়াময় ঘোষ, মা অপর্ণা ঘোষরা থানায় এসে পৌঁছলেও শিখার বাবা প্রদীপ ঘোষ ফোনেই জানিয়ে দেন, ‘‘সিঁদুরদান যখন হয়ে গিয়েছে, তখন আর গিয়ে কী করব। মেয়ে সুখে থাকুক।’’ তারপরই সকলে দুবরাজপুর ম্যারেজ রেজিষ্ট্রি অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
শিখা ও রাকেশ দুজনেই বলছেন, ‘‘সম্পর্কের কথা বলে আমরা বারবার পরিবারের সম্মতি চেয়েছিলান কিন্তু বাড়িতে অভিভাবকেরা রাজি না হওয়ায় আমাদের কাছে আর কোনও বিকল্প পথ খোলা ছিল না। পুলিশ যে ভাবে আমাদের সাহায্য করল তার তুলনা হয় না। তবে শেষ পর্যন্ত সব ভালয় ভালয় মিটেছে।’’
কাঁকরতলা থানার পুলিশ জানিয়েছেন, আইনবিরুদ্ধ ভাবে নাবালিকা বিয়ের খবর পেলে যেমন তা আটাকানোর চেষ্টা করা হয়, তেমনই প্রাপ্তবয়স্ক তরুণ তরুণী যখন স্বেচ্ছায় বিয়ে করতে চাইলে তাঁদের বিয়েতে বাধা সৃষ্টি হলে পাশে থেকেছে প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy