E-Paper

শয্যার অভাবে মেঝে, সিঁড়িতে রোগী

দু’-তিন দিন আগে এক রাতে মেল মেডিসিন থেকে ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে যাওয়ার সিঁড়িতেও বেশ কয়েকজন রোগীকে শুয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ০৮:৫২
ওয়ার্ডের বাইরে যাতায়াতের পথে শুয়ে রোগী।

ওয়ার্ডের বাইরে যাতায়াতের পথে শুয়ে রোগী। নিজস্ব চিত্র ।

শয্যার অভাবে রোগীদের থাকতে হচ্ছে মেঝেতে। কোনও দিন আবার মেঝেতেও জায়গা না হওয়ায় ঠাঁই নিতে হয় সিঁড়ির উপরে। এমনই অবস্থা বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের। তবে হাসপাতাল সুপারের আশ্বাস, শয্যার অভাব মিটবে।

রবিবার মেল মেডিসিন ওয়ার্ডের বাইরে করিডরের মেঝেতে স্যালাইনের চ্যানেল হাতে শুয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের বাঁধগাবার কিশন লোহার, সোনামুখীর সজল শেখ, পশ্চিম মেদিনীপুরের দলদলির নন্দ ঘোষ-সহ অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘মেঝেতে শুয়ে থাকতে অসুবিধা হলেও কিছু করার নেই। নিখরচায় চিকিৎসার জন্য এটুকু তো সহ্য করতেই হবে।’’

দু’-তিন দিন আগে এক রাতে মেল মেডিসিন থেকে ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে যাওয়ার সিঁড়িতেও বেশ কয়েকজন রোগীকে শুয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। এক রোগীর আত্মীয় মঞ্জু ঘোষ বলেন, “চার দিন ধরে ছেলেটার জ্বর ছাড়ছে না। বাধ্য হয়েই গড়বেতা হাসপাতাল থেকে এখানে এসেছি। শয্যা না পাক, চিকিৎসাটা পেলেই হল।”

বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পরিষেবা উন্নত হওয়ায় সোনামুখী, বিষ্ণুপুর শহর-সহ কোতুলপুর, সোনামুখী, জয়পুর, ইন্দাস, পাত্রসায়র, ওন্দা ব্লক এবং গড়বেতা থেকেও রোগীরা এখানে আসেন। এক নার্স বলেন, ‘‘এক এক দিন এত রোগীর চাপ থাকে যে ওয়ার্ডে হাঁটা যায় না। মেঝেতে শুয়ে থাকা রোগীদের সরিয়ে সাফাই করতেও অসুবিধা হয় কর্মীদের।’’

এক নাগাড়ে বৃষ্টির ফলে জ্বরে অসুস্থ রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ায় এই অবস্থা বলে জানাচ্ছেন হাসপাতাল সুপার শুভঙ্কর কয়াল। তিনি বলেন, “জেলা হাসপাতালে রোগীর চাপ তো থাকবেই। পুরুষ বিভাগে (আইসলেশন- সহ) শয্যা সংখ্যা ৬৮ ও মহিলা ওয়ার্ডে ৬৫। তবে টানা বৃষ্টির ফলে জ্বর ও পেটের সমস্যা নিয়ে রোগীদের সংখ্যা অনেকটাই ছাপিয়ে গিয়েছে। এ সপ্তাহে পুরুষ ওয়ার্ডে ১৫০ ও মহিলা ওয়ার্ডে ১০০-এর অধিক রোগী ভর্তি হন। রবিবার ভর্তি ছিলেন পুরুষ ১১০ ও মহিলা ৯০ জন। বাধ্য হয়েই রোগীদের মেঝেতে থাকতে হচ্ছে।’’

হাসপাতাল সুপারের আশ্বাস, এ বার থেকে রোগীদের আর মেঝেতে থাকতে হবে না। ৬০ বছরের বেশি পুরুষ রোগীদের জন্য নতুন ২০ শয্যার ওয়ার্ড চালু হচ্ছে। মহিলাদের ওয়ার্ড পুরুষ ওয়ার্ডের জায়গায় যাবে। পুরুষ ওয়ার্ড মহিলা ওয়ার্ডের জায়গায় যাবে। সব মিলিয়ে পুরুষ বিভাগে ৪০টি শয্যা বাড়ানো হচ্ছে।

বিজেপির বিষ্ণুপুর নগর মণ্ডল সভানেত্রী তথা বিজেপি পুরপ্রতিনিধি শুক্লা চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের ব্যাপারে রাজ্য সরকার উদাসীন। তৃণমূল কর্মীদের হাসপাতালে চাকরিতে ঢোকানোর দিকেই নেতাদের নজর বেশি। হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোয় তাঁদের নজর নেই। জেলা হাসপাতালে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য ১০০র বেশি করে শয্যা থাকা উচিত।’’

যদিও বিষ্ণুপুর শহর তৃণমূল সভাপতি সুনীল দাসের দাবি, ‘‘কাজ না দেখে সমালোচনা করা বিজেপির বদ অভ্যাস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে যথেষ্ট সজাগ। বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে এখন হাঁটু প্রতিস্থাপন থেকে শুরু করে মাইক্রো সার্জারি চলছে সাফল্যের সঙ্গে। রোগীরা ভরসা পাচ্ছেন বলেই ভিড় করছেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bishnupur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy