আগাছা জন্মেছে পুরুলিয়া জেলা বিজেপি কার্যালয়ের চারপাশে। —নিজস্ব চিত্র।
পুরুলিয়ায় বিজেপির উত্থানের ‘আঁতুড় ঘর’ নিমটাঁড়ের জেলা কার্যালয় শ্যামাপ্রসাদ ভবন কার্যত বন্ধ। বর্ষায় আগাছা জন্মাচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বিজেপি কর্মীদের একাংশের মধ্যে।
যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার দাবি, ‘‘বিষয়টি তেমন নয়। লোকসভা নির্বাচনের সময়েও ওই কার্যালয় থেকেই দলীয় কাজকর্ম পরিচালনা করেছেন বিস্তারকেরা।’’
রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে পুরুলিয়া জেলায় বিজেপির সংগঠন ক্রমশ পোক্ত হতে শুরু করে। ২০১১ সালে নিমটাঁড়ে বাড়ি কিনে জেলা কার্যালয় শুরু করা হয়। দলের তৎকালীন জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দলের সে সময়ের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ শ্যামাপ্রসাদ ভবন নামে ওই জেলা কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন।২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০১৪-র লোকসভা, ২০১৬-র বিধানসভা, ২০১৮-র পঞ্চায়েত, ২০১৯-র লোকসভা এবং ২০২১-র বিধানসভা নির্বাচন পরিচালিত হয় এই জেলা কার্যালয় থেকেই। কিন্তু তারপর থেকেই ক্রমশ ব্রাত্য হয়ে পড়েছে ওই জেলা কার্যালয়।
দলের পুরনো কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, পুরুলিয়ায় জেলায় বিজেপির উত্থানের স্মৃতি ওই ভবন ঘিরে রয়েছে। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুলিয়ায় কার্যত শূন্য থেকে সাফল্য পায় বিজেপি। ২০১৯ সালে পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের জয় থেকে ২০২১ সালে জেলার ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রের জয়ের স্মৃতিও এই ভবনকে ঘিরেই রয়েছে। দলের প্রবীণ নেতাদের আক্ষেপ, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই নিমটাঁড়ের জেলা কার্যালয় একপ্রকার বন্ধ রয়েছে। ছাদে জল জমছে, দেওয়ালে আগাছা জন্মাচ্ছে। কার্যালয়ে টাঙানো দলের পতাকাও বিবর্ণ হয়ে পড়ছে।
দলের অনেকেই জানাচ্ছেন, বর্তমানে পুরুলিয়ায় বিজেপির স্থায়ী দলীয় কার্যালয় বলে কিছু নেই। গাড়িখানায় ঝাঁ চকচকে নতুন কার্যালয় তৈরি হচ্ছে। দলের কাজকর্ম চলছে মূলত রাঁচী রোডে সাংসদের কার্যালয় থেকে। দলের পুরনো দিনের নেতাদের একাংশের প্রশ্ন, নতুন জেলা কার্যালয় সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কেন শ্যামাপ্রসাদ ভবনে কাজ হবে না? নতুনের পথে এগিয়ে যেতে গেলে শিকড় বা অতীতকে ভুলে গেলে চলে না। তাহলে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তাটাই একসময় রুদ্ধ হয়ে পড়ে।
দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নিমটাঁড়ের কার্যালয় বন্ধ থাকার কারণেই হয়তো বর্ষাকালে আগাছা জন্মেছে। এমনটা হওয়া উচিত নয়। কী হয়েছে, খোঁজ নেব।’’ দলের জেলা সভাপতি বিবেক বলেন, ‘‘পুরনো কার্যালয় কখনই বন্ধ করা হয়নি। ওই কার্যালয় দলের সম্পদ। ওই কার্যালয়টি চালানো নিয়ে আমাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে।’’ তিনি জানান, বর্ষার পরেই সেই কার্যালয়ে আমূল সংস্কারের কাজ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy