Advertisement
E-Paper

সপ্তমীর সকালের জন্য এখন অপেক্ষা সিউড়ির রিয়া, শিউলির

সারাদিনের হাড় ভাঙা খাটনির পরে আধপেটা খাবার খেয়ে ঘুমতো যেতে হবে না। ওরা সিউড়ির ষ্টেশন এলাকার পথ শিশু। সপ্তমীর দিন, ওরা দল বেঁধে শহরের ঠাকুর দেখতে যাবে ‘তিতলি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাত ধরে।

তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৩৯
আর মাত্র কয়েকটা দিন, তার পরেই সপ্তমী। এক সঙ্গে পথশিশুরা। নিজস্ব চিত্র

আর মাত্র কয়েকটা দিন, তার পরেই সপ্তমী। এক সঙ্গে পথশিশুরা। নিজস্ব চিত্র

সপ্তমীর সকালের জন্য অপেক্ষা করে আছে ওরা। অন্তত, সে দিন সাত সকালে আর কাগজ কুড়োতে যাবার কোন তাড়া থাকবে ওদের। সে দিন রাস্তায় ফেরী করে বেড়াতে হবে না।

সারাদিনের হাড় ভাঙা খাটনির পরে আধপেটা খাবার খেয়ে ঘুমতো যেতে হবে না। ওরা সিউড়ির ষ্টেশন এলাকার পথ শিশু। সপ্তমীর দিন, ওরা দল বেঁধে শহরের ঠাকুর দেখতে যাবে ‘তিতলি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাত ধরে। দিনভর ঠাকুর দেখা, ঘোরাঘুরি, খাওয়া-দাওয়া।

বিগত বারো বছর ধরে এই সংস্থা সিউড়ির ষ্টেশন এলাকার পথ শিশুদের এক সান্ধ্য স্কুল চালান। তাঁরাই পুজোর প্রথম দিনেই শহরের পুজো মণ্ডপ ঘুরে দেখান পথশিশুদের। ‘তিতলি’র কর্ণধার অনন্ত পাল বলেন, ‘‘আমরা ষষ্ঠীর দিন বাচ্চাদের বা তাঁদের পরিবারের হাতে তেল সাবান শ্যাম্পু তুলে দিই। সারাদিন খেটে আসা বাচ্চা গুলোকে স্নান করানো হয়। বিকেলে সবার হাতে তুলে দেয়া হয় নতুন জামা কাপড়। ছেলেদের জন্য প্যান্ট, শার্ট। মেয়েদের জন্য ফ্রক আর চুড়িদার। এর জন্য যা খরচ হয় তা আসে শুভানুধ্যায়ীদের দানে। এরপরে সপ্তমীর দিন নতুন জামা কাপড়ে সেজে ওরা ঘুরতে বের হয়।’’

সংস্থা থেকে জানানো হয়, বাসে চেপে পড়লে বাচ্চাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় কিছু উপহার। যেমন খাতা, রং-পেন্সিল, সঙ্গে জলখাবারের প্যাকেট যা প্রতি বছর কোনও না কোনও পুজা মণ্ডপ ওদের জন্য উপহার দেয়। এ বার যাত্রা শুরু। শহরের নামী দামী সব পুজো মণ্ডপ দল বেঁধে ঘোরা আর প্রতিমা দেখতে দেখতে কোন প্রতিমা কেমন লাগল তা লিখে রাখা। পুজোর উদ্যোক্তারা তাঁদের সাধ্য মতন আপায়্যান করে। প্রতি বছর দুপুরের বড়বাগানের প্রান্তিক সংঘের মণ্ডপে পাত পেড়ে খাওয়া হয়।

পুজো কমিটির দায়িত্বে থাকা গৌতম দাস বলেন, ‘‘পথ শিশুদের খাওয়ানো আমাদের পুজোর অন্যতম অঙ্গ।” বিকেলের মুখে ফিরে এসে ওদের লেখার ওপর ভিত্তি করে ‘তিতলি’র বিচারে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়দের পুরস্কৃত করা হয় বলে জানান অনন্তবাবু। সংস্থার সভাপতি কৃষ্ণা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ওই সব শিশুদের ম্লান মুখে হাসি ফোটাতে পারলে আমাদের মন আনন্দে ভরে ওঠে।”

সব মিলে সপ্তমীর সকালের অপেক্ষার কাউন্ট ডাউন শুরু দিয়েছে রিয়া, শিউলি, উজলেফা, মুসকানরা। উদ্যোক্তারা জানালেন, অপেক্ষা আসলে এক ঝাঁক প্রজাপতির পাখা মেলে ওড়ার।

street children Durga puja Suri street child সিউড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy