Advertisement
E-Paper

রাত পোহালেই পৌষমেলা, নজর থাকছে দূষণেও

এক সময় অতিরিক্ত দূষণের কারণে প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল এই মেলা। এর পরে পরিবেশকে দূষণমুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে নতুন উদ্যমে শুরু হয় পৌষমেলা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৯

ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলায় দূষণ নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন চলেছে। এক সময় অতিরিক্ত দূষণের কারণে প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল এই মেলা। এর পরে পরিবেশকে দূষণমুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে নতুন উদ্যমে শুরু হয় পৌষমেলা। মেলায় দূষণ কী ভাবে কম করা যায়, তা নিয়ে যেমন উদ্যোগী হয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সঙ্গত করছেন ব্যবসায়ীরাও। অন্তত কী কী বিষয় থেকে দূষণ হতে পারে এই ব্যাপারে অনেকটাই সচেতন তাঁরা। এর পরও মেলায় জেনারেটর-এর ব্যবহার কিংবা উনুনে রান্না করা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়নি।

পৌষমেলা মানেই হরেক নাগরদোলা। তা চালাতে প্রয়োজন জেনারেটরের। মেলার মাঠের বেশ কিছুটা এলাকা জুড়ে হরেক নাগরদোলা বসে। আগে ওই এলাকায় গেলে সবার আগে কানে হাত দিতে হত। জেনারেটর-এর ভয়ানক আওয়াজে কান ঝালাপালা হওয়ার মতো অবস্থা হত। ২০১৭ সাল থেকে জেনারেটর ব্যবহারের পরিমাণ অনেক কমেছে। তবে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন যে হয়ে যায়নি, তার প্রমাণ মিলল শুক্রবার মেলার মাঠে গিয়ে। দেখা গেল, এক জায়গায় জেনারেটর ত্রিপল ঢাকা দিয়ে রাখা হয়েছে নাগরদোলার কাছে। কেন এনেছেন? নাম না প্রকাশের শর্তে তিনি বলেন, ‘‘খুব প্রয়োজন হলে তবেই ওই জেনারেটর ব্যবহার করা হবে। নয়তো মোটরে চলবে নাগরদোলা।’’

বাঁকুড়া থেকে এসেছেন আর এক নাগরদোলা দলের ম্যানেজার। কয়েক হাজার স্কোয়ার ফুট এলাকায় তাঁদের একটি জায়েন্ট হুইল, একটি তোরা তোরা, একটি ব্রেক ডান্স, একটি ড্রাগন ট্রেন সহ একাধিক নাগরদোলা রয়েছে। তিনি জানালেন, একটি জায়ান্ট হুইলের জন্য প্রতিদিন ৬৫ কেবি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। সব কটি নাগরদোলার জন্য সেই পরিমাণ দাঁড়ায় ২০০ কেবিতে। এর পরও তাঁরা ই-জেনারেটর ব্যবহার করছেন। তাতে খরচ বেড়েছে। কিন্তু দূষণ অনেক কমেছে। তাঁর কথায়, ‘‘মেলা বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদেরও আছে। আগে ফিতে থাকা জেনারেটর ব্যবহার করতাম। খুব কম খরচে হয়ে যেত। কিন্তু আওয়াজ হত। ই-জেনারেটর ব্যবহারের ফলে সেই সমস্যা আর নেই। এর পরে আরও আধুনিক কোনও জেনারেটর এলে আমরা সেটিই ব্যবহার করব।’’

পৌষমেলার দূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে ২০১৫ সালে মামলা করেছিলেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। ২০১৬ সালে মেলা হয়ে যায় তিন দিনের। দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এসপি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য পিসি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় পৌষমেলা হবে ছ’দিনের। সেই নিয়ম মেনে এ বছরও মেলা হবে ছ’দিনেরই (২৩ থেকে ২৮ ডিসেম্বর)। দূষণ নিয়ে সতর্কতা অবশ্য একই ভাবে জারি রয়েছে।

জেনারেটর প্রসঙ্গে সুভাষবাবু জানালেন, জেনারেটর দু’রকম হয়। একটা ‘গ্রিন জেনারেটর’ অন্যটা ‘ব্ল্যাক জেনারেটর’। গ্রিন জেনারেটরে আওয়াজ এবং ধোঁয়া কিছুই থাকে না। ব্ল্যাক জেনারেটরে দুটিই বেশি। এ ছাড়া ব্ল্যাক জেনারেটর ব্যবহার করা আইনত অপরাধ। পুলিশ চাইলে ব্যবহারকারীকে গ্রেফতার পর্যন্ত করতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘২০১৬ সালেও মেলায় প্রচুর ব্ল্যাক জেনারেটর চলেছিল। ২০১৭ সালে সেই পরিমাণ বেশ কিছু কমেছিল। আমি আগামীকাল মেলার মাঠ পরিদর্শন করব। জেনারেটরের দিকেও নজর থাকবে।’’

মেলা কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁদের স্টল দেওয়া হয়েছে, তাঁদের সব রকম ভাবেই সতর্ক করা হয়েছে। এর পরও কোনও ভাবে নিয়ম লঙ্ঘন করে কিছু হচ্ছে কী না, সে দিকে নজর রাখবেন তাঁরাও।

Festival Shantiniketan Bolpur Poush Mela
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy