প্রতীক্ষা বাড়ছে। কিন্তু বাংলাদেশে বন্দি বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি-সহ ছ’জনের জামিন এখনও মঞ্জুর হয়নি। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২৩ অক্টেবর। কী হয় সেই দিন, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বাড়ির লোক।
বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে ধৃত সোনালি ও সুইটি বিবি-সহ ছ’জনের জামিনের শেষ শুনানি হয়েছে ওই জেলার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের (সিজেএম) আদালতে। তার পরেই পুজোর ছুটি পড়ে। সোনালিদের সাহায্যের জন্য এখনও বাংলাদেশে রয়েছেন এ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ সামিরুল ইসলামের প্রতিনিধি মফিজুল শেখ। মফিজুল বৃহস্পতিবার ফোনে জানালেন, কবে দেশে ফিরতে পারবেন, সংশোধনাগারে সে চিন্তাতেই রয়েছেন সোনালিরা। মফিজুলের কথায়, “নিয়মিত আদালত, আইনজীবী এবং সংশোধনাগারে ঘুরছি। বলা হচ্ছে, আইনি জটিলতা রয়েছে। দেখি, কী হয়।”
জুনে দিল্লিতে কর্মরত পাইকর থানা এলাকার বাসিন্দা সোনালি ও সুইটি বিবি-সহ ছ’জনকে অসম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয় বলে অভিযোগ। এখন তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে রয়েছেন। সোনালি, সুইটিদের ফিরে পেতে তাঁদের পরিজনেদের করা মামলার প্রেক্ষিতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, ওই ছ’জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশি সন্দেহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের ওই ছ’জনকে আটক করা ও বিতাড়নের সিদ্ধান্তও খারিজ করে হাই কোর্ট।
সোনালি-সুইটিদের জামিন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বাংলাদেশের আদালতে। তবে তাঁদের নথিপত্রগত কিছু জটিলতা আছে বলে জানা গিয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে কি না, স্পষ্ট নয়। তা ছাড়া, বাংলাদেশের আদালতে যদি সোনালিদের জামিন হয়েও যায়, ছাড়া পেয়ে তাঁরা থাকবেন কোথায়—সেটাও প্রশ্ন। কারণ, তাঁরা সে দেশে ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত। মফিজুলের কথায়, “আইন এবং সময়ের উপরে ভরসা রাখছি।”
বীরভূমের পাইকরে সোনালির মামাতো ভাই রকি শেখ বলছেন, “আদালতের রায়ে আশা জেগেছিল। কিন্তু এত দিন পেরিয়ে গেলেও কবে দিদিরা ফিরতে পারবে, জানতে পারলাম না। চিন্তা আরও বেশি দিদির গর্ভস্থ সন্তান নিয়ে। এখানে ওর ছোট মেয়ে মায়ের অপেক্ষায় দিন গুনছে।” সুইটি বিবির আর এক সন্তানও (ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া) পাইকরে মায়ের আপেক্ষায় রয়েছে। সামিরুল ইসলাম বলেন, “আইন আছে। ওঁরা ফিরবেনই। যত ক্ষণ না ফিরছেন, সর্বতোভাবে ওই পরিবার দু’টির পাশে আছি আমরা।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)