Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Visva-Bharati

পাঁচিল সমর্থন করছেন না, ওঁদের প্রশ্ন ‘তাণ্ডব’ নিয়েও

সভায় উপস্থিতদের মত, শান্তিনিকেতনকে ঘিরে ফেলার বিরোধিতা নিশ্চয়ই জানাতে হবে। কিন্তু, ধ্বংসাত্মক পথে নয়। 

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২০ ০৫:৫২
Share: Save:

বিশ্বভারতীতে প্রতি পদক্ষেপে বিঘ্নিত হচ্ছে রবীন্দ্র আদর্শ, এই মর্মে আলোচনা সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের পক্ষ থেকে। রতনপল্লিতে প্রবীণ আশ্রমিক নীলা ভট্টাচার্যের বাড়িতে এই সভায় ছিলেন শর্মিলা রায় পোমো, শ্যামল চন্দ, কুন্তল রুদ্র, সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদিশা ঘোষ, শোভনলাল বিশ্বাস সহ আরও অনেকে। বর্তমান পড়ুয়াদের একাংশও উপস্থিত ছিলেন সভায়।

সভায় উপস্থিত সকলের তরফ থেকেই এক বাক্যে জানানো হয়, বিশ্বভারতী জুড়ে যে ভাবে পাঁচিল তুলে রবীন্দ্রনাথের পরিবেশ চেতনার কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। ঢেকে দেওয়া হয়েছে শান্তিদেব ঘোষ, কনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়দের মতো দিকপালদের বাড়িও। একই সঙ্গে সোমবার পাঁচিল তোলার বিরোধিতার নামে যে ভাবে শান্তিনিকেতনের মেলার মাঠ জুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে একদল মানুষ, তারও বিরোধিতা করা হয়। সভায় উপস্থিতদের মত, শান্তিনিকেতনকে ঘিরে ফেলার বিরোধিতা নিশ্চয়ই জানাতে হবে। কিন্তু, ধ্বংসাত্মক পথে নয়।

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পাঁচিল তোলার ক্ষেত্রে যে উচ্চপর্যায়ের কমিটির সুপারিশ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন-এর সুপারিশের কথা বারবার বলছে, তাও ঠিক ভাবে মানা হয়নি বলেই মত আশ্রমিকদের। তাঁদের দাবি, প্রাক্তন উপাচার্য রজতকান্ত রায় তৎকালীন রাজ্যপালকে চিঠি লিখে চার ফুট আট ইঞ্চির কম উচ্চতার দেওয়াল দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও প্রকৃতপক্ষে প্রাচীরের দৈর্ঘ স্থানবিশেষে আট থেকে এগারো ফুটে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান উপাচার্যের আমলে আলাপ-আলোচনার কোনও স্থান না থাকা এবং ছাত্র-ছাত্রী, কর্মী, অধ্যাপকদের মধ্যে ভীতির পরিবেশ তৈরি হওয়া প্রসঙ্গেও উষ্মা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।

একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, বিশ্বভারতীর পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতালে আইসিইউ এবং সমস্ত রকম প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থার দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানানো হলেও বিশ্বভারতী তাতে কান দেয়নি। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব আশা মুখোপাধ্যায় এ বছরের মার্চ মাসে আইসিইউ তৈরির কথা বললেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। সংস্কৃতি চর্চার পরিসরও সংকুচিত হয়ে আসছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আশ্রমিকরা। লিপিকা প্রেক্ষাগৃহের একদিনের ভাড়া পঁচিশ হাজার টাকা। যা ছাত্র-ছাত্রী বা স্থানীয় ছোট দলগুলোর পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। ফলে বিশ্বভারতী থেকে সরে যেতে হচ্ছে অন্যত্র। আশ্রমিকদের তৈরি করা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘চাঁদের হাট’ এর ভাড়া এতই বেড়েছে যে বাতিল হয় স্টলের পরিকল্পনাই। বাইশে শ্রাবণের উপাসনার ঐতিহ্যও নষ্ট হয়েছে বলেই মত তাঁদের।

বিশ্বভারতীকে আর পাঁচটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একই ছাঁচে ফেলা যায় না। কেননা, সেটি চরিত্রগত ভাবেই অনন্য। সেটাই বর্তমান কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারছেন না বা চাইছেন না বলেই মত প্রাক্তনীদের। রবীন্দ্রচেতনার অবনমনের বিরুদ্ধে বুধবার সকাল ১১টায় শান্তিদেব ঘোষের বাসভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ প্রতীকী প্রতিবাদেরও ডাক দেওয়া হয়েছে আশ্রমিকদের পক্ষ থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Visva-Bharati Shantiniketan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE