Advertisement
E-Paper

তিতলিতে মুখভার বাজারের

আকাশের মুখ ভার। ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাব খুব বেশি না হলেও দিনভর ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাই ধাক্কা দিয়েছে শেষ মুহূর্তের পুজোর বাজারে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৩০
সুনসান: প্রতিকূল আবহাওয়া প্রভাব ফেলল শেষ মুহূর্তের পুজোর বাজারেও। রামপুরহাটে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

সুনসান: প্রতিকূল আবহাওয়া প্রভাব ফেলল শেষ মুহূর্তের পুজোর বাজারেও। রামপুরহাটে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

আকাশের মুখ ভার। ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাব খুব বেশি না হলেও দিনভর ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাই ধাক্কা দিয়েছে শেষ মুহূর্তের পুজোর বাজারে।

বীরভূমের শহরগুলোর বড় বাজারেও দোকানদারদের চোখও এখন আবহাওয়ার খবরের দিকে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে পুজোর আগে শেষ শনি আর রবিবার বাজারে ভাল বিক্রি হয় প্রতিবারই। এ বার সেই সম্ভাবনায় জল ঢেলেছে তিতলি।

আমোদপুরের ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বা নানুরের পারমিতা মণ্ডলদের মতো অনেককেই শুকনো মুখে বলতে শোনা গেল, ‘‘কি করব পুজোর বাজার করে? পুজোতেও যদি নিম্নচাপ থাকে তা হলে নতুন জামা কাপড় পরে আর কোথায় যাব?’’ আয়াষের বিশ্বনাথ মণ্ডল বা বনগ্রামের শিবচন্দ্র দাসেরা অবশ্য বৃষ্টিকে তোয়াক্কা না করেই ছাতা মাথায় হাজির সাঁইথিয়া, রামপুরহাটের বাজারে। ‘‘পুজোর বাজার না করলে চলবে? বছরে একবার। অন্যবার সপরিবারে আসি, এ বার বৃষ্টি মাথায় করে সবাই আসতে পার না’’,— জামা, জুতো বাছতে বাছতে বলেন বিশ্বনাথ।

গত তিন দিন ধরে যে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে তার প্রভাব পড়েছে বীরভূম জুড়েই। পুজোর মুখে সমস্যায় পড়েছেন ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েই। বড় দোকানগুলি ইতিমধ্যেই বেশির ভাগ ব্যবসা করে ফেললেও সমস্যায় পড়েছেন ছোট ব্যবসায়ী, হকার ও ক্রেতাদের একাংশ।

অবস্থাপন্ন ক্রেতারা পুজোর অনেক আগে থেকেই বড় দোকান থেকে অধিকাংশ কেনাকাটা সেরে ফেলেছেন। শেষ মুহূর্তে তাঁরা সাধারণত টুকিটাকি কেনাকাটি করেন। নিম্নআয়ের চাকরিজীবীরা বেতন পাওয়ার পর এই সপ্তাহেই পুজোর বাজার শুরু করেছেন। ছুটির দিন এই বাজার জমে ওঠে। কিন্তু আগামী দু’দিন বৃষ্টির পূর্বাভাসের খবরে মন খারাপ সকলেরই। রামপুরহাটের ফুটপাথেই জামা কাপড় মেলে বিক্রি করেন রাজু মাল। বৃষ্টি থেকে পসরা বাঁচাতে পলিথিন ঢাকা দিয়ে গালে হাত দিয়ে দিন কেটেছে রাজুর। একই অবস্থা নানুরে সুজয় দাসদেরও। সারা দিনের ঝিরঝিরে বৃষ্টি পথের ধারের সস্তার বাজারকে কার্যত পথেই বসিয়েছে।

শুধু পোশাকের দোকানেই নয় তিতলির প্রভাব পড়েছে অন্য দোকানেও। রামপুরহাটের জুতোর দোকানদার মীর হান্নান কালাম বা কীর্ণাহারের জুতো বিক্রেতা অশোক দাসরাও বলেন, ‘‘এ বারের পুজোয় এমনিতেই জুতোর বাজার খারাপ। আশা করেছিলাম ঠিক পুজোর মুখে হয়তো একটু লাভের মুখ দেখব। কিন্তু বৃষ্টি সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে।’’ একই অনুযোগ, রামপুরহাটের ইমিটেশন গয়নার দোকানদার রুদ্র সেনগুপ্ত, ময়ূরেশ্বরের মনোহারি দোকানের মালিক কওসর আলিদের। তাঁরা জানান, শহরের ছোটখাটো দোকানগুলোতে পুজো যত এগিয়ে আসে বিক্রির পরিমাণ বাড়ে। কিন্তু পুজোর মুখেই দুর্যোগ। রবিবারের বাজারের দিকে তাকিয়ে তাঁরাও। সিউড়ির পোশাক ব্যবসায়ী সুজিত কুণ্ডু, দীপ্তম সাহা, জুতো ব্যবসায়ী অপর্না দাসদের মতো কিছু বড় ব্যবসায়ী অবশ্য পুজোর ব্যবসা করে ফেলেছেন তিতলি আসার আগেই। তাঁরা জানান, ভাল বাজারই পেয়েছেন তাঁরা। তিতলি আসার আগেই তাঁদের দোকানের বাঁধা খদ্দেররা কেনাকাটা সেরে ফেলেছেন। অনেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা

করে আসছেন। বিক্রি সাময়িক ভাবে মার খেলেও শেষ পর্যন্ত তা পুষিয়ে যাবে বলেই তাঁদের আশা।

রবিবার না হোক ষষ্ঠী বা সপ্তমীতেও বাজার করতে রাজি লাভপুরের চৌহাট্টার বাসিন্দা সুজাতা দাস, তারাপীঠের বুধিগ্রামের চামেলি মালদের মতো কেউ কেউ। অনেকেরই নতুন পোশাক কেনা হয়নি। তাঁদের কথায়, ‘‘কাজের ব্যস্ততায় আগে কিছু কেনা হয়ে ওঠে না। প্রতিবার পুজোর মুখেই বাজার করতে যাই। এ বার মেঘলা আবহাওয়া আর বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা যাক, অন্ধকারের পরেই তো আলো ফোটে।’’

Pujo shopping Titli
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy