আদ্রার তৃণমূল নেতা ধনঞ্জয় চৌবে খুনে জড়িত অভিযোগে আরও এক শুটারকে গ্রেফতার করল পুরুলিয়া জেলা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। দিন দুয়েক আগে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়ন থেকে ওই দুষ্কৃতীকে ধরা হয়। পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আদ্রার তৃণমূল নেতা খুনে অবধেশ পান্ডে নামের এক শুটারকে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়ন থেকে ধরা হয়েছে।” কয়েক দিন আগে বিহার থেকে রত্নেশকুমার পান্ডে নামের এক শুটারকে ধরা হয়। এ নিয়ে নেতা খুনে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হল।
পুলিশ জানায়, অবধেশকে স্থানীয় আদালতে তোলার পরে ‘ট্রানজিট রিমান্ডে’ পুরুলিয়ায় আনা হয়। রবিবার রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হলে জেল হাজতের নির্দেশ হয়। রত্নেশের মতো অবধেশের বাড়িও বিহারের গোপালগঞ্জের ডিহবাগহি গ্রামে।
গত ২২ জুন ভরসন্ধ্যায় আদ্রার পুরাতন বাজারের রামমন্দির এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে খুন হন তৃণমূলের আদ্রার শহর সভাপতি ধনঞ্জয়। ঘটনার তদন্তে ‘সিট’ গঠন করা হয়। ঘটনার পর দিনই গ্রেফতার করা হয় আদ্রার দুষ্কৃতী মহম্মদ জামাল ও তার সহযোগী হিসাবে পরিচিত আরসাদ হোসেনকে।
ঘটনার তদন্তে নেমে একের পর এক সাফল্য পেয়েছে পুলিশ। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় গ্রেফতার হয় খুনের ‘মূল চক্রী’, বিহারের বাসিন্দা কুখ্যাত অপরাধী আরজু মালিক। তদন্তে নেমে ‘সিট’ জানতে পারে, আরজু এক জনকে ধনঞ্জয়কে খুনের ‘বরাত’ দেয়। সেই দুষ্কৃতী ঘটনার আগে থেকে আদ্রায় ছিল। সে-ই যোগাযোগ করে অবধেশের সঙ্গে। অবধেশ খুনের কয়েক দিন আগে আদ্রায় আনে রত্নেশকে। খুনের ‘বরাত’ পাওয়া সেই দুষ্কৃতী এখনও অধরা।
তবে রত্নেশের পরে অবধেশের গ্রেফতার বড় সাফল্য হিসাবে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের সূত্রে জানা যায়, ধনঞ্জয়কে লক্ষ করে পরপর গুলি চালায় অবধেশই। ঘটনার দিন বারো আগে আদ্রায় আসে ওই আততায়ী। এলাকায় কয়েক দিন থেকে ফিরে যাওয়ার পরে গত ১৯ জুন ফের রত্নেশকে নিয়ে আদ্রায় আসে সে। তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকা থেকে পাওয়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজে অবধেশকে দেখা গিয়েছে। কাণ্ডের পরে বিহারে বাড়ি ফেরে সে। তবে পুলিশ তার সন্ধানে রয়েছে জানার পরে চম্পট দেয়। মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়নে এক কারখানায়কাজ করছিল সে।
সূত্রের খবর, অবধেশ উজ্জয়নে রয়েছে জানার পরে ‘সিট’-এর দল সেখানে যায়। সেখানে কয়েক দিন অবধেশের গতিবিধি নজরে রাখার পরে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ দিকে, তদন্তে উঠে এসেছে, বেশ কিছু সময় আততায়ীরা আদ্রায় ঘর ভাড়া নিয়ে ছিল। সেখানে বসেই খুনের নীলনকশা তৈরি হয়। এই তথ্য জানার পরে আদ্রায় যাঁরা বাড়ি ভাড়া দেন, তাঁদের ভাড়াটের বিশদ তথ্য থানায় জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)