ফাইল চিত্র।
চলতি বছরের ‘কন্যাশ্রী’ পুরস্কার পেল পুরুলিয়া জেলা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৪ অগস্ট কন্যাশ্রী দিবসে কলকাতার রবীন্দ্রসদনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরুলিয়া জেলাকে দ্বিতীয় পুরস্কার প্রাপক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই সাফল্যকে ‘টিমওয়ার্ক’ বলে জানান জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নারীশিক্ষায় পিছিয়ে পড়া পুরুলিয়ার শাপমুক্তি ঘটবে কন্যাশ্রীদের হাত ধরেই। আমরা সেই আলোর রেখা দেখতে পাচ্ছি।’’
নারীশিক্ষায় পিছিয়ে পড়া পুরুলিয়ায় কন্যাশ্রীরা পড়াশোনার পাশাপাশি সমাজ পরিবর্তনের দূত হিসেবে কাজ করুক, শুরু থেকেই এই ভাবনা নিয়ে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। প্রকল্পটি চালুর কিছু দিন পরে কন্যাশ্রী-ফুটবল দিয়ে কন্যাশ্রীদের সঙ্গে প্রশাসনের এক সঙ্গে পথচলা শুরু হয়েছিল। তা আরও গতিশীল করে ‘কন্যাশ্রী ক্লাব’ গঠনের ভাবনা।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী নারীশিক্ষার নিরিখে পুরুলিয়া পিছিয়ে ছিল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এই প্রকল্প পুরুলিয়ার জন্য আক্ষরিক অর্থেই আদর্শ একটি প্রকল্প। কন্যাশ্রীরা সামাজিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিক, সেই ভাবনা থেকে স্কুলে স্কুলে কন্যাশ্রী-বড়দিদের আত্মপ্রকাশ।’’
শুধু তাই নয়, ‘আমার মেয়ে সব জানে’—এই স্লোগান সামনে রেখে গত বছরে কন্যাশ্রী দিবসের দিন থেকে তাঁদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার কাজ শুরু করে প্রশাসন। স্কুলে স্কুলে পৌঁছে জেলাশাসক কন্যাশ্রীদের ন্যূনতম চাহিদাগুলির খোঁজখবর নিতে উঠে আসে শৌচাগার না থাকার সমস্যার কথা। কন্যাশ্রীরা জানায়, কোথাও আবার শৌচাগার থাকলেও দরজা নেই। কোথাও শৌচাগারে জল নেই বা কোথাও তা ঝোপঝাড়ে ভর্তি।
এ সব সমস্যার খোঁজের পাশাপাশি তার সমাধানও উঠে আসে জেলাশাসক-সহ প্রশাসনিক কর্তা-কন্যাশ্রীদের ঘরোয়া আলাপচারিতায়। প্রশাসনের সঙ্গে ছাত্রীদের সমন্বয় গড়ে তোলার জন্য ব্লকে ব্লকে গড়ে তৈরি হয়েছে কন্যাশ্রী ভবনও। জেলাশাসক বলেন, ‘‘এই ভবন কন্যাশ্রীদের নিজস্ব ভবন। স্কুলে কন্যাশ্রী-বড়দির নেতৃত্বে তাঁরা যেমন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করবে, বাল্যবিবাহ রুখবে, প্রশাসনের সহায়তায় গার্হস্থ্য হিংসার সমাধানে সহায়তা করবে, তেমনই মানুষকে জানাবে তাঁর প্রাপ্য সুবিধার কথা। এক জন কন্যাশ্রী নিজেকে বদলাবে, নিজের পরিবারকে বদলাবে আর বদলাবে নিজের চারপাশ।’’
কন্যাশ্রীরা এ বারে কোভিড সচেতনতা প্রচারেও কাজ করবে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy