দুর্ঘটনার পর রেল লাইন সারাইয়ের কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়ার ওন্দায় রেল দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়ির চালক, সহকারী চালক-সহ চারজনকে সাসপেন্ড করলেন রেল কর্তৃপক্ষ। রবিবার ভোরে বাঁকুড়ার ওন্দাগ্রাম স্টেশনের কাছে লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে অন্য একটি মালগাড়ি। সংঘর্ষে চলন্ত মালগাড়ির ইঞ্জিন-সহ বেশ কয়েকটি বগি বেলাইন হয়ে ছিটকে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় দু’টি মালগাড়ির মোট ১৩টি বগি। এরপর দিনভর আদ্রা-খড়্গপুর শাখার মোট ২২টি ট্রেন বাতিল করতে বাধ্য হয় রেল। দূরপাল্লার ট্রেনগুলিকেও অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এর পরেই উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকদের দিয়ে তদন্ত শুরু করেন রেল কর্তৃপক্ষ। তদন্তে জানা যায় লুপ লাইনে একটি মালগাড়ি আগে থেকেই দাঁড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও ডাউন লাইনের পয়েন্ট লুপ লাইনের দিকে সেট করা ছিল। পয়েন্টের ঠিক আগে একটি সিগন্যাল লাল ছিল। দক্ষিণ পুর্ব রেল কর্তৃপক্ষ তদন্তে এ-ও জানতে পারেন, চলন্ত মালগাড়ির চালক ও সহকারী চালক সিগন্যাল ‘ওভার স্যুট’ (সিগন্যাল অমান্য করা) করে গতি নিয়ন্ত্রণ না করাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। এর পরেই পদক্ষেপ করল রেল।
রেল সূত্রে খবর এই দুর্ঘটনার জেরে রেলের ১০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অর্চনা যোশী। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পাশাপাশি রেলের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। এর পরই চলন্ত মালগাড়ির চালক, সহকারী চালক-সহ মোট চার জনের শাস্তি ঘোষণা করল রেল।
দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া রেল ইঞ্জিন এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা বগিগুলো সরানোর কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছে রেল। রবিবার দুপুরে থেকে আপ লাইনে এবং সন্ধ্যার পর ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচলও শুরু হয়ে যায়। উপড়ে যাওয়া রেল লাইন ও ভেঙে যাওয়া সিমেন্টের স্লিপার সরিয়ে নতুন করে রেল লাইন পাতা হয়। দুর্ঘটনার জেরে ছিঁড়ে যাওয়া ওভারহেড তার নতুন করে লাগানো হয়। ক্ষতিগ্রস্থ বিদ্যুতের সাব-স্টেশনটিও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু রবিবার সন্ধ্যার পর সোমবার দুপুর পর্যন্ত আবার লুপ লাইনকে ট্রেন চলাচলের উপযুক্ত করে তুলতে না পারায় ওই লাইনে ট্রেন চলাচল আপাতত বন্ধ রেখেছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy