বর্ষা পার হয়ে গিয়েছে কবেই। তারপরেও বাঁকুড়া জেলায় কখনও সখনও হানা দিচ্ছে ডেঙ্গি।
সম্প্রতি জ্বরে অসুস্থ হন বাঁকুড়া সদর থানা এলাকার মাকুড় গ্রামের বাসিন্দা যুবক শিবদাস বাঙাল। জ্বরের সঙ্গে সারা শরীরে যন্ত্রণা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি প্রথমে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে গেলে তাঁর রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষায় জানা যায়, তাঁর ডেঙ্গি হয়েছে। এরপরে তাঁকে রবিবার বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালেও তাঁর রক্ত পরীক্ষার পরে ডেঙ্গির চিকিৎসা করানো হয়। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।
শিবদাসবাবুর ভাই মানব বাঙাল বলেন, “দাদা সব্জি ব্যবসা করেন। সেই কাজে তাঁকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতে হয়। তবে গত কয়েক সপ্তাহে এলাকার আরও দু’জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। তাই আমাদের আশঙ্কা, এলাকাতেই ডেঙ্গির মশা রয়েছে।” স্থানীয় বাসিন্দা অমৃত সিং বলেন, “ডেঙ্গি বৃষ্টিতেই ছড়ায় বলে জানতাম। কিন্তু ঠান্ডাতেও ডেঙ্গি হয় বলে জানতাম না। খুবই চিন্তার মধ্যে পড়ে গেলাম।’’ তাই এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে পঞ্চায়েতকে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় নটরা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সীমা দে অবশ্য পুরো বিষয়টি খোঁজ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “এলাকায় কেউ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে শুনিনি। খোঁজ নিচ্ছি। দরকার হলে স্বাস্থ্য দফতর থেকে মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য মেশিন আনানোর ব্যবস্থা করব।”
শুধু শিবদাসবাবুই নন। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে আরও এক ব্যক্তি বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে। ঘটনা হল, ফি বছরই বাঁকুড়া জেলায় বহু মানুষ মশাবাহিত রোগে অসুস্থ হচ্ছেন। তার মধ্যে ম্যালেরিয়া যেমন রয়েছে, তেমনই ডেঙ্গিও আছে। তবে বৃষ্টি থামার পরে সাধারণত এই রোগের মশারা খুব বেশি থাকে না বলেই জানা যেত। কিন্তু বিভিন্ন জেলায় এখনও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর মাঝে মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গির লক্ষণ নিয়ে ভর্তি হওয়া এক কিশোরের মৃত্যু হয়।
তবে কি আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় এখনও ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে? যদিও জেলা আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, অন্যান্য বছরের মতো এ বারও স্বাভাবিক নিয়মেই ঠান্ডা পড়েছে। তাপমাত্রার পারদও থাকছে নীচের দিকে। মঙ্গলবার তাপমাত্রা নেমেছে ১৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
বাঁকুড়া মেডিক্যালের সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “ভাইরাসের জীবন চক্রের পরিবর্তন হয়ে থাকতেই পারে।” জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূনকুমার দাস বলছেন, “শীতের মুখে নভেম্বর মাসে ডেঙ্গি একেবারেই হয় না তা অবশ্য নয়। কাজেই এটা নতুন কিছু নয়। কয়েক জন আক্রান্ত হচ্ছেন ঠিকই তবে অন্যান্য বারের তুলনায় সংখ্যাটা এ বার কমেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy