Advertisement
E-Paper

সভায় ভিড়, ভোট তবে যায় কোথায়?

এই বছরের গোড়ায় বাঁকুড়া জেলা সিপিএমের ২২তম সম্মেলন হয়েছে। সেই উপলক্ষেই এ দিনের প্রকাশ্য সমাবেশের আয়োজন হয়েছিল। জেলার সব ক’টি ব্লক থেকেই কর্মী সমর্থকেরা এসেছিলেন। লালময়দান উপচে ভিড় ছড়িয়ে পড়েছিল বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কেরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:১৬
বাঁকুড়ার সিমলাপালের লালময়দানে সিপিএমের সমাবেশ। সোমবার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

বাঁকুড়ার সিমলাপালের লালময়দানে সিপিএমের সমাবেশ। সোমবার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

সভাস্থল তো উপচে পড়ছে ভিড়ে। তাহলে ভোটের বেলায় ঝুলি খালি থাকে কেন? এই প্রশ্নটাই সোমবার বাঁকুড়ার সিমলাপালের লালময়দানের সমাবেশে কর্মী সমর্থকদের করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। অবশ্য, ঠিক প্রশ্ন বলা চলে না। উত্তরটাও দিয়েছেন তিনিই। বলেছেন, ‘‘এই সবই একটা খেলা। দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যে লাল ঝান্ডা আর নেই।’’

এই বছরের গোড়ায় বাঁকুড়া জেলা সিপিএমের ২২তম সম্মেলন হয়েছে। সেই উপলক্ষেই এ দিনের প্রকাশ্য সমাবেশের আয়োজন হয়েছিল। জেলার সব ক’টি ব্লক থেকেই কর্মী সমর্থকেরা এসেছিলেন। লালময়দান উপচে ভিড় ছড়িয়ে পড়েছিল বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কেরও। পুলিশকর্মীদের একাংশের হিসেবে প্রায় কুড়ি হাজার লোক হয়েছিল এ দিনের সমাবেশে। অমিয়বাবুর দাবি, সংখ্যাটা তিরিশ হাজারেরও বেশি।

সদ্য শেষ হওয়া উলুবেড়িয়া ও নোয়াপাড়া উপনির্বাচনে বেশ কয়েকটি বুথে বিরোধীদের ঝুলিতে পড়েছে কোথাও শূন্য, কোথাও বা তিন-চারটি ভোট। দু’টি উপনির্বাচনেই তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। ফলাফল প্রকাশ্যে আসতেই নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিভিন্ন বিরোধী দল। এ দিন প্রকাশ্য সমাবেশে সেই অভিযোগই তোলেন সূর্যকান্ত। তিনি বলেন, “উলুবেড়িয়া আর নোয়াপাড়া নির্বাচনের ফল প্রকাশ্যে আসতেই আপনাদের মতো আমারও মন খারাপ হয়েছে। সভায় এত মানুষ এসেছেন। তারপরেও কোথাও শূন্য, কোথাও একটি, দুটি, তিনটি ভোট। কী করে হয়?’’

প্রশ্নের উত্তর তিনি নিজেই দিয়েছেন। সূর্যবাবু বলেন, ‘‘ভোট লুঠ হচ্ছে। তৃণমূল বিজেপি বোঝাপড়া করে নিজেরা এক নম্বর আর দু’নম্বর জায়গায় ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। দেখানো হচ্ছে লালঝান্ডা কোথাও নেই। কিন্তু আক্রমণটা হচ্ছে আমাদেরই উপর।’’ একই বক্তব্য সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্রেরও। তিনি বলেন, “কালীঘাট থেকে ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে কাকে কতটা ভোট দেওয়া হবে। ওখান থেকেই ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে দ্বিতীয় হবে বিজেপি।”

সূর্যবাবু, অমিয়বাবুদের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তালড্যাংরার বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী পাল্টা বলছেন, “উলুবেড়িয়ার ২০১৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলের সঙ্গে এ বারের উপনির্বাচনের ফলাফল মিলিয়ে দেখলে এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে সিপিএমের ভোট চলে গিয়েছে বিজেপিতে। তলায় তলায় ওই দু’দলের জোট না থাকলে এটা হতেই পারে না।” আর ভিড় নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, “জেলার বাইশটি ব্লক থেকে যত লোক সিপিএমের সমাবেশে এসেছিলেন, আমাদের সভায় সিমলাপাল ব্লক থেকেই তার চেয়ে বেশি লোক যান।’’ সিপিএমের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার বলেন, ‘‘রাজ্যবাসী বুঝেছেন, সিপিএম শেষ। এই মুহূর্তে বিকল্প বলতে শুধু বিজেপি-ই। ওঁদের গালভরা কথায় মানুষ আর ভুলবে না।’’

এ দিন নিজের বক্তব্যে সূর্যকান্তবাবু বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দেন। তিনি বলেন, “এই রাজ্য থেকে তৃণমূল আর দেশ থেকে বিজেপিকে হঠাতে বুথ স্তর থেকে লড়াই শুরু করতে হবে। প্রতিটি বুথে কর্মীরা বুক চিতিয়ে লড়াই করুন।” সূর্যবাবুর নাম না করে ভারতী ঘোষের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “এক সময় যিনি তৃণমূল দল চালাতেন, মুখ্যমন্ত্রীকে মা বলে ডাকতেন, এখন তাঁকে সেই দলের বিরুদ্ধেই গলা ফাটাতে হচ্ছে। আজ যাঁরা তৃণমূল করছেন তাঁদেরও আসতে হবে লাল ঝান্ডার তলায়।” দলের নেতা কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “মানুষ যদি না থাকে তাহলে আমাদের কোনও দামই নেই। তাই প্রতিটি মানুষের কাছে আমাদের যেতে হবে।”

CPM Rally Surjya Kanta Mishra সিমলাপাল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy