Advertisement
E-Paper

স্থায়ী শিক্ষকের দাবি

স্কুলের জন্মলগ্ন থেকেই কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। দু’জন অতিথি শিক্ষককে নিয়ে স্কুল কোনও মতে চালু আছে।সেই শিক্ষকেরাও বয়সের ভারে আর স্কুল চালাতে রাজি নন। নিরুপায় হয়ে বুধবার সকাল থেকে পড়ুয়াদের স্কুল থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেওয়া শুরু করেছিলেন নলহাটির কাদাশীর জুনিয়র হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০০:১৭

স্কুলের জন্মলগ্ন থেকেই কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। দু’জন অতিথি শিক্ষককে নিয়ে স্কুল কোনও মতে চালু আছে।

সেই শিক্ষকেরাও বয়সের ভারে আর স্কুল চালাতে রাজি নন। নিরুপায় হয়ে বুধবার সকাল থেকে পড়ুয়াদের স্কুল থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেওয়া শুরু করেছিলেন নলহাটির কাদাশীর জুনিয়র হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। খবর পেয়ে অভিভাবক এবং গ্রামবাসীরা তাঁকে নিরস্ত করলেন। একই সঙ্গে স্কুল যাতে উঠে না যায়, তার জন্য প্রশাসনের কাছে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানালেন এলাকার মানুষ।

২০১৩ সালে নলহাটির বাউটিয়া অঞ্চলের এই জুনিয়র হাইস্কুলের সরকারি অনুমোদন পাওয়া যায়। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য প্রথম থেকেই কোনও স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অতিথি শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করে স্কুলটি চলছিল। সেই তিন জন অতিথি শিক্ষকের মধ্যে বর্তমানে দু’জন আছেন। ওই দু’জনের মধ্যেই এক জন হলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাজি আব্দুল হাফিজ। বছর পঁয়ষট্টির আব্দুল হাফিজ বলেন, ‘‘এখন ৬৪ জন পড়ুয়া। আমাদের দু’জনকে দিনে চারটে ক্লাস নিতে হচ্ছে। আমার চাকরির চুক্তির মেয়াদও ১৬ এপ্রিল শেষ হচ্ছে। অন্য অতিথি শিক্ষকের এখনও মেয়াদ আছে। কিন্তু, উনিও বয়সের ভারে আর স্কুল চালাতে পারছেন না।’’

এই অবস্থায় স্কুলটি চালু রাখার জন্য গত ছ’মাস ধরে এলাকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের রাজি করানোর চেষ্টা করেও তিনি পারেননি বলে প্রধান শিক্ষক জানান। তাঁর দাবি, প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। আব্দুল হাফিজের কথায়, ‘‘অনেক চেষ্টাতেও কোনও নতুন শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না দেখে স্কুলের পড়ুয়াদের অন্য স্কুলে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু, গ্রামবাসীদের আপত্তিতে আপাতত সেই প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়েছে।’’

প্রত্যন্ত কাদাশীর গ্রামটি পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড লাগোয়া। গ্রামে প্রায় ৯০০ পরিবারের বাস। একটি প্রাথমিক ও একটি জুনিয়র হাইস্কুল রয়েছে। গ্রামবাসী উত্তম কুমার ঘোষ, সর্বেশ্বর মণ্ডল, অসীমা ঘোষ, বিবেক সাহারা জানালেন, তাঁদের গ্রাম থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ভবানন্দপুর হাইস্কুল। ওই স্কুলে পৌঁছতে গেলে পড়ুয়াদের ঝাড়খণ্ডের ভিতর দিয়ে আড়াই কিলোমিটার পথ হেঁটে যেতে হবে। এ ছাড়াও রাস্তার উপর দিয়ে সব সময় পাথর শিল্পাঞ্চলের গাড়ি যাতায়াত করায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এই সব কারণেই ভবানন্দপুর হাইস্কুলে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পাঠাতে চান না অভিভাবকেরা।

স্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া বুবাই ঘোষ, ভূমিকা ঘোষ জানায়, অন্য স্কুলে এখন পরীক্ষা চলছে। এই অবস্থায় স্কুল থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেওয়া হলে তারা খুবই বেকায়দায় পড়বে। কোনও স্কুলই শিক্ষাবর্ষের মাঝপথে তাদের ভর্তি নেবে না। অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘‘এই অবস্থায় গ্রামের জুনিয়র হাইস্কুলেই স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করে স্কুলটি যাতে চালু থাকে, তার জন্য প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন জানিয়েছি।’’

রামপুরহাট মহকুমার স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দেবাশিস রায় চৌধুরী অবশ্য দাবি করেছেন, নলহাটির ওই স্কুলের সমস্যার কথা তাঁকে আগে জানানো হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘আজকে আবেদন করলেই তো সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষক দেওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষক নিয়োগের নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে। কী পরিস্থিতি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Retired Teachers Guest Teachers School
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy