তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
ফের মন্দিরে চুরি। এ বারও নলহাটি!
গত দু’বছরের ব্যবধানে নলহাটি থানার কুরুমগ্রামে দুটি মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটল। এবং গত সাত বছরে এই কুরুমগ্রামে তিনটি মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটল। কুরুমগ্রাম ছাড়া ওই পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে তেজহাটি, মেহেগ্রাম— এই দুটি গ্রামেও পর পর চুরির নজির রয়েছে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত চুরির ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার বা আটক করতে পারেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার গভীর রাতে নলহাটি থানার কুরুমগ্রামে একটি প্রাচীন শিব মন্দিরে চুরি হয়। স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় বে-আইনি মদের ব্যবসা থেকে জুয়ার ঠেক থেকে নেশা জাতীয় বিভিন্ন দ্রব্যের ব্যবসা দিনের পরে দিন বেড়েই চলেছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি অধিকাংশ চুরির ঘটনা এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধির জন্য ঘটছে। গ্রামে সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে ভিলেজ পুলিশ থাকা সত্ত্বেও বেআইনি মদ বিক্রির ঠেক এবং নেশা জাতীয় অন্যান্য দ্রব্যের বিক্রি কমেনি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল এলাকার দোলমঞ্চ তলা লাগোয়া প্রাচীন শিব মন্দিরের তালা ভেঙে দুটি গোপাল বিগ্রহের যাবতীয় গয়না চুরি করেছে দুস্কৃতীরা। এছাড়া শিব মন্দির লাগোয়া একটি বাড়ির দরজার তালা ভেঙে শিবের যাবতীয় পুজার বাসন চুরি করেছে দুষ্কৃতীরা। মন্দিরটি দেখভাল করেন চৈতালী মিত্র মজুমদার নামে এক বধূ। তাঁর স্বামী যমুনা বিহারী মিত্র মজুমদার বলেন, ‘‘এ দিন সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ মন্দিরের পুরোহিত দোলা চক্রবর্তী পুজো করতে এসে মন্দিরের তালা ভাঙা দেখে পড়শিদের খবর দেন। পরে খবর পেয়ে মন্দিরে এসে দেখি মন্দিরের তালা ভেঙে দুটি বিগ্রহের চাঁদির মুকুট, বাঁশি এবং অন্যান্য গয়না চুরি গিয়েছে। এ ছাড়াও শিব পূজার বাসন চুরি গিয়েছে।’’
দোলাদেবী বলেন, ‘‘মন্দিরের ঢোকার চাবি আমার কাছে থাকে। সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ মন্দিরে পুজোর ফুল তোলার পরে হাত ধুয়ে মন্দিরের দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি কাঠের দরজার তালা ভাঙা অবস্থায় আছে। সন্দেহ হয়, ভিতরে ঢুকে দেখি গোপালের দুটি বিগ্রহ কাত হয়ে পড়ে আছে। তখনই মন্দিরের সেবাইতদের খবর দেওয়ার জন্য মন্দির থেকে বেড়িয়ে যাই।’’ দোলাদেবী ত্রিশ বছর ধরে এই মন্দিরের কাজ করছেন। তিনি জানান, এরকম চুরির ঘটনা এর আগে কোনওদিন ঘটেনি।
অন্যদিকে বুধবার গভীর রাতে একই এলাকায় একটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। গৃহকর্তার অবর্তমানে চোরেরা সোনার গয়না-সহ নগদ টাকা নিয়ে যায়। বাড়ির মালিক বসন্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘বুধবার রাতে পাড়ার বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষ্যে গিয়েছিলাম। স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে বাড়িতে ছিল না। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি ফিরে এসে দেখি বাড়ি ঢোকার লোহার দরজার তালা ভাঙা। এর পরেই দেখি বাড়ির ভিতরে আরও দুটি তালা ভাঙা এবং আলমারি ভেঙে দুষ্কৃতীকারীরা সোনার গয়না, নগদ টাকা চুরি গিয়েছে।’’
দুটি ঘটনারই নলহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশ দুটি ঘটনার তদন্তে গ্রামে আসে। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকার বেআইনি মদের কারবার বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি জুয়া ও অন্যান্য অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য পুলিশ উদ্যোগ নেবে। সেই সঙ্গে এলাকায় যাতে পুলিশী টহলদারি পুনরায় শুরু করা যায় তার জন্য চেষ্টা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy