বাবা কে হারিয়ে মনের ইচ্ছা শক্তি জোরে পরীক্ষায় বসলেন বোলপুর নীরদ বরণী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র রূপঙ্কর দাস। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
বাবার শ্রাদ্ধে কাজ সম্পন্ন করে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসল ছেলে। শুক্রবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকলো বোলপুর শহরের ত্রিশূলাপট্টি এলাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন ওই এলাকার বাসিন্দা, পেশায় দিনমজুর প্রদীপ দাস। স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে তাঁর সংসার। বড় ছেলে রূপঙ্কর এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মঙ্গলবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বছর আটচল্লিশের প্রদীপের। পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। পরীক্ষারঠিক আগে বাবাকে হারিয়ে আকাশ ভেঙে পড়ে রূপঙ্করের মাথায়। তবে, দমে যায়নি বোলপুর নিচুপট্টি নীরদবরণী বিদ্যালয়ের ছাত্র রূপঙ্কর। তার পরীক্ষাকেন্দ্র বোলপুর শিক্ষানিকেতন আশ্রম বিদ্যালয়।
পিতৃশোক সামলে মা এবং পরিজনেদের বোঝানোর পরে রূপঙ্কর সিদ্ধান্ত নেয়, সে পরীক্ষা দেবে। রূপঙ্করের কথায়, “মনের অবস্থা একেবারেই ভাল ছিল না। কিন্তু, বাবা বলেছিল, যাই হয়ে যাক না কেন পরীক্ষায় বসতে। বাবার সেই কথা রাখতেই পরীক্ষায় বসা।” রূপঙ্করের মা রত্না দাস বলেন, ‘‘ছেলেকে সান্ত্বনা দেওয়ার কোনও ভাষা ছিল না। কিন্তু, পরীক্ষায় না বসলে একটা বছর নষ্ট হত। রূপঙ্করকে আমরা সবাই বুঝিয়েছি। ওর বাবারও ইচ্ছা ছিল।”
ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে বাহবা জানিয়েছেন তার স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে স্থানীয়েরা। নিচুপট্টি নীরদবরণী স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপেন্দু ধর বলেন, “এমন ঘটনা আমাদের কাছে একটি নজির হয়ে রইল। ছেলেটির বাকি পরীক্ষাগুলিতে যাতে কোনও ধরনের অসুবিধা না-হয়, তার জন্য আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy