E-Paper

কেনা জলে তেষ্টা মিটছে শহরের

বাসিন্দাদের বড় অংশেরই অভিযোগ, জল প্রকল্প আর বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ নামেই। গরম পড়তেই শহর জুড়ে পানীয় জলের সঙ্কট শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৫ ০৮:৩৭
বাড়িতে পানীয় জল আসেনি। দূর থেকে জল সংগ্রহ চলছে।

বাড়িতে পানীয় জল আসেনি। দূর থেকে জল সংগ্রহ চলছে। নিজস্ব চিত্র।

পানীয় জল সরবরাহের জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্প আছে। তার পরেও জলসঙ্কটে ভুগছেন রঘুনাথপুর শহরের বড় অংশের বাসিন্দাই। পরিস্থিতি এমন যে, জল কিনে মেটাতে হচ্ছে তেষ্টা। চলছে রান্নাবান্না থেকে গৃহস্থালীর অন্য কাজ।

পুরসভার দাবি, নতুন জল প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে। তা সম্পূর্ণ হলেই শহরে জল উদ্বৃত্ত হবে। যদিও শহরবাসীর ক্ষোভে স্পষ্ট, ওই আশ্বাসে চিঁড়ে ভিজছে না। তাঁদের একাংশের কটাক্ষ, গত পনেরো-কুড়ি বছর ধরে পুরসভায় ক্ষমতায় থেকেও পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে ব্যর্থ তৃণমূলের পুরসভা।২২ বছর আগে তৈরি নিতুড়িয়ার লক্ষ্মণপুরের ইন্দো-জার্মান জলপ্রকল্প থেকে পানীয় জল সরবরাহ করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।

কিন্তু বাসিন্দাদের বড় অংশেরই অভিযোগ, জল প্রকল্প আর বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ নামেই। গরম পড়তেই শহর জুড়ে পানীয় জলের সঙ্কট শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, শহরের তেরোটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকাতেই একই পরিস্থিতি। বিশেষ করে যে সব এলাকা উঁচু, সেখানে জল সরবরাহ খুবই কম হয়। এমনকি প্রয়োজনীয় জলের দশ শতাংশও মেলে না বলে দাবি।

শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন বাজারের বাসিন্দা সমরেশ পাল জানান, বাড়িতে জল সংযোগ আছে। মাসিক ৯০ টাকা করে জল কর দেন। কিন্তু গরম পড়তেই জল কিনে খেতে হয়। সমরেশ বলেন, “শহরের বেশ কিছু এলাকারই বাসিন্দারা জল কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন। দৈনিক চার-পাঁচ জ্যারিকেন জল কিনতে হয়। খরচ পড়ে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ টাকা।”

৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুপ্রিয় রায়ও জানান, বাড়িতে জল সংযোগ থাকার পরেও জল কিনে খেতে হয়। শহর লাগোয়া কয়েকটি গ্রামের জনা তিন-চার বাসিন্দা জল সংগ্রহ করে জ্যারিকেনে এনে বিক্রি করেন শহরে। তাঁরা জানান, শহরের জামসোল এলাকায় ইন্দো-জার্মান পানীয় জল প্রকল্প থেকে জল নিয়ে বিক্রি করেন শহরে। জামসোল থেকে জল পাওয়া না গেলে অন্যত্র নলকূপ বা কোনও স্কুল থেকে জল সংগ্রহ করেন।

বিরোধীদের অভিযোগ, ২, ৩, ৪, ৫, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জলসঙ্কট তীব্র। অন্য ওয়ার্ডগুলিতেও কম-বেশি সমস্যা রয়েছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির পুর-প্রতিনিধি দীনেশ শুক্লা বলেন, “সিপিএমের আমলে শুরু হওয়া নিতুড়িয়ার জলপ্রকল্পের ভরসায় চলছে শহর। তৃণমূলের ১৪ বছরে সরকার রঘুনাথপুর শহরের জন্য একটা প্রকল্প তৈরি করতে পারেনি। নির্বাচন এলেই শাসকদল গল্প শোনায়, এ বারে জল প্রকল্প হবে। ওদের ক্ষমতায় থাকার কোনও নৈতিক অধিকার নেই।”

তবে পুরপ্রধান তরণী বাউরির দাবি, অম্রুত ২ প্রকল্পে শুধু রঘুনাথপুর শহরের জন্যই নতুন জল প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। ইন্দো-জার্মান জল প্রকল্প থেকে দৈনিক ২.১ মিলিয়ন লিটার জল পাওয়া যায়। গরমে তা আরও কমে। অথচ শহরে জলের চাহিদা মেটাতে দৈনিক ৮.৭১ মিলিয়ন লিটার জল প্রয়োজন।

তাঁর আশ্বাস, “অম্রুত ২ প্রকল্পের কাজ জোরকদমে চলছে। আগামী দেড় বছরের মধ্যেই পানীয় জল উদ্বৃত্ত হবে শহরে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Raghunathpur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy