Advertisement
E-Paper

ফের বালিজুড়ির প্রধান ‘বহিষ্কৃত’ তৃণমূল নেতা

দলের অন্দরমহলের খবর, বছর তিনেক আগে শিবঠাকুর মণ্ডলকে ওই পঞ্চায়েতের প্রধানের পদ থেকে সরে যেতে ‘বাধ্য’ করেছিল দল। আর্থিক দুর্নীতি-সহ একগুচ্ছ অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে তুলেছিলেন নির্বাচিত তৃণমূল সদস্যরাই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৯
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ভোটের আগে দুবরাজপুরের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের জন্য ‘বহিষ্কৃত’ নেতার উপরই ভরসা রাখল তৃণমূল।

দলের অন্দরমহলের খবর, বছর তিনেক আগে শিবঠাকুর মণ্ডলকে ওই পঞ্চায়েতের প্রধানের পদ থেকে সরে যেতে ‘বাধ্য’ করেছিল দল। আর্থিক দুর্নীতি-সহ একগুচ্ছ অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে তুলেছিলেন নির্বাচিত তৃণমূল সদস্যরাই। মঙ্গলবার সেই শিবঠাকুরকেই ফের প্রধান পদে বেছে নেওয়া হল। সেখানে হাজির ছিলেন বিডিও দফতরের প্রতিনিধি।

তা হলে কি দুর্নীতির দায় থেকে মুক্ত হয়েছেন শিবঠাকুর? তার উত্তর মেলেনি। মোবাইল ফোন সুইচড অফ ছিল ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্রের।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ জানুয়ারি বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের পূর্বতন প্রধান মৌসুমী বাগদির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূলের কয়েক জন সদস্য। ২৯ জানুয়ারি তলবি সভার আগের দিন অসুস্থতার কারণে ইস্তফা দেন মৌসুমীদেবী। বিডিও দফতরের প্রতিনিধি কো-অপারেটিভ ইনস্পেক্টর রজতশুভ্র দাস জানান, ১১ সদস্যের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতে ৮ জন প্রধান নির্বাচনে শিবঠাকুরের পক্ষেই মত দেন। শিবঠাকুরবাবু বলেন, ‘‘চেষ্টা করব আরও ভাল কাজ করতে।’’

প্রথম থেকেই বালিজুড়ি পঞ্চায়েতে টানাপড়েন অব্যাহত। ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শিবঠাকুরবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব তুলেছিলেন সাত তৃণমূল সদস্য। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৯টি আসন নিয়ে সেখানে ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। দু’টি আসন পায় সিপিএম। তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে দলের সদস্যেরাই অনাস্থা তোলায় অস্বস্তিতে পড়েন তৃণমূল নেতৃত্ব। অনেক চেষ্টায় তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ভোটাভুটি পর্যন্ত গড়াতে দেওয়া হয়নি। বিক্ষুব্ধদের শান্ত করতে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে হয় তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। ঠিক হয়— ভোটাভুটির প্রয়োজন নেই। সরিয়ে দেওয়া হবে শিবঠাকুর মণ্ডলকে। দলীয় হস্তক্ষেপে বিক্ষুব্ধ সদস্যেরা ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ভোটাভুটির দিন অনুপস্থিত থাকায় অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়।

আগের নিয়ম অনুযায়ী কেউ আর ওই প্রধানের বিরুদ্ধে এক বছর অনাস্থা আনতে পারতেন না। ওই ঘটনার পর পরই পঞ্চায়েত আইনে সর্বশেষ সংশোধন অনুযায়ী, আড়াই বছরের আগে কোনও পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যাবে না বলে নির্ধারিত হয়। তার পরেই ইস্তফা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় শিবঠাকুরবাবুকে। কিন্তু, কাজের কাজ হয়নি। সংঘাত আরও বাড়তে থাকে। দলীয় নির্দেশ অগ্রাহ্য করায় তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। চাপের কাছে নতিস্বীকার করে শেষ পর্যন্ত তিনি সরে যান। প্রধান হন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর মৌসুমী বাগদি। তাঁকে সাহায্য করার জন্য ১৬ জনের একটি কমিটি গড়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু আড়াই বছর প্রধান পদে থাকার পর গত জানুয়ারিতে মৌসুমীদেবীর বিরুদ্ধেই অনাস্থা তোলেন দলের নির্বাচিত সদস্যরাই। অভিযোগ ছিল, বরাদ্দ টাকা খরচ করতে পারছেন না প্রধান। প্রকাশ্য দলের নেতারা জানান, দলবিরোধী কাজ হয়েছে। কিন্তু তলবি সভার আগে সরে দাঁড়ানো অন্য ইঙ্গিত দিয়েছে। ঘনিষ্ঠ মহলে মৌসুমীদেবী জানিয়েছিলেন, টাকা নয়ছয়ে বাধা দেওয়াতেই তাঁকে সরানো হল।

ফের প্রধান পদে শিবঠাকুরবাবুকে কেন ফিরিয়ে আনা হল? আড়ালে তৃণমূল নেতাদের একাংশ বলছেন, সবই উপর মহলের ইচ্ছা। সাফাই হিসেবে অনেকে বলছেন, শিবঠাকুরবাবুকে ফের দলে ফেরানো হয়েছিল ২০১৭ সালেই।

Balijuri Panchayet বালিজুড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy