শেষবেলা: কেন্দুয়াডিহিতে সৌরবিদ্যুৎ চালিত এই জলের কল চালু হচ্ছে আজ সোমবার। নিজস্ব চিত্র
দুর্গাপুর ব্যারাজের জল আগেই চলে এসেছে শহরের কাছে। কিন্তু এতদিন পুরোমাত্রায় তার সুবিধা নিতে পাচ্ছিল না বাঁকুড়া পুরসভা। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফরে এসে ভরা গ্রীষ্মে সেই কাজে গতি বাড়িয়ে দিলেন। বরাদ্দ করলেন ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। যার ফলে এ বার গ্রীষ্মে এই শহরের জলের অভাব অনেকটাই কেটে যাবে বলে আশাবাদী পুরসভা।
গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই জেলার বিভিন্ন এলাকার মতোই বাঁকুড়া শহরে জল সঙ্কট শুরু হয়। এই শহর তো বটেই সারা জেলায় পানীয় জলের সঙ্কট কাটাতে বিরাট কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই অনেক ব্লকে দুর্গাপুর ব্যারাজে জমিয়ে রাখা জল নিয়ে আসা হচ্ছে। বাঁকুড়া শহরের জুনবেদিয়া পর্যন্ত পাইপলাইনে দুর্গাপুরের জল চলে এসেছে। কিন্তু সেই জল এতদিন পুরোমাত্রায় ব্যবহার করা যাচ্ছিল না।
বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত জানাচ্ছেন, জুনবেদিয়া মোড় থেকে দুর্গাপুরের জল পুরসভার সাপ্লাই লাইনে কানকাটা পাম্প হাউসের রিজার্ভারে নিয়ে গিয়ে ফেলা হচ্ছিল। কিন্তু দিনে মোটে ৯ ঘণ্টা জল আনা যাচ্ছিল। বাকি সময়টা ওই সাপ্লাই লাইনের মাধ্যমে পুরবাসীকে জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এ বার দুর্গাপুরের জল সব সময় পাওয়ার জন্য নতুন করে মেন লাইন
পাতা চলছে।
তাঁর কথায়, ‘‘গত বছরই জুনবেদিয়া মোড় থেকে জেলা পরিষদের অডিটোরিয়াম পর্যন্ত মেন লাইন পাতা হয়ে গিয়েছে। এ বার অডিটোরিয়াম থেকে কানকাটা পাম্প হাউস পর্যন্ত মেন লাইন পাতা শুরু হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই এই কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’
কানকাটার রিজার্ভারের সঙ্গে শহরের মাদাকাটা, রাজগ্রাম, পাতাকোলা পাম্পিং স্টেশনগুলি পাইপলাইনে যুক্ত। পরিকল্পনা অনুযায়ী, কানকাটায় রিজার্ভার ভর্তি হয়ে গেলেই ওই লাইন দিয়ে শহরের অন্যান্য রিজার্ভারগুলিতে ধাপে ধাপে দুর্গাপুর ব্যারাজের জল পৌঁছে যাবে। তাতে গরমে শহরের জলের জোগান নিয়ে আর দুর্ভাবনা থাকবে না। মহাপ্রসাদবাবু বলেন, “মেন লাইন হয়ে গেলে আমরা দুর্গাপুর ব্যারাজের যথেচ্ছ জল নিতে পারব। যা এত দিন পারছিলাম না। এতে জলকষ্ট আর থাকবে না।”
গত শুক্রবার থেকে ব্লক এলাকায় চলে আসা দুর্গাপুর ব্যারাজের জল সরাসরি রাজগ্রাম পাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে কয়েকটি ওয়ার্ডে দেওয়া শুরু করেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।
পুরসভা সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে এসে পুরসভা ও প্রশাসনকে শহরবাসীকে জলসমস্যা থেকে মুক্ত করতে তৎপর হতে বলে যান। তারপরেই ওই কাজে গতি এসেছে। এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা রাজ্য পুর দফতর বাঁকুড়া শহরে জলের জন্য বরাদ্দ করেছে। ওই টাকায় বাঁকুড়া পুরসভা শহরের বিভিন্ন জায়গায় গভীর নলকূপ খুঁড়তে শুরু করেছে।
জনস্বাস্থ্য কারগরি দফতরও এই শহরের জলকষ্ট মেটাতে অন্তত ২৩টি জায়গায় সৌরবিদ্যুৎ চালিত সাবমার্সিবল পাম্প ও ট্যাপ কল চালু করতে চলেছে।
জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “শহরের মধ্যে আপাতত ২৩টি জায়গাতে ট্যাপ কল ও সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হচ্ছে। আরও কোথায় কোথায় বসানো যায়, তা নিয়েও আমরা ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছি।” তিনি যুক্ত করেন, “মুখ্যমন্ত্রীর চেষ্টায় গ্রীষ্মকালে বাঁকুড়া শহরের মানুষকে যে জলকষ্ট ভোগ করতে হতো, এ বার থেকে তা আর হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy