Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি নিয়ে ক্ষোভ

অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির তুলনায় সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় সেমিস্টারের ফি বেশি নিচ্ছে। এই অভিযোগকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, পুরুলিয়ার মতো পিছিয়ে পড়া জেলার একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ফি নিতে পারে কি না। এই অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০২:২৪
Share: Save:

অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির তুলনায় সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় সেমিস্টারের ফি বেশি নিচ্ছে। এই অভিযোগকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, পুরুলিয়ার মতো পিছিয়ে পড়া জেলার একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ফি নিতে পারে কি না।

এই অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো। গত রবিবার পুরুলিয়া মফস্সল থানা এলাকার ডুড়কু ময়দানে পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজের প্রকাশ্য সমাবেশের মঞ্চ থেকেই এই অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা বিভাগে প্রথম সেমিস্টারের ফি কমবেশি আড়াই হাজার টাকা। বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীদের এই ফি দিতে হয় কমবেশি ৩২০০ টাকা। তাঁর দাবি, ‘‘যেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা বিভাগের পড়ুয়াদের ৬০০ টাকা ও বিজ্ঞানের পড়ুয়াদের ১২০০ টাকা দিতে হয়, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ফি কলা বিভাগের পড়ুয়াদের ৮০০ টাকা ও বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীদের ১৪০০ টাকা, সেখানে সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি ফি কেন দিতে হবে?’’.

নেপালবাবু সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রীকে জানান। তিনি বলেন, ‘‘পুরুলিয়া পিছিয়ে পড়া ও দরিদ্র জেলা। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখানেই বেশি ফি নেওয়া হয়। এই বৈষম্যের বিষয়টি আমি বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নজরেও এনেছি। তিনি অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’’ ডুড়কুর সম্মেলনের মঞ্চে একাধিক বক্তাই এই বিষয়টি তাঁদের বক্তব্যে এনেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে আমাদের টিউশন ফি-র বেশি তারতম্য নেই। কিন্তু আমাদের পরীক্ষা ফি-সহ কিছু ফি যোগ করা থাকায় বেশি মনে হচ্ছে।’’ জেলার মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো ঘটনাটি শুনে বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।’’

ছাত্র সংগঠনগুলিও অবশ্য এ নিয়ে সরব হয়েছে। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক দীপঙ্কর মাঝি বলেন, ‘‘আমরা সেমিস্টারের ফি-র এই বৈষম্যের বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা ভাবছি।’’ জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি নিরঞ্জন মাহাতো বলেন, ‘‘এই বিষয়টি আমরা জানি। বিষয়টি সবে বিধানসভাতেও উঠেছে। শিক্ষামন্ত্রী খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’’ ওয়েবকুপার রাজ্য কমিটির সহ-সম্পাদক তথা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা এই ফি কমানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছি। কর্তৃপক্ষ আমাদের আবেদন খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’’

বেশি ফি নেওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা যে সমস্যায় রয়েছে তা তাঁরাও জানিয়েছেন। তাবারুখ আনসারি, ত্রিদিবেশ চট্টোপাধ্যায়-সহ পড়ুয়াদের বক্তব্য, ‘‘আমাদের জেলা গরিব জেলা। সেমিস্টারের ফি কমালে পড়ুয়াদের উপর থেকে চাপ কমে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE