Advertisement
E-Paper

রতনপল্লিতে ফের উচ্ছেদ বিশ্বভারতীর, ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা

আগেও একবার রতনপল্লির বেশ কিছু দোকান উচ্ছেদ করেছিল বিশ্বভারতী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ০২:৫৪
উচ্ছেদ: বিশ্বভারতীর অভিযানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে দোকান। মঙ্গলবার রতনপল্লিতে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

উচ্ছেদ: বিশ্বভারতীর অভিযানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে দোকান। মঙ্গলবার রতনপল্লিতে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

শান্তিনিকেতনের রতনপল্লিতে দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের জমি জবরদখল করে ব্যবসা চালানোর অভিযোগ তুলছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর তরফ থেকে ওই এলাকার তেমনই কিছু জমি দখলমুক্ত করা হল। মূলত যে দোকানগুলি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে পড়েছিল, এ দিন সেগুলিকেই উচ্ছেদ করা হয়। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা এ দিন দুপুর থেকেই দোকানগুলি প্রথমে খালি করেন এবং তার পরে জেসিবি এনে সেগুলি ভেঙে ফেলা হয়। বিশ্বভারতীর এই পদক্ষেপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ।

আর আগেও একবার রতনপল্লির বেশ কিছু দোকান উচ্ছেদ করেছিল বিশ্বভারতী। এ দিন দ্বিতীয় পর্যায়ে উচ্ছেদ করা হল আরও কিছু দোকান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রতনপল্লির খাবারের দোকানগুলি মূলত ছাত্রছাত্রীদের উপরে নির্ভর করেই চলত। লকডাউনের জেরে বিশ্বভারতী বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে খদ্দেরের সংখ্যা নেমে আসে তলানিতে। তাই গোটা লকডাউনের সময় কাল জুড়েই বন্ধ ছিল দোকানগুলি। এ দিন সেই বন্ধ দোকানগুলিকেই ভেঙে ফেলা হল। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যে দোকানগুলি এই স্থানে নিয়মিত খোলা থাকে, তাদের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাড়া সংগ্রহ করা হবে বলে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।

বিশ্বভারতীর এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘এই উচ্ছেদ অভিযান ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অঙ্গ। প্রতি বছরই ধীরে ধীরে এই জায়গাটিকে দখলমুক্ত করার চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ। তবে যে দোকানগুলি অহেতুক জায়গা দখল করে রেখেছে, আমরা শুধু সেগুলিকেই সরিয়েছি। সক্রিয় দোকানগুলির ক্ষেত্রে আমরা এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’

তবে, উচ্ছেদ হওয়া দোকানদারদের অভিযোগ, তাঁদেরকে আগাম না জানিয়েই দোকানের তালা ভেঙে এ দিন জিনিসপত্র বাইরে বের করে দেওয়া হয়। যদিও পরবর্তীতেতে জিনিসপত্র মিলিয়ে তাদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়েও নেওয়া হয়। এই অভিযোগ সম্পর্কে বিশ্বভারতীর তরফে প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ঘটনা হল, জবরদখল হওয়া জায়গা ফেরত পেতে ২০১৯ সাল থেকে ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন জায়গায় উচ্ছেদ চালিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই উচ্ছেদ নিয়ে ২০১৯-এর অগস্টে শান্তিনিকেতন কবিগুরু হস্তশিল্প সমিতির সঙ্গে উপাচার্যের বিরোধ তুঙ্গে পৌঁছেছিল। জায়গা ফেরত পেতে অনশনে পর্যন্ত বসেছিলেন উপাচার্য।

এ দিন রতনপল্লির যে-সব দোকান উচ্ছেদ হয়েছে, সেগুলি অবশ্য হস্তশিল্প সমিতির অধীনে পড়ে না। তবে, সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা বলেন, ‘‘উচ্ছেদের সময় ওই দোকানদারেরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাহায্য চেয়েছিলেন। লকডাউন পরিস্থিতিতে এমনিতেই ব্যবসায়ীরা অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। এ দিনের ঘটনা তাঁদের আরও অসহায়তার দিকে ঠেলে দিল। আমাদের অনুরোধ, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখুক। এ বিষয়ে আমরা উপাচার্যের সঙ্গেও কথা বলারহ চেষ্টা করব।’’

তাঁদের নিয়মিত খাওয়ার দোকানের হঠাৎ উচ্ছেদ হওয়ার কথা জানতে পেরে পড়ুয়াদের একাংশ নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছাত্রনেতা সোমনাথ সৌ বলেন, ‘‘রতনপল্লীর ওই দোকানগুলির সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের দৈনন্দিন জীবনযাপন জড়িত। এই লকডাউনের পরিস্থিতিতে বিশ্বভারতী এক দিকে যখন গরিব মানুষদের ত্রাণ দিচ্ছে, তখনই ঘাম পায়ে ফেলে রুটিরুজির ব্যবস্থা করা দোকানদারদের উচ্ছেদ করছে। আমরা, ছাত্রছাত্রীরা গরিব-দুঃস্থ সব সময় দোকানদারদের পাশে থাকব।’’

Ratan Pally Visva-Bharati Shantiniketan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy