Advertisement
E-Paper

বিপদ ঠেকানোর কৌশল শিখবে ছাত্রীরা

বিপদে পড়লে কী ভাবে আত্মরক্ষা করা যায়, এ বার তা ছাত্রীদের শেখাতে চাইছে সর্বশিক্ষা মিশন। পুরুলিয়ার জেলা পরিষদের প্রেক্ষগৃহে সোমবার থেকে শিক্ষকদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। শেষ হবে আজ বৃহস্পতিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:২০
স্কুলের শিক্ষিকাদের নিয়ে প্রশিক্ষণ চলছে পুরুলিয়া জেলা পরিষদে। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুলের শিক্ষিকাদের নিয়ে প্রশিক্ষণ চলছে পুরুলিয়া জেলা পরিষদে। —নিজস্ব চিত্র।

বিপদে পড়লে কী ভাবে আত্মরক্ষা করা যায়, এ বার তা ছাত্রীদের শেখাতে চাইছে সর্বশিক্ষা মিশন। পুরুলিয়ার জেলা পরিষদের প্রেক্ষগৃহে সোমবার থেকে শিক্ষকদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। শেষ হবে আজ বৃহস্পতিবার।

রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের আওতায় পুরুলিয়া জেলার ১৫৩টি স্কুলের শিক্ষিকাদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। পুরুলিয়া জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক প্রদীপ পতি জানান, এই জেলার সমস্ত গার্লস স্কুল ও কো-এড স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রীদেরই ‘সেলফ ডিফেন্স’ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের সময় তিন মাস।

জেলাস্তরে এই প্রশিক্ষণে প্রতিটি স্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষিকা ও শিক্ষকদের ডাকা হয়েছে। তাঁরা নিজেদের স্কুলে গিয়ে ছাত্রীদের প্রথমে এ সম্পর্কে মানসিক ভাবে প্রশিক্ষণ দেবেন। পরে হাতে-কলমে কৌশল রপ্ত করতে ট্রেনাররা প্রশিক্ষণ দেবেন।

মাধ্যমিক স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীদের সেলফ ডিফেন্স প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অন্যতম সঞ্চালক নূরউদ্দিন হালদার উপস্থিত শিক্ষকদের জানান, ভিড় বাসে কিংবা ফাঁকা রাস্তায় অনেক সময় ছাত্রীদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। এই রকম পরিস্থিতিতে পড়লে কী করতে হয়, তা তিনি বোঝান।

এই শিবিরে ছিলেন জেলার ক্যারাটে বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত অভিজিৎ শীল (কিওকুশিন), মহম্মদ নুরুল ইসলাম (শোতকান) প্রমুখ। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘পড়াশোনার জন্য ছাত্রীদের এখন প্রতিদিন দু’বেলা ঘরের বাইরে বেরোতে হয়। বাইরে বেরিয়ে নানা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখিও কখনও সখনও তাদের পড়তে হচ্ছে।’’ এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে কী ভাবে তারা আত্মরক্ষা করবে? অভিজিৎবাবু জানান, ওড়না অনেক ছাত্রীর কাছে্ই থাকে। এই ওড়না ব্যবহার করেও আক্রমনকারীকে কাত করা যায়। হাতে থাকা পেন দিয়ে বা রুমাল দিয়ে কিংবা ছাতা অথবা মাথার ক্লিপ, মোবাইল এমনকী জুতোর হিল দিয়েও আক্রমনকারীকে শায়েস্তা করা যায়। পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলে হাতের আংটি কিংবা হাতের পেন দিয়ে কী ভাবে আক্রমণকারীকে সহজেই কোনও বল প্রয়োগ ছাড়াই কাত করতে পারা যায়, সেই কৌশল তিনি দেখান।

অভিজিৎবাবুর কথায়, ‘‘আক্রমণকারীর শরীরের এমন কিছু স্থান আছে, যেখানে আঘাত করলে সে ছেড়ে পালাবে। হামলাকারীর শরীরের কোথায় গোপনে পেন বা ক্লিপ দিয়ে আঘাত করতে হবে, সেটা একবার ছাত্রীরা রপ্ত করলে তাঁরা এ ধরনের অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারবে।’’ মহম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘অন্যকে আক্রমণ করা নয়, নিজের আত্মরক্ষার অধিকার সকলেরই রয়েছে। সেটাই ছাত্রীদের বোঝাতে হবে।’’

নূরউদ্দিন হালদার জানান, প্রশিক্ষণের দু’টি দিক রয়েছে। একটি মানসিক, অন্যটি শারীরিক। এখান থেকে প্রশিক্ষণ শেষে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষিকারা ছাত্রীদের প্রথমে মানসিক পাঠ দেবেন। তারপরে বিশেষজ্ঞেরা বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে কৌশল রপ্ত করার বিষয়টি শেখাবেন।

জিতুজুড়ি দেবাশিস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা দোলা লায়েক, দরোডি এইচজিকে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কুন্তলা কুণ্ডু, বড়গোড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের রীতা মুখী বলেন, ‘‘এই প্রশিক্ষণে তো শুধু ছাত্রীরাই উপকৃত হবে না, আমরাও উপকৃত হব।’’

self-defence techniques
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy