E-Paper

প্রশ্নফাঁস-বেকারত্ব, স্কুলে প্রশ্নে বিডিও

উদ্দেশ্য ছিল, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীরা কী ভাবে প্রস্তুতি নিলে ভাল ফল করবে এবং পরবর্তী কালে কী ভাবে চাকরির পরীক্ষার জন্য নিজেদের তৈরি করবে, এই বিষয়ে তাদের সম্যক ধারণা দেওয়া।

সমীরণ পাণ্ডে

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:১১
পড়ুয়াদের মধ্যে বিডিও।

পড়ুয়াদের মধ্যে বিডিও। নিজস্ব চিত্র।

বর্তমানে দেশ জুড়ে বেকারত্ব বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা থেকে নিট, নেট-এর প্রশ্নপত্রও ফাঁস হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন সরকারি আধিকারিক।

পুরুলিয়া ২ ব্লকের বিডিও বাপি ধর সোমবার স্থানীয় বড়াসিনি নন্দলাল উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যান। উদ্দেশ্য ছিল, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীরা কী ভাবে প্রস্তুতি নিলে ভাল ফল করবে এবং পরবর্তী কালে কী ভাবে চাকরির পরীক্ষার জন্য নিজেদের তৈরি করবে, এই বিষয়ে তাদের সম্যক ধারণা দেওয়া।

উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী ৫০-৬০ জন ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তিনি মুখোমুখী বসেন। নিজের বক্তব্য শেষে তিনি যখন ছাত্রছাত্রীদের কাছে তাদের মতামত জানতে চান, তখন এক ছাত্রী বিডিও-র কাছে জানতে চায়, ‘‘চাকরির বাজার খুবই খারাপ। নিয়োগের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পর্যন্ত ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা কী ভাবে মনোবল পাব?’’ এক ছাত্র আবার বিডিওকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘‘স্যর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েই ভাবছি বাইরে কাজ করতে চলে যাব। চাকরির আশা করে লাভ নেই।’’

প্রশ্ন শুনে তাদের উদ্দেশ্যে বিডিও বলেন, ‘‘প্রশ্নফাঁসের আশঙ্কা না করে নিজেদের প্রস্তুতির দিকে নজর দিতে হবে। তবেই সফল হওয়া যাবে। তা সে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হোক অথবা চাকরির পরীক্ষা।’’ মাথায় নেতিবাচক চিন্তা থাকলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করা যাবে না বলে বিডিও জানান পড়ুয়াদের।

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘চাকরির সমস্যা ও প্রশ্নপত্র ফাঁস সত্যিই আজকের সমস্যা। এ নিয়ে ওদের মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। তবে তারা পড়াশোনা মন দিয়ে করুক। যাতে যে কোনও প্রতিযোগিতার সম্মুখীন তারা হতে পারে। তবে অনেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। বিডিও-র পরামর্শের ফলে তারা উপকৃত হবে বলে মনে করি।’’

কেন্দ্র হোক বা রাজ্য সরকারের হোক চাকরির বাজার যে ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে এবং তরুণ প্রজন্ম যে আশার আলো দেখছে না এ দিনের ঘটনা যেন তারই প্রমাণ।

তবে এ নিয়ে বিরোধীদের দোষ দেওয়ার পাশাপাশি তরুণদের আশ্বস্ত করার কথা শুনিয়েছেন দুই শাসকদলের নেতৃত্ব। তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘এ রাজ্যে শিল্পে উন্নতি হয়েছে, কর্মসংস্থানেরও প্রচুর সুযোগ তৈরি হয়েছে। আরও হবে। তবে বিরোধীরা উন্নয়নে বাধা দেওয়ায় এবং একের পর এক মামলা করার জন্য কিছু নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে।’’

অন্য দিকে জেলা বিজেপি সভাপতি বিবেক রঙ্গা বলেন, ‘‘উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করছে। কিন্তু তৃণমূল যতদিন এ রাজ্যে আছে, ততদিন প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে এবং মামলা-মকদ্দমাও হবে। ওরা ভোটের আগে চাকরি দেবে বলে নাটক করে এবং পরে তারাই মামলা করে, যাতে চাকরি দিতে না হয়। বিজেপি সরকার এ রাজ্যে এলে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য কর্মসংস্থান তৈরিতে সচেষ্ট।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia BDO

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy