Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

রেজিস্ট্রেশন দ্রুত হোক, চান ছাত্রীরা

পাঠ্যক্রমের জন্য ফি নিলেও রেজিস্ট্রেশন করানোয় কোনও ভূমিকা নেয়নি কলেজ। দ্রুত যাতে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন হয়, সেই দাবিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন সিউড়ির দু’টি বেসরকারি ডিএলএড কলেজের এর ছাত্রীরা।

সোচ্চার: সিউড়ির বড়বাগানে বেসরকারি ডিএলএড কলেজে রেজিস্ট্রেশনের দাবিতে ছাত্রীরা। ছবি: নিজস্ব চিত্র

সোচ্চার: সিউড়ির বড়বাগানে বেসরকারি ডিএলএড কলেজে রেজিস্ট্রেশনের দাবিতে ছাত্রীরা। ছবি: নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০১:২৫
Share: Save:

পাঠ্যক্রমের জন্য ফি নিলেও রেজিস্ট্রেশন করানোয় কোনও ভূমিকা নেয়নি কলেজ। দ্রুত যাতে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন হয়, সেই দাবিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন সিউড়ির দু’টি বেসরকারি ডিএলএড কলেজের এর ছাত্রীরা।

সিউড়ির কড়িধ্যা পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রম ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন)-এর দু’টি বেসরকারি কলেজের শ’খানেক ছাত্রী মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রঞ্জনকুমার ঝা-এর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের অভিযোগ, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ভর্তি হয়েছেন তাঁরা। ক্লাসও করছেন। কিন্তু, পরীক্ষা দেওয়ার ন্যূনতম শর্ত হিসাবে যে রেজিস্ট্রেশন এক বছরের মাথায় হয়ে যাওয়া উচিত ছিল, ফি নিলেও সেটাই এখনও করেননি দুই কলেজের কর্তৃপক্ষ।

কলেজ সূত্রের খবর, গত বছর জুলাইয়েই ওই ছাত্রীদের পার্ট-১ পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলায় শুধু এই দু’টি কলেজ নয়, গোটা রাজ্যেই সব ডিএলএড কলেজের পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। শীঘ্রই সেই পরীক্ষা হওয়ার কথা। সিউড়ির ওই দুই কলেজের ছাত্রীদের এখন আশঙ্কা, তাঁদের রেজিস্ট্রেশন সময়ে না হলে না হলে পুরোটাই পণ্ডশ্রম হবে। কোর্স ফি বাবদ ইতিমধ্যেই তাঁরা লক্ষাধিক টাকা খরচ করে ফেলেছেন বলেও পড়ুয়াদের দাবি। এই অবস্থায় প্রশাসনের কর্তারা যেন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন, এমনই আবেদন দুই কলেজের ছাত্রীদের। অতিরিক্ত জেলাশাসক পড়ুয়াদের কাছ থেকে সব শুনে তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন। অনুমোদনজনিত কোনও সমস্যার জন্যই কি হয়নি ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন?

এই দু’টি ডিএলএড কলেজের কর্ণধার রাইহান উল হকের দাবি, ‘‘মোটেই তা নয়। বরং প্রথা মেনে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন এবং রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ—এই দু’টি জায়গা থেকেই অনুমোদন প্রাপ্ত কড়িধ্যা এলাকার দু’টি কলেজ। ময়ূরেশ্বরেও অনুরূপ দু’টি ডিএলএড কলেজ রয়েছে আমাদের। ২০১২ সাল থেকে কলেজগুলি চলছে। তিনটি ব্যাচ বেরিয়েছে এখান থেকে।’’ তাঁর অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ রেজিস্ট্রেশন করতে না চাওয়াতেই এই সমস্যা। এমনকী, মামলা করার পরে কলকাতা হাইকোর্ট গত বছর নভেম্বরে তাঁদের সিউড়ির একটি কলেজের ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন করানোর নির্দেশ দিলেও তা পর্ষদ মানেনি।

বীরভূমের অন্য বেসরকারি ডিএলএড কলেজগুলির সঙ্গে জুড়ে থাকা লোকজন আড়ালে জানাচ্ছেন, একটি ডিএলএড কলেজে আসন সংখ্যা নির্দিষ্ট থাকে ৫০টি। কিন্তু, যখন পড়ুয়াদের ভর্তি করানো হয়, তার আগেই পর্ষদ থেকে টাকা দিয়ে কলেজ পিছু ৩০০টি অ্যাডমিশন ফর্ম তুলতে হয়। রাইহান উল হকের মালিকানাধীন কলেজগুলির মধ্যে একটির নামে ৩০০টি ফর্ম তুলে বাকি কলেজগুলিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করানো হয়েছে। বাকি কলেজগুলির টাকা বাকি থাকায় রেজিস্ট্রেশন নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

ঘটনার সত্যতা আংশিক মেনে নিয়েছেন রাইহান। যদিও তাঁর বক্তব্য, ‘‘যে দিন পর্ষদের কলকাতার অফিস থেকে ফর্ম তোলা হয়েছিল, সেদিন তারা কলেজগুলির শিক্ষকদের তালিকা চেয়েছিল। কিন্তু, সব কলেজের অধ্যক্ষ সেই তালিকা সঙ্গে নিয়ে যাননি। একটি কলেজের তালিকা থাকায় তারা ৩০০টি ফর্ম তুলেছিল।’’ তাঁর আরও দাবি, দিন কয়েক বাদে বাকি কলেজের শিক্ষক-তালিকা ও ফর্ম বাবদ টাকা ড্রাফ্ট করে পর্ষদে পাঠানো হয়। মৌখিক ভাবে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, রেজিস্ট্রেশন ঠিক সময়ে হয়ে যাবে। পরে সময় পেরিয়ে গিয়েছে জানিয়ে টাকা ফেরত পাঠায় পর্ষদ।’’

অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, ‘‘রেজিস্ট্রেশনের সমস্যা চারটি কলেজে হয়েছে। ছাত্রীরা এসেছিলেন। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’

পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ ভাবে একটি কলেজের বিষয়ে বলা সম্ভব নয়। পর্ষদ বিধি মেনেই কাজ করে। যদি কারওর অভিযোগ থাকে দফতরে সেটা জানাক। খতিয়ে দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Students Registration College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE