Advertisement
E-Paper

এক ঘরেই চলে চার ক্লাস, বিধায়ককে চিঠি পড়ুয়াদের

এলাকার একটি স্কুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিধায়ক। খবরের কাগজে এ কথা জানতে পেরে ওই বিধায়ককেই পাশের পঞ্চায়েতের একটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও চিঠি লিখল স্কুলের নতুন ঘরের জন্য। সাঁইথিয়ার বনগ্রাম পঞ্চায়েতের অটুয়া গ্রামে মথুরাপুর জুনিয়র হাইস্কুলের ঘটনা।

অনির্বাণ সেন

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০৮
চিঠি লিখছে ছাত্রছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র।

চিঠি লিখছে ছাত্রছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র।

এলাকার একটি স্কুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিধায়ক। খবরের কাগজে এ কথা জানতে পেরে ওই বিধায়ককেই পাশের পঞ্চায়েতের একটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও চিঠি লিখল স্কুলের নতুন ঘরের জন্য। সাঁইথিয়ার বনগ্রাম পঞ্চায়েতের অটুয়া গ্রামে মথুরাপুর জুনিয়র হাইস্কুলের ঘটনা। চিঠি এখনও পৌঁছয়নি বিধায়কের কাছে। সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানতে পেরে বললেন, ‘‘চিঠি এখনও পাইনি। তবে বিষয়টা জানলাম। স্কুলের জন্য আমার সাহায্যের হাত সব সময় রয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যেই আমি ওই স্কুলে যাব।’’

বড়জোর ২০ বাই ৩৫ ফুটের ঘর। সে ঘরেই চলছে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত জুনিয়র হাইস্কুল। এক-দু’দিন নয়— টানা ছয় বছর! টিচার্স ও অফিস রুমের অভাবে পাশের প্রাথমিক স্কুলেই একটি ঘরই তাদের অফিস রুম। সঙ্গে গোদের উপর বিষ ফোঁড়া গেল কাল বৈশাখীর ঝড়ে উড়ে গিয়েছে মিড মিল রান্না করার ঘরের চাল। অভিভাবক-সহ ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, একটা ঘরে চারটি ক্লাস হওয়ার ফলে পঠনপাঠনের মান দিন দিন তলানিতে ঠেকছে। কার্যত সে কথা মেনেও নিয়েছেন টিচার-ইন-চার্জ ছন্দা দাস।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কথা ভেবে ২০০৯ সালে এলাকায় একটি জুনিয়র হাই স্কুলের অনুমোদন মেলে। পরে স্কুলের একটি ঘর তৈরি হলে ২০১১ সাল থেকে ওই ঘরে শুরু হয় ‘মথুরাপুর জুনিয়র হাই স্কুল’। প্রতি বছর ক্লাস বাড়তে থাকলেও বাড়েনি ক্লাস-ঘর। ২০১৪ সালে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন চালু হয়। অভিযোগ, এতগুলি বছর কেটে গেল এখনও স্কুল-ঘর বাড়ল না। একটি ঘরেই ৭১ জন ছেলেমেয়েকে নিয়ে চলছে চারটি ক্লাস।

ছন্দা বলেন, ‘‘একটা ঘরে চারটে ক্লাস করতে খুব অসুবিধে হয়। সঙ্গে রান্নাঘরের চালাও উড়ে গিয়েছে গেল কালবৈশাখীর ঝড়ে। বিডিও অফিসে বারবার জানিয়েও কিছু হয়নি।’’ স্থানীয় বাসিন্দা বিধান মণ্ডলের কথায়, ‘‘অনেকবার অভিভাবকদের পক্ষ থেকে ব্লক অফিস, এসআই অফিসে জানিয়েছি। কিন্তু সমস্যা যেখানকার সেখানেই আছে।’’

সবাই যখন হতাশ, তখন ওই স্কুলের পড়ুয়ারাই স্কুলের ঘর বাড়ানোর চেষ্টা করে। কাগজে খবর দেখে বিধায়ক স্কুলের ঘর তৈরি করতে সাহায্য করবেন এই রকম একটি খবর দেখতে পেয়ে শনিবার পড়ুয়ারা নিজেরাই খাতার পাতা ছিঁড়ে বিধায়ককে সাহয্যের জন্য চিঠি লেখে। তা স্থানীয় দহীরা পোস্ট অফিস থেকে পাঠায়ও ২৫ টাকা খরচ করে। সেই টাকা নিজেদেরই টিফিনের পয়সা জমানো টাকা! স্কুলের অ্যাডহক কমিটির সম্পাদক তথা এসআই সৌগত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই স্কুলের ঘরের ব্যাপারে সর্বশিক্ষা মিশনকে জানানো হয়েছে। প্রতিবছর স্কুলও জানিয়ে আসছে ডাইস ফর্মের মাধ্যমে। আমার কিছু করার নাই। যা করার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ করবেন।’’ সর্বশিক্ষা মিশনের অতিরিক্ত প্রকল্প আধিকারিক সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দেখে বলতে হবে।’’ সাঁইথিয়ার বিডিও অতনু ঝুরি বলেন, ‘‘আর্থিক অনুমোদন হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’

Students school MLA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy