Advertisement
E-Paper

প্রাণী-প্রদানে ভাগ্য ফিরেছে দুখু, কবিরাজের

একটাই শর্ত ছিল, যা লাভ হবে সবই তাঁদের। কিন্তু প্রাণীগুলি সংখ্যায় বৃদ্ধি পাওয়ার পরে, তাঁরাও যেন একটি করে প্রাণী ফেরত দেন। যাতে আরও একটি প্রান্তিক পরিবারের হাতে এভাবেই তুলে দেওয়া যায়।

দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৩৬
দান: অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।

দান: অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।

কথাটা যে মিথ্যে নয়, তা বেশ কয়েক বছরে ভালই বুঝেছেন সিউড়ি ১ ব্লকের ভূরকুনা পঞ্চায়েত এলাকার কবিরাজ কিস্কু, সরস্বতী দলুই, দুখু ডোমেরা। একটি ছাগল বা ভেড়া থেকে প্রত্যেকের কাছে এখন ১০-১২টি করে ছাগল ভেড়া। তবে ওঁদের কাউকেই ছাগল বা ভেড়া কিনতে হয়নি। কচুজোর প্রকৃতি জাগরণ ট্রাস্টের কাছ থেকে বছর কয়েক আগে মহালয়ার দিনে প্রাণীগুলি পেয়েছিলেন ওই প্রান্তিক মানুষগুলি। এলাকায় আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে তাতেই!

একটাই শর্ত ছিল, যা লাভ হবে সবই তাঁদের। কিন্তু প্রাণীগুলি সংখ্যায় বৃদ্ধি পাওয়ার পরে, তাঁরাও যেন একটি করে প্রাণী ফেরত দেন। যাতে আরও একটি প্রান্তিক পরিবারের হাতে এভাবেই তুলে দেওয়া যায়। এ বার মহালয়ার দিন কথা রেখেছেন দুখু-সরস্বতীরা। মঙ্গলবার মহালয়ার দিন কচুজোরের প্রকৃতি জাগরণ ট্রাস্ট প্রকৃতি পূজার অনুষ্ঠানে নতুন করে যে ২৭টি প্রান্তিক পরিবারের হাতে একটি করে ছাগল বা ভেড়া তুলে দিলেন তার মধ্যে দুখু সরস্বতীদেরও অবদান রইল।

প্রকৃতি জাগরণ ট্রাস্ট আদতে কয়কজন সমমনস্ক মানুষের চিন্তার ফসল। কেউ শিক্ষকতা করেন, কেউ সরকারি চাকুরে, কেউ অবসরপ্রাপ্ত কর্মী কেউ বা ব্যবসায়ী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মনোজ বিশ্বাস, বংশীধর দাশ, অনন্ত বড়াল, রতন সরকার এবং অসীমকুমার শীলদের মতো কিছু মানুষ। যাঁরা ফি বছর মহালয়ার দিন গাঁটের কড়ি খরচ করে একটি অনুষ্ঠান করেন। এ বারও অনুষ্ঠান করেছেন। তাতে পশু প্রদান থেকে প্রকৃতি পাঠ, পুজো। গাছপালা, পশুপাখি, কীট পতঙ্গ থেকে পুকুরের মাছ সকলকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা। ছিল আদিবাসী নৃত্য, প্রকৃতি বিষয়ক আলোচনা-সহ ছিল নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

গোড়ার কথা বলতে গিয়ে কেউ কেউ বলছিলেন এই অনুষ্ঠান করতে করতে কয়েক আগে হঠাৎ করে তাঁদের মাথায় প্রথম আসে প্রান্তিক মানুষগুলোর জন্য কিছু করার কথা। সেই ভাবনা থেকেই প্রাণী প্রদান। যা ওই অনুষ্ঠানের একটি অংশ হয়ে যায়। সেটাই দিন দিন বেড়ে চলেছে। এবার বৈদ্যনাথ কিস্কু, সধন্য মণ্ডলেরা একটি করে প্রাণী পেয়েছেন। সুধন্য এ বার প্রথম একটি বকন বাছুর পেয়ে খুব খুশি। মনোজবাবুরা জানালেন নিজেরা নিজেদের চাঁদা করে যতটা পেরেছি করেছি। সঙ্গে প্রান্তিক ওই পরিবারগুলি আমাদের সাহায্য করেছেন। এ ভাবে চললে আয়োজন আরও বাড়বে। কবিরাজ কিস্কু, সরস্বতী দলুই, দুখু ডেমেরা বলছেন, ‘‘আমাদের ভাল হয়েছে। অন্যের ভাল হলে কেন এগিয়ে আসব না। প্রকৃতি খানিকটা বিরূপ থাকলেও দিনভর অনুষ্ঠান বেশ ভালই কেটেছে।’’

Social economy Suri Birbhum বীরভূম সিউড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy