E-Paper

চাঙ্গা বিজেপি, আমল দিতে চায় না তৃণমূল

রবিবার সিউড়িতে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বিজেপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৭
সিউড়ির বিজেপি জেলা কার্যালয়ের সামনে ঢোল, বাজনা বাজিয়ে আবির মেখে তিন রাজ্যে জয়

সিউড়ির বিজেপি জেলা কার্যালয়ের সামনে ঢোল, বাজনা বাজিয়ে আবির মেখে তিন রাজ্যে জয় উদযাপন বিজেপি জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়দের—নিজস্ব চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে উজ্জীবিত বিজেপি৷ তার রেশ পড়ল বীরভূমেও। বিজেপির এই ফলাফল আগামী দিনে রাজ্যে তথা জেলায় বিজেপি কর্মীদের মনোবল অনেকটাই চাঙ্গা করবে বলে দাবি করলেন বীরভূমের বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা বক্তব্য, বাংলায় বিধানসভা ভোটের মতো লোকসভা ভোটেও বিজেপি পর্যুদস্ত হবে।

রবিবার সিউড়িতে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বিজেপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে। এ দিন বিকেলের দিকে যখন বৈঠক শেষ হয়, ততক্ষণে চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। তাই জেলা কার্যালয়ের সামনেই বাজনা সহযোগে আবির খেলা ও মিষ্টিমুখে মেতে ওঠেন বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা, জেলার একমাত্র বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্য নেতা-কর্মীরা।

উৎসবে মেতে বিজেপি নেতারা বলেন, “এই ফলাফলে নিশ্চিত হয়ে গেল, গোটা দেশে শুধু একটাই গ্যারান্টি কাজ করছে, সেটা মোদীর গ্যারান্টি। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে গোটা দেশে ৪০০র বেশি আসন নিয়ে এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৩৫টি আসন নিয়ে আবারও বিজেপির সরকার গঠিত হবে।”

এ দিনই তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচিতে রামপুরহাটে এসেছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিভিন্ন রাজ্যের ভোটে রাজ্যের আলাদা বিষয় থাকে। যেখানে কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল সেখানে তারা কীভাবে কাজ করেছে, সেখানকার মানুষ কী ভাবছে তার প্রতিফলন ঘটেছে এই ভোটে। কিন্তু ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে মানুষ আলাদা রায় দেবে।” বিজেপির দাবি উড়িয়ে তাঁর পাল্টা দাবি, “২০১৪ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদীর সরকার যেভাবে ভারতবর্ষকে দেউলিয়া করে দিচ্ছে, যেভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তার বিরুদ্ধে মানুষ একজোট হয়েছে। যেভাবে ব্যাঙ্ক থেকে লক্ষ কোটি টাকা জালিয়াতি করছে, যেভাবে গ্যাস, ডিজেল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পতন অবশ্যম্ভাবী।”

বিজয়োল্লাসের পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েও ব্যস্ত বিজেপি। এ দিন জগন্নাথ দাবি করেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচন আর লোকসভা নির্বাচন এক রকম হবে না। গত লোকসভা আর বিধানসভায় সিউড়ি ২ ব্লকের একাধিক জায়গা থেকে আমরা প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে এগিয়ে ছিলাম। অথচ পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেখানে আমরা প্রার্থীই দিতে পারিনি। জেলার আরও কয়েকটি ব্লকে একই পরিস্থিতি হয়েছিল।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘ওই এলাকাগুলিতে আমাদের সংগঠন আছে, কিন্তু আমরা সন্ত্রাসের মোকাবিলা করতে পারিনি। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে তা হবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হলেই বদলে যাবে পরিস্থিতি।”

তৃণমূলের ঘোষণার আগেই শতাব্দী রায়কে বারবার প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরা প্রসঙ্গে জগন্নাথের কটাক্ষ, “এখন তৃণমূলের প্রার্থী নির্বাচন করার ক্ষমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেও নেই। সবটাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর আইপ্যাকের হাতে। ফলের জেলায় দলের সমীকরণ বজায় রাখতে জেলার নেতারা যতই শতাব্দীর নাম তুলে ধরুন, অভিষেক না বলা পর্যন্ত কিছুই হবে না।”

তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ঠিক করবেন৷ তবে, যে উন্নয়ন শতাব্দী করেছেন, যে জনসমর্থন তাঁর প্রতি রয়েছে, তাতে জেলার সকলেই তাঁকেই আবার প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান৷ সেই আকাঙ্ক্ষাই সকলের কথায় ফুটে উঠছে।’’ সন্ত্রাস নিয়ে বিজেপির তোলা অভিযোগ উড়িয়ে মলয়ের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘জেলায় আমাদের সংগঠন এতটাই মজবুত যে বাকিদের অস্তিত্বই নেই। কেন্দ্রের পুলিশ, মিলিটারি যা খুশি এনেও কিছু করতে পারবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC BJP Suri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy