বীরভূমে এখন বিজেপির এক জন বিধায়ক। তিনিই জেলার একমাত্র বিরোধী বিধায়ক। একটু চেষ্টা করলে বিধায়ক সংখ্যা নয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার সাঁইথিয়ায় বিজেপির সভামঞ্চ থেকে দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, ‘‘জেলার দু’টি বিধানসভা আসনে জনসংখ্যার অনুপাতের ভিত্তিতে আমাদের জেতা কঠিন। বাকি আসনগুলিতে একটু চেষ্টা করলেই জয় সম্ভব৷ বীরভূমে বর্তমানে বিজেপির এক জন বিধায়ক রয়েছেন। সেটা ৯ জনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’’ এর পরে তাঁর দাবি, ‘‘যদি বীরভূম থেকে আমরা ৯ জন বিধায়ক দিতে পারি, তাহলে রাজ্যে আমাদের বিধায়ক সংখ্যা ৭৭ থেক ১৭৭ হওয়া শুধুই সময়ের অপেক্ষা।”
এ দিন দলের পরিবর্তন সংকল্প যাত্রায় যোগ দিতে এসেছিলেন শুভেন্দু। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, অন্যতম মুখপাত্র কেয়া ঘোষ, বীরভূম ও বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা ও শ্যামাপদ মণ্ডল প্রমুখর। সাঁইথিয়ার দমকলের মাঠ থেকে মিছিল শুরু হয়। পরে সাঁইথিয়া থানার সামনে, চারতলা মোড়ে এসে সভা করেন বিরোধী দলনেতা। সভা থেকে তিনি আরও এক বার দাবি করেন, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআরের ফলে রাজ্যে অন্তত এক কোটি মানুষের নাম বাদ যাবে।
রাজ্যে বিজেপি সরকার এলে কী কী প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে, জনগণ কী কী সুবিধা পাবেন, তার বিশদ খতিয়ান এ দিন দিয়েছেন শুভেন্দু। নানুরের সভার মতো এখানেও মঞ্চ থেকে জেলার দুই শীর্ষ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখকেও নিশানা করেন। অনুব্রতের প্রতি শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, “দু’বছর জেল খাটা হয়েছে, এখনও চার বছর বাকি। এ সব বন্ধ করুন।” তাঁর দাবি, বীরভূম থেকে তোলাবাজির ৭৫ শতাংশ টাকা যাচ্ছে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে। তিনি বলেন, ‘‘এই জেলা অনুব্রত বা কাজলের নামে বিখ্যাত নয়। এই জেলা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মা তারা, প্রণব মুখোপাধ্যায়, বাউল, জয়দেবের নামে বিখ্যাত৷ এই হৃতগৌরব বিজেপিই ফেরাতে পারে।”
সাঁইথিয়া পুরসভা পরিচালনার ক্ষেত্রে পুরপ্রধান বিপ্লব দত্তকে এড়িয়ে বিধায়ক নীলাবতি সাহা এবং তাঁর স্বামী দেবাশিস সাহা সবটা পরিচালনা করছেন বলেও দাবি করেন শুভেন্দু। জানান, আগামী ৮ বা ৯ ডিসেম্বর তিনি লাভপুরে সভা করবেন। এর পরে রাজনগর এবং খয়রাশোলে যাবেন।
তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “শুভেন্দুর দলের লোকরাই এখন বলছেন, উনি উন্মাদের মত্য আচরণ করছেন। ওঁর নিশ্চয়ই বীরভূম থেকে কোনও তোলাবাজির সংযোগ ছিল, যা এখন নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। তাই বার বার জেলায় এসে তিনি নিজেকে বড় নেতা প্রমাণ করতে চাইছেন।’’ শুভেন্দুর দলবদলকে কটাক্ষ করে মলয়ের বক্তব্য, ‘‘শুভেন্দুর পেটে এখনও তৃণমূলের ভাত আছে। তাঁর এবং তাঁর পরিবারের পরিচয় তৃণমূলের দয়াতেই হয়েছে। মানুষ এই মীরজাফরদের চিহ্নিত করে রেখেছে। ’২৬-এর নির্বাচনের পর আর এদের খোঁজ পাওয়া যাবে না!”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)