স্বর্ণলতা সরেন। সহসভাধিপতি বীরভূম জেলা পরিষদ। —নিজস্ব চিত্র।
বীরভূম জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি হিসাবে মনোনীত হয়েছেন স্বর্ণলতা সরেন। ২০১৩-’১৮ পর্যন্ত মহম্মদবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন স্বর্ণলতা। গত পাঁচ বছর ধরে চরিচা পঞ্চায়েতের সদস্য পদে ছিলেন স্বর্ণলতার স্বামী শুকলাল মারান্ডি। তবে, স্বর্ণলতার আর একটি পরিচয়, তিনি আদিবাসী গাঁওতার জেলা সম্পাদক রবীন সরেনের বোন।
ডেউচা পাঁচামির প্রস্তাবিত কয়লা শিল্পাঞ্চল নিয়ে সেখানকার আদিবাসীদের একাংশের বিরোধিতার মাঝে ‘ভূমিকন্যা’ স্বর্ণলতাকে জেলা পরিষদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে বসিয়ে ওই এলাকার আদিবাসীদেরই কোনও বার্তা দিতে চাইল কি না শাসকদল, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। রবীন সরেন কী অবস্থান নেন, তা নিয়েও কৌতূহল আছে। রবীন অবশ্য বলছেন, ‘‘আদিবাসীদের স্বার্থরক্ষা ছাড়া আর কোনও বিষয়েই আমি আগ্রহী নই৷ জেলা পরিষদ যদি আদিবাসীদের স্বার্থ বিরোধী কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে বোনের বিরোধিতা করতেও আমি পিছপা হব না।” স্বর্ণলতারও দাবি, “এগুলো সবই ভুল কথা৷ আদিবাসীদের উন্নয়নের কাজে দাদা নিজের মতো কাজ করছে, আমিও আমার মতো করে কাজ করব।”
প্রসঙ্গত, জেলার আদিবাসী সমাজে রবীনের কিছু প্রভাব আছে। একাধিক বার বিভিন্ন প্রশাসনিক মঞ্চে তৃণমূল নেতাদের পাশে রবীনকে দেখা গেলেও সরাসরি শাসকদলের মঞ্চে তাঁর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। অন্য দিকে, রবীনের বোন স্বর্ণলতা ও তাঁর স্বামী দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এ বার জেলা পরিষদে প্রথমবার লড়াই করেই সহ সভাধিপতির আসন পেলেন স্বর্ণলতা। ডেউচা-পাঁচামির আদিবাসীদের উপরে এই সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, যে ২৬ নম্বর জেলা পরিষদের আসন থেকে স্বর্ণলতা জয়ী হয়েছেন, তার অধীনেই প্রস্তাবিত কোল ব্লকের দুটি পঞ্চায়েত হিংলো ও ভাঁড়কাটা রয়েছে। ফলে, কয়লা প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও এলাকার আদিবাসীদের মধ্যে জনমত তৈরি করা সহজ হবে বলে তৃণমূলের একাংশ মনে করছে।
যদিও কয়লা-খনি বিরোধী আন্দোলনের পুরোভাগে থাকা আদিবাসী অধিকার মহাসভার আহ্বায়ক জগন্নাথ টুডু বলেন, “যাঁকে যে পদেই বসানো হোক, এই এলাকার মানুষকে আর ভুল বোঝানো যাবে না। মানুষ এখানে খনির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাচ্ছেন, আগামীতে আরও বৃহত্তর আন্দোলন হবে। এখানে এই সিদ্ধান্তের (স্বর্ণলতার সহ সভাধিপতি হওয়া) কোনও প্রভাব বা রবীনের কোনও প্রভাব খাটবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy