একমাত্র সন্তান ডাক্তার হবে। এই আশায় জয়েন্টের প্রস্তুতির জন্য ছেলেকে কলকাতা পাঠিয়েছিলেন বাবা-মা। দোলের ছুটিতে এক সপ্তাহের জন্য ছেলেকে বাড়ি আসতে বলেছিলেন মা। সেই মতো শুক্রবার দুপুরে দূরপাল্লার ট্রেন ধরে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছিলেন মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া ওই পড়ুয়া। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও বাড়ি না পৌঁছনোয় ছেলের মোবাইলে ফোন করেন মা। তখনই রেল পুলিশের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর একমাত্র ছেলের!
পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম শুভ্রজ্যোতি পাল (১৯)। তাঁর বাড়ি নলহাটি থানার উজিরপুর গ্রামে। শুক্রবার বিকেলে বালি আর উত্তরপাড়া স্টেশনের মাঝে এই ঘটনা ঘটে। তদন্তে নেমে রেল পুলিশ জানতে পারে, পার্ক সার্কাসেরই একটি মেসে থাকতেন তিনি। পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি বঙ্গবাসী কলেজে পড়তেন ওই যুবক। শুক্রবার দুপুরে তিনি হাওড়া থেকে মালদহ-ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের চার নম্বর জেনারেল কামরায় উঠেছিলেন। ভিড় থাকায় দরজার কাছেই দাঁড়িয়েছিলেন ওই তরুণ। সেই সময়ে মালপত্র রাখা নিয়ে দুই হকারের মারামারির জেরে ধাক্কা লেগে চলন্ত ট্রেন থেকে ছিটকে পড়েন ওই যুবক। মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগেছিল তাঁর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। শনিবার সকালে ওই দুই হকারকে ব্যান্ডেল স্টেশন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে রেল পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ওই দিন বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ দেহটি উদ্ধার করলেও প্রথমে পরিচয় জানতে পারেনি বেলুড় জিআরপি। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় মৃতের মোবাইল। ঠিক কী কারণে ওই যুবক পড়ে গেলেন, তা জানতে ওই ট্রেনে কর্তব্যরত রেল পুলিশকর্মীদের খবর পাঠায় বেলুড় জিআরপি। ব্যান্ডেলে ট্রেনটি পৌঁছনোর পরে ওই কামরায় খোঁজখবরের সময়ে রেল পুলিশ উদ্ধার করে যুবকের ব্যাগটি।