জলের সমস্যার জন্য অঞ্চল সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
ভোটের ফলের জন্য ধন্যবাদ দিতে সভার আয়োজন করেছিলেন তৃণমূল নেতা। পানীয় জলের দাবিতে সেখানেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল সিউড়ির কোমা অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতিকে। দল সূত্রে দাবি, ধন্যবাদ জ্ঞাপন সভায় এ ভাবে বিক্ষোভ হওয়ায় অস্বস্তি তৈরি হয়েছে দলের অন্দরে। অঞ্চল সভাপতি বলরাম বাগদির আশ্বাস, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করা হবে।
শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে সিউড়ি ২ ব্লকের কোমা পঞ্চায়েতের খন্না গ্রামে। লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর সিউড়ি ২ ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েতেই অঞ্চল সভাপতিরা গ্রামে গ্রামে ধন্যবাদজ্ঞাপন সভার আয়োজন করছেন। সেখানে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার জন্য গ্রামবাসীদের ধন্যবাদ জানানো হচ্ছে। যাঁরা তৃণমূলকে ভোট দেননি তাঁদের উদ্দেশ্যে অভাব অভিযোগ বা অভিমানের কথা দলকে জানানোর ডাকও দেওয়া হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যায় তেমনই একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল খন্না গ্রামে।
সেখানে অঞ্চল সভাপতি বলরাম বাগদি গ্রামবাসীর কাছে তাঁদের সুবিধে-অসুবিধের কথা জিজ্ঞেস করলে পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে একযোগে সরব হয়ে ওঠেন মহিলারা। বিশেষত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর যে মহিলারা স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে রান্না করেন তাঁরাই একযোগে সরব হন।
সমস্বরে তাঁরা জানান, প্রত্যেকদিন স্কুল থেকে বেশ খানিকটা দূরের নলকূপ থেকে জল এনে রান্না করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। দ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা না করলে রান্না বন্ধ রাখারও হুমকিও দেন তাঁরা।
পূর্ণিমা বাগদি নামে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক সদস্যা তথা স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “অনেকদিন ধরে আমাদের গ্রামে জলের সমস্যা রয়েছে। স্কুলে রান্নার ক্ষেত্রে একসঙ্গে অনেকটা বেশি জল লাগে তাই সেখানেই সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়। আমরা স্কুলের শিক্ষকদের বলেছি জলের ব্যবস্থা করার জন্য, কিন্তু তা করা হয়নি। তবে শুধু স্কুলে নয়, পুরো গ্রামেই একই অবস্থা।”
গ্রামবাসীর অভিযোগ, গ্রামের টাইম কলগুলিতে সারাদিনে একবার মাত্র জল আসে। বাকি সময় জলের প্রয়োজন হলে গ্রাম থেকে বেশ খানিকটা দূরে একটি গভীর নলকূপ থেকে জল নিয়ে আসতে হয়। এর ফলে গৃহস্থালির কাজে সমস্যা হয়। তাছাড়া গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের জন্য মিড-ডে মিলের রান্না করাও খুব কঠিন হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরেই এই সমস্যা চলছে বলে দাবি করেন গ্রামবাসীর। বিভিন্ন স্তরে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলেও অভিযোগ তাঁদের।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে অঞ্চল সভাপতি বলরাম বাগদির দাবি, “এক সময় এই এলাকায় পানীয় জলের প্রচণ্ড সমস্যা ছিল। আমরা নিরন্তর চেষ্টা করে তা অনেকটাই মিটিয়ে ফেলেছি।’’ তবে এখনও কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে বলে মেনেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলে জলের একটা লাইন ছিল, কিন্তু তা কোনও কারণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমি ইতিমধ্যেই লোক পাঠিয়েছি। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy