Advertisement
E-Paper

বিজেপি সদস্যার শংসাপত্র নিয়ে ছুট

প্রধান হিসেবে কোথাও মানা হল না দলের তরফে নির্দিষ্ট করে দেওয়া ব্যক্তিকে। আবার কোথাও বিজেপি সদস্যদের বোর্ড গঠন প্রক্রিয়ায় যোগ নিতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫২
পঞ্চায়েতে ঢোকার আগে প্রার্থীদের কাগজপত্র যাচাই। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েতে ঢোকার আগে প্রার্থীদের কাগজপত্র যাচাই। নিজস্ব চিত্র

প্রধান হিসেবে কোথাও মানা হল না দলের তরফে নির্দিষ্ট করে দেওয়া ব্যক্তিকে। আবার কোথাও বিজেপি সদস্যদের বোর্ড গঠন প্রক্রিয়ায় যোগ নিতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে বাঁকুড়ায় প্রথম দিন অশান্তি এড়ানো গেলেও এক দিকে যেমন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল, তেমনই আবার পুলিশ ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলল বিরোধীরা। দিনের শেষে এ দিন তৃণমূল আটটি ও বিজেপি দু’টি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করেছে।

মঙ্গলবার থেকে দু’দিন ব্যাপী পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শুরু হল বাঁকুড়ায়। প্রতিটি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে এমন ৪৯টি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করা হবে এই দু’দিন। তার মধ্যে এ দিন বাঁকুড়া ১, বাঁকুড়া ২ ও ইঁদপুর ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হওয়ার কথা ছিল। ঝামেলার আশঙ্কায় সোমবার রাতে টাই হয়ে থাকা ইঁদপুর ব্লকের রঘুনাথপুর পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এ দিন বাকি দশটি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হয়।

ইঁদপুর ব্লকের ভেদুয়াশোল পঞ্চায়েতে এগিয়ে থাকলেও একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায়নি তৃণমূল। ওই পঞ্চায়েতের ১৭টি আসনের মধ্যে তৃণমূল সাতটি, বিজেপি ছ’টি, সিপিএম তিন ও নির্দল একটি আসন পেয়েছিল। প্রধান নির্বাচনের ভোটাভুটি হলে পঞ্চায়েতের দখল কার হাতে যাবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছিল। বিজেপির অভিযোগ, পঞ্চায়েতে ঢোকার মুখে তাদের সদস্যদের ভোটে জয়ের শংসাপত্র খুঁটিয়ে দেখছিল পুলিশ। বৈধ শংসাপত্র থাকার পরেও সদস্যদের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। ওই পঞ্চায়েতে বিজেপির মহিলা সদস্য চন্দনা বাউরির হাত থেকে শংসাপত্র নিয়ে দেখছিলেন পুলিশ কর্মীরা। অভিযোগ, সেই সময় এক তৃণমূল কর্মী পুলিশের হাত থেকে চন্দনার শংসাপত্র ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়। ওই ঘটনার পরে চন্দনাকে আর পঞ্চায়েতের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

এর প্রতিবাদে ভেদুয়াশোলে খাতড়া-বাঁকুড়া রাজ্য সড়ক সাময়িক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। চন্দনার অভিযোগ, “পুলিশ ইচ্ছে করে ওই ছিনতাইকারীকে ধরেনি।’’ বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি লক্ষণ মণ্ডল বলেন, “চন্দনাকে বাইরে আটকে রাখা হলেও আমাদের পাঁচ সদস্য ভিতরে ঢুকেছিলেন। কিন্তু তাঁরা প্রধান নির্বাচনের ভোটে অংশ নিতে পারেননি। পুলিশ ও পঞ্চায়েতের কর্মীরা তাঁদের আটকে দেয়।” তৃণমূলের ইঁদপুর ব্লক সভাপতি সৌমিত্র পতির অবশ্য দাবি, “সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজেদের প্রধান ও উপপ্রধান গড়তে চেয়েছিল বিজেপি। সেই সমঝোতা শেষ পর্যন্ত হয়নি। তাই বোর্ড গড়তে পারবে না জেনেই ওরা ভিতরে ঢোকেনি। এখন মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।” বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “শংসাপত্র ছিনতাইয়ের বিষয়টি শুনেছি। বিডিওকে নির্দেশ দিয়েছি, দরকার হলে ওই সদস্যকে নতুন শংসাপত্র দিতে। তবে বিজেপির সদস্যদের প্রধান নির্বাচনে যোগ নিতে দেওয়া হয়নি, এমন অভিযোগ আসেনি।” পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, চন্দনার শংসাপত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে।

এ দিন তৃণমূল আটটি ও বিজেপি দু’টি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করেছে। তৃণমূলের তরফে দলীয় ভাবে প্রধানের নাম চূড়ান্ত করে বন্ধ খামে পঞ্চায়েতগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ন’টি পঞ্চায়েতে দলের মনোনীত ব্যক্তিকেই প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করা হলেও উল্টো ফল হয় ইঁদপুর পঞ্চায়েতে। সেখানে প্রধান হিসেবে মিঠু মণ্ডলের নাম মনোনীত করেছিল তৃণমূল। যদিও ভোটের পরে দেখা যায় পঞ্চায়েতে নির্দল হিসেবে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সঞ্জয় মণ্ডলের পক্ষে বেশি ভোট পড়েছে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে অস্বস্তিতে তৃণমূল। ব্লক সভাপতি সৌমিত্র বলেন, “মিঠুকেই প্রধান নির্বাচনের জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু, সঞ্জয়কে প্রধান হিসেবে বাছা হয়েছে। এতে দলের ক্ষতি হয়নি। কারণ সঞ্জয়ও তৃণমূল কর্মী। সদস্যদের মতামত থাকতেই পারে।”

জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান বলেন, “পঞ্চায়েত বোর্ড নির্বাচন প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিটেছে। কোনও পঞ্চায়েত থেকেই অশান্তির খবর আসেনি।’’ এ দিন বাঁকুড়া ১ ব্লকের কেঞ্জাকুড়া ও জগদল্লা ১ পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়ে বিজেপি। দু’টি পঞ্চায়েতেই শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রধান নির্বাচন হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র। তিনি বলেন, “যে সব এলাকায় ক্ষমতায় এসেছি সেখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখাই প্রথম লক্ষ্য।’’

Panchayat BJP TMC Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy