Advertisement
E-Paper

তৃণমূল নেতার উপরে হামলা, ধৃত দলীয় কর্মী

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের বেআব্রু হয়েছে সাঁইথিয়ায়। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০০:৪৭
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সাঁইথিয়ায় তৃণমূলের এক নেতাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃত দু’জন নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলেই দাবি করেছে।

তৃণমূলের অন্দরমহলের কানাঘুষো, এই ঘটনায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের বেআব্রু হয়েছে সাঁইথিয়ায়। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে সাঁইথিয়ার বাগডাঙার দলীয় কার্যালয় থেকে মোটরবাইকে শাউলডিহি গ্রামের বাড়িতে ফেরার সময়ে আক্রান্ত হন তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য সাধন মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ, মুখে গামছা বাঁধা দুই দুষ্কৃতী তাঁকে মোটরবাইক থেকে নামিয়ে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে চম্পট দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা গুরুতর জখম সাধনবাবুকে উদ্ধার করে সাঁইথিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। তাঁর মাথায় ও হাতে সাতটি সেলাই পড়ে। তৃণমূল নেতারা ওই ঘটনার দায় বিরোধীদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দলের অন্দরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের গুঞ্জন ছড়ায়।

তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, ওই এলাকায় দলের ব্লক সভাপতি সাবের আলি খানের অনুগামীদের সঙ্গে সাধনবাবুর অনুগামীদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। পরিস্থিতি সামলাতে জেলা নেতৃত্ব ‘অলিখিত ভাবে’ সাঁইথিয়া ব্লকের ১২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সাঁইথিয়া বিধানসভার অন্তর্গত ৬টি পঞ্চায়েত সমান ভাগে সাধনবাবু ও সাবের আলি খানকে পরিচালনার দায়িত্ব দেন। সাধনবাবুর ‘ভাগে’ পড়ে দেড়িয়াপুর, মাঠপলশা, হরিষড়া। সাবের আলি খানের বনগ্রাম, ফুলুর ও হাতোড়া পঞ্চায়েত। তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, তার পরেও একে অন্যের পঞ্চায়েত এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চলতে থাকে।। তা নিয়েই দু’পক্ষের বিরোধ চলছিল। কয়েক দিন আগে সাধনবাবুর একটি অনুষ্ঠানে বনগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক প্রভাবশালী দলীয় নেতাকে তাঁর শিবিরে যোগ দিতে দেখা যায়। তার পরে দু’পক্ষের বিরোধ আরও বেড়়ে যায়। সাধনবাবুর দায়িত্বে থাকা পঞ্চায়েতে ‘থাবা’ বসানোর চেষ্টার অভিযোগ ওঠে সাবের আলি খানের বিরুদ্ধে।

ওই বিরোধের জেরেই সাধনবাবু আক্রান্ত হন বলে দলীয় কর্মীদের একাংশের অভিমত। সেই ঘটনার পরের দিনই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে বাগডাঙা মোড়ে সকাল ৬টা থেকে ব্যবসায়ী সমিতি এবং নাগরিক মঞ্চকে সামনে রেখে ৬ ঘন্টার বনধের ডাক দেন সাধনবাবুর অনুগামীরা। বনধ ব্যর্থ করতে রাস্তায় নামে সাবের আলির গোষ্ঠীর লোকেরা। অভিযোগ, দু’পক্ষ পুলিশের সামনেই মারপিটে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনায় দু’পক্ষের ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ৪ জনকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, সাধনবাবুর উপরে হামলার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে বাগডোলা গ্রামের পূর্ণচন্দ্র দাস এবং তিলপুকুর গ্রামের শেখ হাসিবুল নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ধৃত দু’জনই তৃণমূল কর্মী। সাবের আলির অনুগামী হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

সাধনবাবু অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘ধৃতেরা নিজেদের তৃণমূল কর্মী হিসেবে দাবি করলেও ওরা আসলে দুষ্কৃতী। ওই ঘটনার সঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সম্পর্ক নেই। কী কারণে ওরা আমার উপর চড়াও হয়েছিল তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’ একই বক্তব্য সাবের আলি খানেরও। তিনি বলেন, ‘‘ধৃতেরা আমাদের দলের কর্মী হলেও কোনও গোষ্ঠীর নয়। কী কারণে হামলা চালানো হয় তা পুলিশই বলতে পারবে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জেরা করে হামলার কারণ জানার চেষ্টা চলছে। অন্য কেউ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল কি না তা-ও দেখা হবে। এ দিন সিউড়ি আদালতে পেশ করা হলে ধৃতদের ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়।

TMC Mamata Banerjee Birbhum Politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy