Advertisement
১১ মে ২০২৪
Tarapith

‘পিক’ সময়েও দর্শনার্থী নেই তারাপীঠে, ধাক্কা পর্যটনে

এখন জেলার পর্যটনের কী হাল? লকডাউনে কেমন চলছে হোটেল, রিসর্ট? খোঁজ নিল আনন্দবাজার এখন জেলার পর্যটনের কী হাল? লকডাউনে কেমন চলছে হোটেল, রিসর্ট? খোঁজ নিল আনন্দবাজার

জনশূন্য রাস্তাই জানান দিচ্ছে পর্যটনের হাল। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

জনশূন্য রাস্তাই জানান দিচ্ছে পর্যটনের হাল। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
তারাপীঠ শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২০ ০০:৫৮
Share: Save:

দেরি নেই কৌশিকী অমাবস্যার। এই দিনে তারাপীঠে কয়েক লক্ষ পর্যটক ভিড় করেন। ভিড়ে ঠাসা পথে দায় হত চলা। এত দিনে তিন দিনের প্যাকেজে হোটেল-লজের বুকিংও হয়ে যেত। সে সব কোথায়। কৌশিকী অমাবস্যা শুরুর আগেই ১ অগস্ট থেকে দর্শনার্থীদের জন্য তারাপীঠ মন্দির অনির্দিষ্ট কাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে সেই লকডাউন শুরু ইস্তক লোকসনের ঝুলিই ভরছে। বিপাকে দর্শনার্থী থেকে পর্যটকের উপরে নির্ভর করে থাকা শ’তিনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে অটো-ট্রেকার চালকেরা।

তারাপীঠ লজ মালিক সমিতির সভাপতি সুনীল গিরি জানালেন, তারাপীঠে ঘুরতে আসার জন্য ট্যুরিস্ট এজেন্সির মাধ্যমে সাত, আটটি প্রথম শ্রেণির লজ আছে। পাঁচ-ছ’টি আর্ন্তজাতিক ট্যুরিস্ট এজেন্সির মাধ্যমে অনলাইন বুকিং হয়। সেই সমস্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে বুকিংও নেওয়া হচ্ছে না। এ দিকে, লজ মালিকদের কর্মচারীদের বেতন, খাওয়াদাওয়া, বিদ্যুৎবিল, টেলিফোন বিল, কেবল চার্জ,
স্যানিটাইজ খরচ ধরে প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ ধাক্কার ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে লজ মালিকদের।

এমনিতে মার্চের পর থেকেই তারাপীঠের পর্যটন-ব্যবসা জমতে শুরু করে। সাহেব সাহা নামে এক লজের মালিক জানালেন, ‘পিক’ সময়ে তো বটেই। টানা চার মাস পর্যটকের দেখা নেই বললেই চলে। শুধু বড় নয়, টানা লোকসানের মুখে ছোট-মাঝারি লজ ব্যবসায়ীরাও। তারাপীঠ ঘুরতে আসা দর্শনার্থী, পর্যটকদের নিয়ে মশানজোর,
শান্তিনিকেতন সহ কঙ্কালীতলা, বক্রেশ্বর, লাভপুরের ফুল্লরা মা, সাঁইথিয়ার নন্দীকেশ্বরী তলা, নলহাটিতে নলাটেশ্বরী মন্দির ঘোরানোর জন্যও আছেন বহু ব্যবসায়ী। ক্ষতির মুখে তাঁরাও। চন্দ্রশেখর পাল নামে এক ট্যুর ব্যবসায়ী জানালেন, পাঁচ মাস হতে চলল এমন কোনও বুকিং হয়নি বললেই চলে।

তারাপীঠ থেকে রামপুরহাট, ট্রেকার-অটো চালিয়ে দৈনিক ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় করে সংসার চালানো চালকরাও বিপদে। তাঁদের আয়ও মন্দির, পর্যটনের উপরেই। এঁদের অনেককে জমানো টাকা কিংবা ধার করে সংসার চালাতে হচ্ছে বলে জানালেন তৃণমূল পরিচালিত অটো-ট্রেকার চালক সমিতির সভাপতি বাচ্চু দাস। এলাকায় ছোটখাটো ব্যবসা করে দৈনিক আয়ে সংসার চালানো অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও বিপাকে। তাঁরা বলছেন, ‘‘কবে এই ধাক্কা সামলে উঠতে পারব জানি না।’’

তারাপীঠ কবিচন্দ্রপুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শিবসাধন দাস জানালেন, তারাপীঠের উপরে নির্ভর করে তিনশো জনের বেশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নির্ভরশীল। মন্দির বন্ধ। পর্যটক না আসার জন্য এই সমস্ত ব্যবসায়ীদের দৈনিক রুটি রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
তারাপীঠকে ঘিরে রামপুরহাটের ব্যবসায়ীরাও লাভবান হতেন। এখন তাঁরাও ক্ষতির মুখে। (চলবে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tarapith tourism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE