উত্তরপ্রদেশের কানপুরে খুন হওয়া বীরভূমের পরিযায়ী শ্রমিক পথিক হেমব্রমের পরিবারের বাড়িতে ছ’জনের একটি প্রতিনিধি দল পাঠালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃতের বাড়ি বীরভূমের পাড়ুই থানার অন্তর্গত কসবা এলাকার দামোদরপুর গ্রামে। পরিবারের দাবি কয়েক মাস আগে জীবিকার সন্ধানে পথিক চেন্নাইয়ে যান। সেখানে এক চামড়ার কারখানায় কাজ করতেন। তবে কী ভাবে তিনি কানপুরে গেলেন তা এখনও রহস্য।
খুনের খবর জানাজানি হতেই সোমবার অভিষেকের নির্দেশে ছ’জনের একটি প্রতিনিধিদল নিহত পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে যায়। দামোদরপুর গ্রামে যান রাজ্যসভার সাংসদ ও পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ দফতরের সভাপতি সামিরুল ইসলাম, নয়াগ্রামের বিধায়ক ও রাজ্য আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি দুলাল মুর্মু, অ্যাসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনার শেখ মহম্মদ রিজওয়ান, বোলপুরের বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস-সহ অন্যান্য সরকারি আধিকারিক।
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, “যোগী আদিত্যনাথের জঙ্গলরাজে বাঙালি শ্রমিকেরা নিরাপদ নয়। বীরভূমের যুবক পথিক হেমব্রমের মৃত্যু বাঙালি বিদ্বেষের ফল।” এ দিকে বীরভূম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকেরা মৃত শ্রমিকের পরিবারকে সমস্ত রকম সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, রবিবার উত্তরপ্রদেশের গোবিন্দনগর থানার অদূরে দিল্লি–কানপুর রেললাইনের পাশ থেকে পথিকের দেহ উদ্ধার হয়। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, তাঁকে নির্মম ভাবে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক বা জাতিগত বিদ্বেষ থাকলেও থাকতে পারে। তবে পরিবারের দাবি, পথিক চেন্নাইয়ে চামড়ার কারখানায় কাজ করতেন, কী ভাবে তিনি কানপুরে গেলেন তা এখনও রহস্য। গোটা ঘটনাটাই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ ছড়িয়েছে মৃতের গ্রামে। গ্রামবাসীদের দাবি, দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বীরভূম জেলা প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনার পর পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, ও হরিয়ানায় কর্মরত বাঙালি শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। প্রশ্ন উঠেছে ভিন্রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়েও।