Advertisement
E-Paper

বিয়ে রুখতে গিয়ে হেনস্থা

সে দিন দুপুরে চাইল্ড লাইনের কর্মীরা ব্লক প্রশাসনের কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে ওই গ্রামে যান। তাঁদের দেখেই পাত্রীপক্ষ ও পাত্রপক্ষ সটান জানিয়ে দেন, বিয়ের বিয়ের সব আয়োজন সম্পূর্ণ। তাঁরা বিয়ে দেবেন। বন্ধ করা যাবে না। বিয়ে বন্ধ করতে নাছোড় ছিলেন চাইল্ড লাইনের কর্মীরাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০২:০৫

নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে যাওয়া এক মহিলা-সহ চাইল্ড লাইন ও ব্লক প্রশাসনের কর্মীদের আটকে রেখে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল সাঁওতালডিহি থানার উকা গ্রামে।

মঙ্গলবার চাইল্ড লাইনের হেল্প লাইনে ফোন করে খবর দেওয়া হয়, শুক্রবার উকা গ্রামে এক নাবালিকা স্কুলছাত্রীর বিয়ে ঠিক হয়েছে। বুধবার গ্রামে গিয়ে চাইল্ড লাইনের কর্মীরা বিয়ে বন্ধ করতে বলেন। পাত্রীপক্ষ জানান, ঝাড়খণ্ডের বেলিয়াপুর এলাকার পাত্রপক্ষের সঙ্গে তাঁরা এ নিয়ে আগে আলোচনা করবেন। বৃহস্পতিবার পাত্রপক্ষও উকা গ্রামে চলে আসে।

সে দিন দুপুরে চাইল্ড লাইনের কর্মীরা ব্লক প্রশাসনের কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে ওই গ্রামে যান। তাঁদের দেখেই পাত্রীপক্ষ ও পাত্রপক্ষ সটান জানিয়ে দেন, বিয়ের বিয়ের সব আয়োজন সম্পূর্ণ। তাঁরা বিয়ে দেবেন। বন্ধ করা যাবে না। বিয়ে বন্ধ করতে নাছোড় ছিলেন চাইল্ড লাইনের কর্মীরাও।

চাউল্ড লাইন সূত্রের খবর, আদ্রার চাইল্ড লাইনের দুই কর্মী মন্টু মাহাতো ও কবিতা বাউড়ি, ব্লক প্রশাসনের তিন কর্মী ও দুই পুলিশ কর্মী উকা গ্রামে গিয়েছিলেন। মন্টুবাবুর দাবি, স্কুলের শংসাপত্র অনুযায়ী মেয়েটির বয়স ১৪ বছর দুই মাস। সে স্থানীয় স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ে।

তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম দুই পক্ষের মধ্যে কথা বলে সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিয়েটা বন্ধ করতে। কিন্তু গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের একটি ঘরে আলোচনায় ওরা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হননি। উল্টে আমাদের ঘণ্টা খানেক আটকে রেখে গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।’’

খবর পেয়ে সাঁওতালডিহি থানার আইসি প্রশান্ত পাত্র গ্রামে গিয়ে পরস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবশ্য ওই নাবালিকা কিশোরীর বিয়ে শেষ পর্য়ন্ত বন্ধ হয়। প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত নাতনির বিয়ে দেবেন না বলে ব্লক প্রশাসনের কাছে মুচলেকা দিয়েছেন ওই নাবালিকার দিদিমা।

বিডিও (রঘুনাথপুর ২) সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিয়ে স্থির হয়ে যাওয়ায় তাঁরা কিছুতেই বিয়ে বন্ধ করতে চাননি। অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কম বয়সে বিয়ে দিলে পরবর্তী সময় কী ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে, আইনগত ভাবেও সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনার কথা জানাতে তাঁরা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন।”

ওই কিশোরীর দিদিমা জানিয়েছেন, মেয়েটির মা পাঁচ বছর আগে মারা গিয়েছেন। বাবা দীর্ঘ দিন ধরে নিখোঁজ। ছোট থেকেই তিনিই মেয়েটিকে বড় করেছেন। সামান্য আয়ে কোনও মতে সংসার চলে। তাই ভাল পাত্র পাওয়ায় বিয়ে স্থির করে দিয়েছিলেন।

তাঁর কথায়, ‘‘অনেক কষ্টে কোনও মতে বিয়ের খরচ জোগাড় করেছিলাম। বিয়ের কার্ড ছাপানো-সহ নিমন্ত্রণ সবই হয়ে গিয়েছিল। তাই বিয়ে বন্ধ করলে পুরো খরচটাই বৃথা যাবে বলে প্রথমে বিয়ে বন্ধ করতে চাইনি।”

Minor Marriage Minor Girl Childline চাইল্ড লাইন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy