Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
মূল্যায়ন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়

৪৯ থেকে নম্বর বেড়ে হল ৭০, ক্ষোভ

জানা গিয়েছে, গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। ভূগোল বিষয়ের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার নম্বর দেখে পুরুলিয়া জগন্নাথ কিশোর কলেজের কয়েকজন পড়ুয়ার সন্দেহ হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৮
Share: Save:

পরীক্ষার মূল্যায়ন নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভূগোলের স্নাতক (সাম্মানিক) তৃতীয় বর্ষের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার মূল্যায়নকে ঘিরেই এই অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার তদন্তের দাবিতে পুরুলিয়ার জগন্নাথ কিশোর কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগের পড়ুয়াদের একাংশ সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থও হন। মূল্যায়নে কিছু পরীক্ষার্থীর মার্কশিটে যে ভুল হয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁরা মূল্যায়নের দায়িত্বে থাকা শিক্ষককে এ নিয়ে সতর্কও করেন।

জানা গিয়েছে, গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। ভূগোল বিষয়ের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার নম্বর দেখে পুরুলিয়া জগন্নাথ কিশোর কলেজের কয়েকজন পড়ুয়ার সন্দেহ হয়।

তাঁরা জানান, ভূগোলের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার নম্বর দেখেই তাঁদের মনে হয়েছিল, ঠিক মতো মূল্যায়ন হয়নি।

তাঁদের মধ্যে সুকুমার মাহাতো, মিন্টু শর্মা প্রমুখের অভিযোগ, ‘‘আমরা তথ্য জানার অধিকার আইনে যে নম্বর দেওয়া হয়েছে, সেটাই প্রকৃত মূল্যায়ন কি না, তা জানতে চাই। তার কিছু দিনের মধ্যে দেখা যায়, আমাদেরই বেশ কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবীর নম্বর বেড়ে গিয়েছে। তাঁদের সংশোধিত মার্কশিট কলেজেও পৌঁছে যায়। অথচ আমাদের নম্বর ঠিক দেওয়া হয়েছে কি না জানানো হয়নি।’’

জানা গিয়েছে, সুরচিতা রায় নামের এক পরীক্ষার্থী প্রথমে মার্কশিটে এই পরীক্ষায় ৪৬ পেলেও, তাঁর সংশোধিত মার্কশিটে এই নম্বর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮। সুস্মিতা চক্রবর্তী নামে অন্য এক পরীক্ষার্থী প্রথমে ৪৪ নম্বর পেলেও পরে তা বেড়ে হয় ৬৬। আরেক পরীক্ষার্থী সুরভি রক্ষিতের প্রথমে নম্বর পেয়েছিলেন, ৪৯। পরে তাঁর নম্বর হয় ৭০। তপনকুমার মাহাতো নামে অন্য এক পরীক্ষার্থীর নম্বর একই ভাবে ৪০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬২।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তে অন্য পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের কাছে গিয়ে নিজেদের অসন্তোষের কথা জানান।

সুরচিতা রায়, সুরভি রক্ষিতদের প্রশ্ন, ‘‘পরীক্ষকদের উপরে আমাদের আস্থা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মার্কশিটে দু’রকম নম্বর দেখে সংশয় জাগে বইকি।’’ পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন, স্নাতকোত্তর পাঠক্রম ভর্তির ক্ষেত্রে সামান্য নম্বরের হেরফেরই অনেক কিছু নির্ধারণ করে দেয়। তাহলে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কেন গুরুত্ব দেওয়া হবে না?

জগন্নাথ কিশোর কলেজের অধ্যক্ষ শান্তনু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার কলেজের কয়েকজন পরীক্ষার্থীর ভূগোলের প্র্যাকটিক্যালের নম্বর হঠাৎ করে বেড়েছে। এমনটা হওয়ার কথা নয়। আমি উপাচার্যকে অনুরোধ করেছি, এই পরিস্থিতিতে স্নাতকোত্তরে ভর্তির বিষয়টি যেন সহৃদয় ভাবে বিবেচনা করা হয়।’’

সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক সুবলচন্দ্র দে বলেন, ‘‘ওই পরীক্ষায় ২০ জন পরীক্ষার্থীর মার্কশিটে ভুল ধরা পড়েছে। তাঁদের মধ্যে ছ’জন জগন্নাথ কিশোর কলেজের, বাকি ১৪ জন ঝালদা অচ্ছ্রুরাম স্মৃতি কলেজের পরীক্ষার্থী।’’

তিনি জানান, ভূগোলের প্র্যাকটিক্যালে নম্বরের কিছু ভাগ থাকে। তদন্তে দেখা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ভুল করে এই ২০ জনের ক্ষেত্রে একটি নম্বর যোগই করা হয়নি। পরীক্ষা নিয়ামক সুবলবাবু বলেন, ‘‘পরীক্ষককে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE