বাতিকারের পরে রূপপুর পঞ্চায়েতের রূপপুর গ্রাম।
আবারও বাড়িতে পেট্রল পাম্পের খোঁজ মিলল। বাতিকরের ক্ষেত্রে বিস্ফোরণের সূত্রে পাম্পটির খোঁজ মিলেছিল। এ ক্ষেত্রে স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে রবিবার পাম্পে অভিযান চালায় পুলিশ। পাম্পের মালিক শেখ নাজফারউদ্দিন ও কর্মী রাজকুমার ঘোষকে গ্রেফতার করে। বাতিকারের পাম্পে বিস্ফোরণের সময়েই এমন পাম্প চালানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আজকের ঘটনা সেই প্রশ্নকে আরও ‘জোরালো’ করল মনে করছেন স্থানীয়েরা। যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েতের দাবি, তাদের অন্ধকারে রেখে ব্যবসা চলছিল।
বোলপুর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে রূপপুর গ্রাম। এ গ্রামের আশেপাশে বিস্তীর্ণ এলাকায় কোনও পেট্রল পাম্প নেই। অভিযোগ, সে সুযোগে কাজে লাগিয়ে মাস ৪-৫ আগে রূপপুর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে ইলামবাজারে দেলোরা গ্রামের বাসিন্দা শেখ নাজফারউদ্দিন একটি মিনি পেট্রল পাম্প তৈরি করেন। এ ক্ষেত্রে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সে পাম্পে ডিজ়েল ও পেট্রল মজুত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। অভিযোগ, সেখান থেকে তেল বিক্রি করা হত।
গত বছরই বাতিকার এলাকায় একটি মিনি পেট্রল পাম্পে তেল ভরার সময়ে প্রেসার যন্ত্রে বিস্ফোরণ ঘটে। বিকট আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। পেট্রল পাম্পের মালিক শেখ বদরুলের ছেলে শেখ রাজু ও তেলের গাড়িচালক শেখ সোহেল গুরুতর আহত হন। তবে তারা প্রাণে বেঁচে যান। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল কী ভাবে সকলের নজর ‘এড়িয়ে’ বাড়ির মধ্যে পেট্রল পাম্প তৈরি করা হল! অভিযোগ, এমন পেট্রল পাম্প তৈরি করতে গেলে যে ধরনের অনুমতি বা পরিকাঠামোর প্রয়োজন তার কোনও কিছুই বাতিকরে মানা হয়নি।
এ দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগে পেয়ে ঘটনার তদন্তে আসেন শান্তিনিকেতন থানার ওসি কস্তুরী মুখোপাধ্যায় চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পাম্পটি বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি রূপপুর এলাকার বাসিন্দা ওই পাম্পের কর্মী রাজকুমারকে গ্রেফতার করা হয়। রাজকুমার বলেন, “আমি এখানে কিছু দিন হল কাজ করছি। পাম্পটি বৈধ না অবৈধ সে ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারব না।’’
স্থানীয় বাসিন্দা রবি হেমব্রম, লক্ষ্মী মুর্মুরা বলেন, “ঘরের মধ্যে পেট্রল পাম্প দেখে প্রথমে আমরা অবাক হয়েছিলাম। পুলিশকেও জানানো হয়। আজ পুলিশ প্রশাসন বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করাই আমরা খুশি। তবে এ বিষয়টি তাঁরা জানতেন না বলে দাবি করেছেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। পঞ্চায়েত প্রধান এরিনা খাতুন বলেন, “পঞ্চায়েতের তরফে কোনও অনুমতিই দেওয়া হয়নি। পঞ্চায়েতকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখেই ওই পাম্পটি করা হয়েছিল। তাই পঞ্চায়েত থেকে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নেওয়া হবে।” পুলিশের এক আধিকারিক জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে পাম্পটি সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবেই তৈরি করা হয়েছিল। ঘটনা তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় পাম্পের মালিক ও এক কর্মচারী গ্রেফতার করা হয়েছে। কী ভাবে তেল আনা হত তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)