Advertisement
E-Paper

দুই তৃণমূল কর্মী খুন, ফের উঠছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ

শনিবার ভোরে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে কয়েকশো মিটার দূরে, রানিপাথরে। সকালেই দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য সিউড়ি জেলা হাসপাতালে পাঠায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ০২:৪২
চিহ্ন: ঘটনাস্থলে রক্তের দাগ। নিজস্ব চিত্র

চিহ্ন: ঘটনাস্থলে রক্তের দাগ। নিজস্ব চিত্র

রাজনৈতিক নেতা কর্মী খুনের ঘটনার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে খয়রাশোলে। খুন হয়েছেন শাসকদলের তিন ব্লক সভাপতি, একাধিক নেতা থেকে সাধারণ কর্মী। বিধানসভা ভোটের আগে যখন খয়রাশোলকে সাংগঠনিক ভাবে গুছিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব, সেই সময় আবার খুন হলেন এক তৃণমূল কর্মী।

ঘটনাটি ঘটেছে খয়রাশোল থানার রানিপাথর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম শিশির বাউড়ি (৪৪)। বাড়ি স্থানীয় আমাজোলা গ্রামে। শুক্রবার রাতে ‘পিকনিকে যাচ্ছি’ বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি শিশির। শনিবার ভোরে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে কয়েকশো মিটার দূরে, রানিপাথরে। সকালেই দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য সিউড়ি জেলা হাসপাতালে পাঠায়। এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। ঘটনাকে ঘিরে লেগেছে রাজনৈতিক রং। তৃণমূলের দাবি, দলীয় কর্মী খুনে বিরোধীদের হাত রয়েছে। অন্য দিকে, বিজেপির দাবি, এই খুনের নেপথ্য খয়রাশোলের চেনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

নিহতের স্ত্রী পুলিশের কাছে যে লিখিত অভিযোগ করেছেন, তাতেও দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত রয়েছে। তাঁর স্বামীকে খুনের পিছনে শাসকদলের পাঁচড়া অঞ্চল সভাপতি কিশোর মণ্ডল-সহ আরও ছ’জনের হাত রয়েছে বলে লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন নিহতের স্ত্রী বুলু বাউড়ি। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু বলতে চাননি তৃণমূলের তরফে খয়রাশোলের পর্যবেক্ষেক তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ পুলিশ নিরপক্ষ তদন্ত করুক। যে বা যারা দোষী, তারা শাস্তি পাক। এর বেশি কিছু বলছি না।’’ জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই দু’জনকে আটক করা হয়েছে।’’ তিনি নিজেও এ দিন বিকেলে ঘটনাস্থলে যান।

শনিবার সকাল দশটা নাগাদ রানিপাথরে গিয়ে দেখা গেল, গ্রামের শেষ প্রান্ত থেকে যে রাস্তা খয়রাশোলের ব্লকের দিকে গিয়েছে, সেখানে একটি বট গাছের কাছে রক্ত চাপ হয়ে জমে আছে। ঠিক তার পাশেই পড়ে নিহত শিশিরের একপাটি চটি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ডেপুটি পুলিশ সুপার কাশীনাথ মিস্ত্রির নেতৃত্বাধীন বিশাল পুলিশ বাহিনী। রয়েছেন সার্কেল ইনস্পেক্টর (দুবরাজপুর) আস্তিক মুখোপাধ্যায় এবং ওসি (খয়রাশোল)সঞ্জয় শ্রীবাস্তব। চারদিকে মানুষের ভিড়।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় ইটভাটার শ্রমিক, মধ্য চল্লিশের শিশির বাউড়ি আমাজোলা গ্রামের বাউড়িপাড়ার বাসিন্দা। দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে সংসার। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। আমাজোলা গ্রামে প্রায়ই পিকনিক হয়। এমনই পিকনিকের আয়োজন ছিল রানিপাথর গ্রামে। নিহতের স্ত্রী এ দিন দাবি করেন, ‘‘শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ অঞ্চল সভাপতি কিশোর মণ্ডল এবং দীপঙ্কর মণ্ডল আমার স্বামীকে খাওয়ার জন্য ডেকে নিয়ে যায়। তার পরে আর সে বাড়ি ফেরেনি। অনেক রাত পর্যন্ত বাড়ি না আসায় খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু, পাইনি। সকালে জানতে পারি, আমার স্বামীকে খুন করা হয়েছে।’’

TMC BJP Politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy