Advertisement
E-Paper

বেড়াল বসে রোগীর বিছানাতেই

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, মৃতার দেহ নিয়ে টানাটানি বাঁকুড়া মেডিক্যালে ঘটেনি। কিন্তু, এই মেডিক্যালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিড়াল ও কুকুরের দৌরাত্ম্য যে বন্ধ হয়নি, তা মানছেন চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৮
গ্যাঁট-হয়ে: বাঁকুড়া মেডিক্যালের ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র

গ্যাঁট-হয়ে: বাঁকুড়া মেডিক্যালের ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের ভিতর এক মৃতা রোগিণীর দেহ কুকুরে টানাটানি করা নিয়ে বিতর্ক, ফের বাঁকুড়া মেডিক্যালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, মৃতার দেহ নিয়ে টানাটানি বাঁকুড়া মেডিক্যালে ঘটেনি। কিন্তু, এই মেডিক্যালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিড়াল ও কুকুরের দৌরাত্ম্য যে বন্ধ হয়নি, তা মানছেন চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ। রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, কখনও রোগীর বেডের নীচে, এমনকী বেডেও উঠে পড়তে দেখা যায় এই সব পশুদের। হাসপাতালের বেডের সংখ্যা সীমিত হওয়ায় বহু রোগীকেই পড়ে থাকতে হয় ওয়ার্ডের মেজেতে। চার পেয়েদের আনাগোনায় সমস্যায় পড়েন তাঁরাও।

বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান ওয়ার্ডের ভিতরে কুকুর-বেড়ালের ঢুকে পড়ার কথা অস্বীকার করছেন। তবে, তিনি মেনে নিয়েছেন, হাসপাতাল চত্বরে তাদের দাপাদাপি রয়েছে। কিন্তু, কুকুর-বেড়ালদের হাসপাতালের ত্রিসীমানার বাইরে পাঠানোর মতো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী নেই বলে স্বীকার করছেন তিনি। অধ্যক্ষ বলেন, “হাসপাতাল চত্বরে প্রচুর কুকুর-বিড়াল চরে বেড়ায়। সমস্যার কথা আমরা স্বাস্থ্যভবন-সহ বিভিন্ন দফতরে জানিয়েছি। আমাদের হাতে নিরাপত্তা রক্ষীও বেশি নেই। সমস্যা মেটাতে বাড়তি রক্ষী চাওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যভবনের কাছে।’’

বাঁকুড়া মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছেন প্রায় ৬০ জন। পালা করে তাঁরা পাহারা দেন। বাঁকুড়া মেডিক্যালের এক আধিকারিক বলেন, “নিরাপত্তা রক্ষী কম হওয়ায় খুবই সমস্যার মধ্যে পড়ছি। হাসপাতাল চত্বর থেকে প্রায়ই কুকুর, বেড়াল ঢুকে পড়ে ওয়ার্ডের ভিতর। হাতে গোনা ক’জন রক্ষীর পক্ষে গোটা ওয়ার্ডের সমস্ত ফাঁকফোঁকরের উপর নজর রাখাটাও মুশকিলের।”

হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, “কুকুরের দাপাদাপির জন্য হাসপাতাল বিল্ডিংয়ের বাইরে রাতে বার হওয়া দায় হয়ে পড়ে। ওয়ার্ডের ভিতর আমাদের চোখের সামনে দিয়েই অনেক সময় রোগীর গা ঘেঁষে বিড়াল দৌড়ে পালায়। এই সমস্যার কথা হাসপাতালের কর্তাদেরও জানিয়েছি।”

রবিবার বাঁকুড়া মেডিক্যালের মহিলা শল্য বিভাগ ওয়ার্ড সংলগ্ন এলাকায় বছর চল্লিশের এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার দেহ কুকুরে টানাটানি করছিল বলে অভিযোগ ওঠে। মোবাইলে ওই ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ার পরেই বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসে হাসপাতালে অবাধে কুকুর, বেড়াল চরে বেড়ানোর ঘটনা। অধ্যক্ষের অবশ্য দাবি, তদন্তে নেমে এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি।

বাঁকুড়া মেডিক্যালের মহিলা শল্য বিভাগে ভর্তি থাকা রোগীর আত্মীয় গুরুদাস মহন্ত, বিকাশ দাস বলেন, “বেড়াল ও কুকুরের বাচ্চারা হাসপাতাল জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওয়ার্ডের মেঝেয় শুয়ে থাকা রোগীদের গায়ের উপরেও উঠে পড়ছে তারা। কখনও রোগীর খাবার জল উল্টে দিচ্ছে। হাসপাতালের পরিবেশটাই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’’ অধ্যক্ষের আশ্বাস, “হাসপাতালে কুকুর, বিড়াল বা অন্যান্য জীবজন্তু যাতে না ঢুকতে পারে, সেদিকে কড়া নজর রাখার জন্য নিরাপত্তা কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি।”

Health Medical Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy